বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫ , ০৮:০২ পিএম
পাবনার ঈশ্বরদীতে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চোর চক্রের তিন নারী সদস্যসহ চারজনকে আটক করেছে পুলিশ।
বুধবার (১৮ জুন) দুপুরে ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আ স ম আব্দুন নূর বিষয়টি গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন। এর আগে, মঙ্গলবার (১৭ জুন) রাতে উপজেলার লক্ষীকুণ্ডা ইউনিয়নের বিলকেদা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। এ সময় চুরি হওয়া একটি ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা উদ্ধার করা হয়েছে।
আটককৃতরা হলেন—ঈশ্বরদীর লক্ষ্মীকুণ্ডা ইউনিয়নের মৃত আজাহার সরদারের ছেলে সুমন সরদার (২৬), কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার আদাবাড়ীয়া গ্রামের আব্দুল খালেকের মেয়ে সুখি খাতুন (১৮), নাটোরের লালপুর উপজেলার বালিতিতা (ইসলামপুর) গ্রামের সাহু বিশ্বাসের মেয়ে তনিমা আক্তার তমা (২১) এবং একই গ্রামের রশিদের মেয়ে আঁখি খাতুন (২০)।
উদ্ধার হওয়া অটোরিকশার মালিক ঈশ্বরদীর দাশুড়িয়া ইউনিয়নের রেজান নগর গ্রামের মহসিন রেজা মন্টুর ছেলে নাজমুল হুসাইন রনি (৩৮) জানান, আমার ৫টি ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা আছে। এগুলো আমি ভাড়ায় চালানোর জন্য বিভিন্ন লোকজনের কাছে ভাড়া দিয়ে থাকি। ঈশ্বরদী পৌরসভার অরণকোলা মিয়া পাড়া গ্রামের বরাত আলীর ছেলে হাসান আলীকে (২৮) একটি অটোরিকশা ভাড়ায় চালানোর জন্য দেই। সে আমার ব্যাটারি চালিত একটি অটোরিকশা তার কাছে রেখে দীর্ঘদিন যাবত ভাড়ায় চালিয়ে আসছে।
অটোরিকশা চালক হাসান আলী (২৮) জানান, গত ১৬ জুন রাত ৮টার দিকে ঈশ্বরদী বাজার থেকে এক ছেলে ও এক মেয়ে বাবুলচারা যাওয়ার কথা বলে অটোরিকশা ভাড়া নেয়। পরে আমি ওই দুই যাত্রীকে নিয়ে বাবুলচারা যাওয়ার সময় ঈশ্বরদী বাস টার্মিনাল পৌঁছনোর পর তাদের পরিচিত আরও দুজন মেয়ে যাত্রী অটোরিকশায় ওঠে। এরপর চারজন যাত্রী নিয়ে আমি বাবুলচারার উদ্দেশ্যে রওনা দেই এবং যাত্রীদের কথামত বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাঘুরি করি। পরে ওইদিন রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঈশ্বরদীর লক্ষীকুন্ডা ইউনিয়নের বিলকেদার ঘোড়ামারা গ্রামে একটি নির্জন স্থানে পৌঁছানোর পর কৌশলে তারা আমাকে কিছু একটা স্প্রে করে। একপর্যায়ে আমি ধীরে ধীরে অচেতন হওয়ার মত দুর্বল হয়ে পড়লে যাত্রীরা আমাকে গাড়ী থামাতে বললে আমি গাড়ী থামাই। পরে ওই চারজন মিলে আমাকে অটোরিকশা থেকে নামিয়ে মহিলার ওড়না দিয়ে হাত-পা ও মুখ বেঁধে ফাঁকা মাঠে রাস্তার পার্শ্বে ফেলে অটোরিকশা নিয়ে পালিয়ে যায়।
ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আ স ম আব্দুন নূর জানান, চোর চক্রের সদস্যরা ঈশ্বরদী বাজার থেকে বাবুলচারা এলাকায় যাওয়ার কথা বলে অটোরিকশাটি ভাড়া করে। পরে উপজেলার বিলকেদার ঘোরামারা এলাকায় নির্জন স্থানে গিয়ে চালকের মুখে চেতনা-নাশক স্প্রে করে। এরপর চালক অচেতন না হলেও শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে। এসময় চালককে ওড়না দিয়ে মুখ, হাত-পা বেঁধে অটোরিকশাটি নিয়ে পালিয়ে যায় চক্রের সদস্যরা।
ওসি আরও জানান, অটোরিকশার মালিক নাজমুল ও চালক হাসান থানায় এসে বিষয়টি জানানোর পর অটোরিকশা উদ্ধারের জন্য আমরা অভিযান শুরু করি। একপর্যায়ে গোপন সংবাদ ও আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার এবং স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় ঈশ্বরদীর লক্ষীকুন্ডা ইউনিয়নের বিলকেদা এলাকা থেকে ১৭ জুন রাতে অটোরিকশা চোর চক্রের চার সদস্যকে আটক করি এবং তাদের হেফাজত থেকে চোরাই ব্যাটারি চালিত অটোরিকশাটি উদ্ধার করা হয়।
আরটিভি/এএএ -টি