শুক্রবার, ০৬ জুন ২০২৫ , ০৯:৩১ পিএম
শিকারির ফাঁদে পড়েও শেষ রক্ষা হলো এক কালিম পাখির। সময়মতো খবর পেয়ে গাইবান্ধা সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীদের পরিবেশবাদী সংগঠন ‘তীর’-এর সদস্যরা পাখিটি উদ্ধার করে আবারও ফিরিয়ে দেন প্রকৃতির আপন ঠিকানায়।
শুক্রবার (৬ জুন) পাখিটি প্রকৃতিতে অবমুক্ত করা হয়। এর আগে, বৃহস্পতিবার সকালে সদর উপজেলার দক্ষিণ নারায়ণপুর গ্রামের একটি কচুর ক্ষেত থেকে স্থানীয় এক ব্যক্তি দেশীয় প্রজাতির একটি কালিম পাখি শিকার করেন।
খবর পেয়ে টিম ফর এনার্জি এন্ড এনভায়রনমেন্টাল রিচার্স (তীর) গাইবান্ধা কলেজ শাখার সভাপতি মো. মোশাররফ হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ ফরিদ ও প্রচার সম্পাদক মো. মেজবাহুল হক ঘটনাস্থলে গিয়ে পাখিটি উদ্ধার করেন। পরবর্তীতে রাজশাহী বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের পরিদর্শক মো. জাহাঙ্গীর কবিরের নির্দেশনায় কালিম পাখিটিকে অবমুক্ত করা হয়।
কালিম এক প্রকার জলচর পাখি। এর দৈর্ঘ্য প্রায় ৪৫ সেন্টিমিটার, ওজন ৬৫০ গ্রাম। পাখিটির দেহ চকচকে নীলচে-বেগুনি রঙের। মাথায় লালচে আলতা রঙের বর্ম, চোখের পাশে সাদাটে ছোপ, পা লাল এবং আঙুল লম্বাটে। লেজের নিচের অংশ তুলোর মতো সাদা। বদমেজাজি ও সাহসী এই পাখিটি প্রজনন মৌসুমে পুরুষদের মধ্যে মোরগের মতো লড়াই করে থাকে। এক পায়ে গুলি লাগলে পা মুখে কামড়ে নিয়ে উড়ে যাওয়ার নজিরও রয়েছে।
‘তীর’ গাইবান্ধা শাখার সভাপতি মো. মোশাররফ হোসেন বলেন, এই পাখিটি শুধু প্রকৃতির অংশ নয়, এটি জীববৈচিত্র্য রক্ষার গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ। আমরা গর্বিত, একটি প্রাণকে তার প্রকৃত পরিবেশে ফিরিয়ে দিতে পেরেছি। পরিবেশ দিবসে এমন উদ্যোগ নিতে পেরে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন তীরের সদস্যরাও।
উল্লেখ্য, ২০১১ সালের ৪ জুন যাত্রা শুরু করে শিক্ষার্থীদের পরিবেশবাদী সংগঠন ‘তীর’। বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে ৫ জুন বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজ ক্যাম্পাস থেকে এর আনুষ্ঠানিক সূচনা হয়। ২০২১ সালে সংগঠনটি জাতীয় পরিবেশ পদকে ভূষিত হয়। তীরের গাইবান্ধা কলেজ শাখা ২০১৯ সাল থেকে স্থানীয়ভাবে পরিবেশ, জীববৈচিত্র্য ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে কাজ করছে।
আরটিভি/এএএ