images

দেশজুড়ে

মাংস চুরির অভিযোগে নারীকে নির্যাতন, গ্রেপ্তার ৩

বুধবার, ১১ জুন ২০২৫ , ০৫:০৩ পিএম

images

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে ফ্রিজ থেকে মাংস চুরির অভিযোগে এক নারীকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন ও মাথার চুল কেটে দেওয়ার ঘটনায় মামলা হয়েছে। এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তিন নারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। 

সোমবার (৯ জুন) বিকেলে উপজেলার শিলাইদহ ইউনিয়নের মির্জাপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। 

স্থানীয়দের অভিযোগ, জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী রিনা খাতুন প্রতিবেশী রিপন আলীর বাড়ির ফ্রিজ থেকে মাংস চুরি করেন। এ নিয়ে শুরু হয় চরম উত্তেজনা। রিপনের স্ত্রী মুক্তি খাতুন রিনাকে বাড়ির উঠানে গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধর করেন। পরে রিনার স্বামী তাকে উদ্ধার করে নিয়ে যান।

তবে ঘটনা এখানেই থেমে থাকেনি। রাত ৮টার দিকে বেশ কিছু নারী-পুরুষ জড়ো হয়ে রিনার বাড়িতে ভাঙচুর চালিয়ে গরু ও ছাগল নিয়ে যান। পরে রিনাকে ধরে ফের রিপনের বাড়িতে এনে মারধর করে মাথার চুল কেটে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। পরদিন রাতে নির্যাতনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে, থানায় সাতজনকে আসামি করে মামলা করেন নির্যাতনের শিকার রিনা খাতুন।

এদিকে বুধবার সকালে পুলিশ রিপনের স্ত্রী মুক্তি খাতুন, মোমিনের স্ত্রী পারভিন খাতুন ও বক্করের স্ত্রী লিপি খাতুনকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃতদের ছাড়াতে বেলা ১১টার দিকে কুমারখালী থানায় জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন স্থানীয়রা। এ সময় পুলিশের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কির ঘটনাও ঘটে।

এ বিষয়ে মির্জাপুর গ্রামের বাসিন্দা ও ইলেকট্রিশিয়ান রিপন বলেন, ওই নারী আমার বাসা থেকে ৪১ হাজার টাকা ও মাংস চুরি করেছে। হাতেনাতে ধরা পড়েছে। অথচ পুলিশ চোরের পক্ষ নিয়ে আমার স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করেছে।

গ্রামের আরও কয়েকজন বাসিন্দা দাবি করেন, রিনা চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়েছেন, তাই এলাকাবাসী বিচার করেছেন।

তবে ইউপি সদস্য শাহ আলম বলেন, আমি কোনো গরু বা ছাগলের বিনিময়ে কাউকে ছেড়ে দেইনি। স্থানীয়ভাবে সালিশ করে নারীটিকে তার স্বজনদের হাতে তুলে দিয়েছি। 

অন্যদিকে নির্যাতনের শিকার রিনা খাতুন অভিযোগ করে বলেন, আমার বিরুদ্ধে চুরির মিথ্যা নাটক সাজিয়ে প্রতিপক্ষরা নির্যাতন চালিয়েছে। আমি থানায় মামলা করেছি। কিন্তু মামলা তুলে নিতে হুমকি দেওয়া হচ্ছে।

কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সোলাইমান শেখ বলেন, গ্রামবাসী আসামিদের ছাড়াতে থানায় এসেছিল। তবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তিনজন আসামিকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান বলেন, চুরির অভিযোগে কাউকে এমনভাবে নির্যাতন করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। আইন হাতে তুলে নেওয়া যাবে না। ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। বর্তমানে রিনা খাতুন কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

আরটিভি/এএএ