আসিফ আলম
শনিবার, ০৭ জুন ২০২৫ , ০৭:৪২ পিএম
ঈদ মানে খুশি, ঈদ মানে আনন্দ। ঈদ মানেই ধনী-গরীব ভেদাভেদ ভুলে পরস্পরকে বুকে টেনে নেওয়ার উজ্জলতম একটি খুশির দিন। বছর ঘুরে আবারও এসেছে ঈদ। চারদিকে শুরু হয়েছে খুশি আর আনন্দের বন্যা।
এদিকে ঈদকে কেন্দ্র করে দেশের বিনোদন অঙ্গনের লেগেছে আনন্দের ছোঁয়া। অনেকেই প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদ করতে ঢাকা ছেড়েছেন। সেই কাতারে আছেন ঢাকাই সিনেমার দাপুটে অভিনেতা মিশা সওদাগর। বর্তমানে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানেই পরিবারের সঙ্গে ঈদ করেছেন তিনি। ঈদ ও সমসাময়িক নানা বিষয় নিয়ে আরটিভির সঙ্গে কথা হলো জনপ্রিয় এই অভিনেতার।
আরটিভি: ঈদ কোথায় করা হচ্ছে ও পরিকল্পনা কি?
মিশা সওদাগর: আপনারা সবাই জানেন সম্প্রতি আমার পায়ের লিগামেন্টের অপারেশন করা হয়েছে। পাশাপাশি আমার পরিবারও আছে এখন যুক্তরাষ্ট্রে। সব মিলিয়ে এবার ঈদ পরিবারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রেই করেছি। ঈদ নিয়ে আসলে বিশেষ কোনো পরিকল্পনা নেই। দেশেই কোরবানি দেওয়া হচ্ছে।
আরটিভি: কোরবানি ঈদের দিনটা কিভাবে কাটে?
মিশা সওদাগর: সাধারণত ঈদ এখানে করলে ছেলেদের নিয়ে নামাজ পড়ে তাদের সঙ্গে সময় কাটাই। তবে এইবার আমার পায়ের অবস্থা ভালো না। ডাক্তার তিন সপ্তাহের রেস্ট দিয়েছেন। তাই চাইলেও বের হওয়ার সুযোগ ছিল না। ঘরেই এবারের ঈদ কেটেছে।
আরটিভি: ঈদ নিয়ে কিছু মজার স্মৃতির কথা জানতে চাই..
মিশা সওদাগর: আগে তো ভাগে কোরবানি দিতাম, পরে একবার শুটিং থেকে এসেই রাতে হাটে গিয়ে একাই কোরবানির জন্য গরু কিনতে যাই। তখন আসলে নিজের কাছেই বেশ ভালো লাগছিল, কেননা নিজের উপার্জনের টাকা দিয়ে প্রথম একা কোরবানি দিচ্ছি। পরে যখন গরু কিনতে যাই, তখন সবাই আমাকে চিনে ঘিরে ধরে। কেননা তখন আমি ইয়ং ভিলেন, মোটামুটি সবাই আমাকে চিনে। হাটে যাওয়ায় পর আমাকে নিয়েই টানাটানি শুরু হয়ে যায়। তখন আসলে আমার নিজেকেই গরু মনে হচ্ছিল (হা হা হা)।
আরটিভি: আগের ঈদ আর এখনকার ঈদের মাঝে কোনো পার্থক্য খুঁজে পান কি?
মিশা সওদাগর: এখনকার ঈদের ব্যাপারটা কেমন যেন হয়ে গেছে। আল্লাহ বলেছেন যার তৌফিক আছে কোরবানি সে-ই দিবে, যার তৌফিক নাই তাকে দিতে বারণ করেছেন। হজ যার টাকা আছে, তাকে করতে বলেছেন। এই আমলের সঙ্গে অর্থ জড়িত। যেমন নামাজ রোজার সঙ্গে কোনো অর্থ জড়িত নয়, শরীর জড়িত। তুমি রোজা রাখবা, নামাজ পড়বা শরীর দিয়ে করবা। কিন্তু হজ, জাকাত এগুলো করবা বেশি টাকা থাকলে। তো আমার মনে হয় এখনকার সবাই না, অনেকাংশেই বলবো যে এখন কোরবানি থেকে শুরু করে টোটাল ব্যাপারটাই লোক দেখানো হয়ে গেছে। আর আগে বিষয়টা লোক দেখানো ছিলো না, আল্লাহকে দেখানো ছিল, আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য বেশি ছিল। এখন প্রায়ই দেখা যায়, ওমুক ১০টা কোরবানি দিচ্ছে, সেটা নিয়ে আবার নিউজ হচ্ছে।
আমি পুরান ঢাকার মানুষ, আমরা দেখেছি আগে যারা সম্ভ্রান্ত ছিল তাদের পুরো মহল্লা, পরিবার, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব সবার লিস্ট করা থাকতো, কারা গরু দেয়, কারা না দেয়। সেই সঙ্গে কার বাসায় মাংস যাবে সব নিয়ম করে হতো। আর এখন আসলে মানুষ পার্থিব জগৎ নিয়ে এত ব্যস্ত যে, তারা আল্লাহর যথাযথ সন্তুষ্টির কথা ভুলে গেছে। যাইহোক, আল্লাহ সবাইকে হেদায়েত করুক। এই ঈদ ও এই কোরবানি এমন হোক- যাতে মনের কোরবানি হয়, আমাদের হিংসার কোরবানি হয়, আমাদের অন্যায় ও প্রতিযোগিতার কোরবানি হয়। সবাইকে ঈদ মোবারক, যারা আমাকে ভালোবাসে ও বাসে না সবাইকেই।
আরটিভি/এএ//এআর