মোঃ আব্দুল আজিজ
সোমবার, ২৬ মে ২০২৫ , ১২:৩৯ পিএম
হিলিতে লাম্পি ডিজিজ নামে গরুর চর্ম রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। কোরবানি ঈদের আগেই এই রোগে আক্রমণে বিপাকে গবাদিপশু পালনকারীসহ ছোট বড় খামারিরা। গেলো দেড় মাসে প্রায় ২৫ থেকে ৩০টি গরু মারা গেছে এই রোগে। এতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে খামারিদের মাঝে। এ দিকে প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে রোগাক্রান্ত গরু আলাদা রাখার পাশাপাশি আক্রান্ত পশুদের দেওয়া হচ্ছে ভ্যাকসিন বলে জানান প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা।
উত্তরের জেলা দিনাজপুরের হিলিতে গরুর খামারে খামারে ছড়িয়ে পড়েছে চর্ম রোগের প্রাদুর্ভাব। নাম লাম্পি স্ক্রিন ডিজিজ বা এলএসডি। গেলো দুই মাস ধরে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে ভাইরাস জনিত ছোঁয়াচে এই রোগ।
খামারিরা জানান, এই রোগে আক্রান্ত গরুর শরীরে গুটি বের হয়ে শরীর ফুলে যায়, পচন ধরে ও রক্ত বের হয়।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, হিলি উপজেলায় কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে প্রায় ১৬ হাজার গবাদিপশু।
এ দিকে সরেজমিনে বিভিন্ন খামার ঘুরে জানা যায়, ৫০০ থেকে ৭০০টি গবাদিপশু এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে আর গেলো দেড় মাসে মারা গেছে ২৫ থেকে ৩০টির মতো গরু। তবে উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসে কাগজে কলমে রয়েছে মাত্র ২টি গরু মারা যাওয়ার তথ্য আর আক্রান্তের সংখ্যা মাত্র ১৫০টি গরু। চিকিৎসা ব্যয় বহুল হওয়ায় অনেক প্রান্তিক খামারি চিকিৎসা না করতে পারায় হারাতে হচ্ছে নিজের শেষ সম্বলটুকু। সামনে কোরবানি ঈদ তাই আতঙ্কে আছেন খামারিরা। আক্রান্ত গবাদিপশু নিয়ে ছুঁটছেন চিকিৎসকের কাছে। ঈদুল আজহার আগে এমন রোগ দেখা দেওয়ায় খামারিদের কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ পড়েছে।
কথা হয় কয়েকজন খামারির সঙ্গে। তারা জানান, লাম্পি স্কিন ডিজিজ এর কারণে অনেকের গরু মারা গেছে। সেই সঙ্গে অনেক গরুর এখনও আক্রান্ত হয়ে আছে। ডাক্তাররা অনেক সময় আসতে চায় না, কারণ এক সঙ্গে ১০টি গরুর ভ্যাকসিন দেওয়ার মতো না হলে তারা ভ্যাকসিন প্যাকেট থেকে বের করে না। এতে করে খামারিরা বেশি অসুবিধার মধ্যে পড়ে যাচ্ছেন। সামনে কোরবানি ঈদের আগে যদি গরুর রোগ না ভালো করতে পারে তাহলে ক্ষতির মুখে পড়বেন তারা। তবে বড় গরুর থেকে ছোট গরু এই রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে।
এ দিকে হাকিমপুর প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা শফিউল ইসলাম বলেন, আতঙ্কিত না হয়ে খামারিদের সতর্ক থাকার পাশাপাশি নানা পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। আমরা বিভিন্ন সময় খামারিদের মাঝে লিফলেট বিতরণ করেছি। এ ছাড়াও তাদের এ রোগের বিষয়ে নানা পরামর্শ দিচ্ছি। তবে যাদের গরুর এই রোগ দেখা দেবে তারা আমাদের নিকট আসলে সঠিক পরামর্শ পাবেন। এই রোগের সরকারিভাবে এখন পর্যন্ত কোন ভ্যাকসিন বিতরণের সুযোগ নেই। ভ্যাকসিন বাহির থেকে কিনে নিতে হচ্ছে।
আরটিভি/এমকে/এআর