মঙ্গলবার, ০৮ আগস্ট ২০২৩ , ০৩:০৬ পিএম
বিশ্ববিদ্যালয়ের আদেশ অমান্য করে ক্যাম্পাসে কোনো ধরনের সাংগঠনিক ছাত্র রাজনীতিতে যুক্ত না হওয়ার শপথ গ্রহণ করেছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) দুপুর ১টা ২৫ মিনিটে বুয়েট ক্যাফেটেরিয়ার সামনে সম্মিলিত কণ্ঠে এ শপথ পাঠ করেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা যে শপথ পাঠ করেন—আমরা প্রতিজ্ঞা করছি যে, এই বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সকল প্রকার সন্ত্রাস ও সাম্প্রদায়িক অপশক্তির উৎখাতকে আমরা সম্মিলিতভাবে রুখে দেব। নৈতিকতার সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ সব ধরনের বৈষম্যমূলক অপসংস্কৃতি এবং ক্ষমতার অপব্যবহার আমরা সমূলে উৎখাত করব।
শপথ পাঠ শেষে একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষার্থীরা বলেন, লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতির চরমতম রূপ বারবার আঘাত হেনেছে আমাদের বুয়েট ক্যাম্পাসে। ২০০২ সালে থেকে শুরু করে ২০১৯ সাল ছাত্ররাজনীতির অন্ধকার অধ্যায় তার ভয়ংকর দাগ রেখে গেছে আমাদের এই ক্যাম্পাসে। কালের পরিক্রমায় নিজেরা আন্দোলন করে, দাবি আদায় নিশ্চিত করার পর সব বাধা ডিঙিয়ে সকল শিক্ষার্থী একতাবদ্ধ হয়েছি যখন, তখনই আবারও বুয়েট শিক্ষার্থীদের নিরপেক্ষ মনোভাবকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে অপপ্রচার চালাচ্ছে বিভিন্ন স্বার্থান্বেষী মহল। গত ৩০ জুলাই সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওড়ে নাশকতার পরিকল্পনাকারী সন্দেহে বুয়েটের ২৪ জন বর্তমান শিক্ষার্থীসহ ৩৪ জন শিক্ষার্থী আটক হয়। পরবর্তীতে আদালতের মাধ্যমে তাদের জামিন মঞ্জুর হয়। এ বিষয়ে আমরা রাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থার ওপর আস্থা রেখে একটি সুষ্ঠু ও দ্রুত বিচার আশা করছি। যদি তারা প্রত্যেকেই দোষী প্রমাণিত হয়, সাধারণ শিক্ষার্থীরা অবশ্যই তাদের বিপক্ষে থাকবে। একইভাবে যদি তাদের মধ্যে কেউ নির্দোষ প্রমাণিত হয়, তবে নির্দোষরা যেন আর কোনোভাবে হয়রানির স্বীকার না হয়। সে ব্যাপারে আমরা সচেষ্ট থাকব এবং বুয়েট প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করব।
তারা আরও বলেন, সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে কোনো সাংগঠনিক ছাত্ররাজনীতির সঙ্গে জড়িত কি না বা তারা ক্যাম্পাসে অন্য শিক্ষার্থীদের প্রভাবিত করছে কি না, এই ব্যাপারে যথাযথ তদন্তের জন্য আমরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানিয়েছি। যদি তাদের এরূপ কোনো সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত হয়, তবে ভার্সিটির অধ্যাদেশ অনুযায়ী তাদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে এবং এ বিষয়ে শিক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা থাকবে। এবং যদি তারা নির্দোষ হয়, তাহলে তারা যেন সুস্থ একাডেমিক কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারে তার দাবি জানানো হচ্ছে।
দৃঢ় কণ্ঠে শিক্ষার্থীরা জানান, সব ধরনের লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি ও মৌলবাদের বিরুদ্ধে, আমরা বুয়েট শিক্ষার্থীদের যে দৃঢ় অবস্থান তা থেকে আমরা কোনো অবস্থাতেই সরে আসব না। যেকোনো ছাত্ররাজনীতি এবং মৌলবাদ চর্চা বুয়েট ক্যাম্পাসে কখনোই গ্রহণযোগ্য হবে না, তা সে যে দলেরই হোক না কেন।