শনিবার, ১০ এপ্রিল ২০২১ , ১২:২৫ পিএম
গত ১ বছরে করোনা নিয়ন্ত্রণে সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়নি। অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে পরিস্থিতি সামলাতে কাজ করা যেতো। সরকারের পরিকল্পনায় ঘাটতি আছে। এখন বলার জন্য লকডাউন দিচ্ছে! যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির ডিস্টিংগুইশড প্রফেসর ড. আলী রীয়াজ সম্প্রতি একটি গণমাধ্যমের সাক্ষাৎকারে এসব মন্তব্য করেন।
ইউটিউবে ডয়চে ভেলে বাংলা‘র ‘খালেদ মুহিউদ্দীন জানতে চায়’ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসের বর্তমান পরিস্থিতি ও লকডাউন বিষয়ে আলোচনায় এমন মন্তব্য করেন তিনি। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ)-এর ভাইস চ্যান্সেলর মো. শারফুদ্দিন আহমেদ।
করোনা ভাইরাস সংক্রমণের হার গত জানুয়ারি মাস থেকেই বাড়ছে। তবে জানুয়ারি মাস থেকে শুরু করে কয়েক মাস টানা লকডাউন চালিয়ে যাওয়া সম্ভব কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে আলী রীয়াজ বলেন, সরকার জানুয়ারি মাসে লকডাউন দিতে না পারলে মার্চ মাসে পারে কী করে? বিশেষজ্ঞরা যদি বলে যে, জানুয়ারি মাসে এটি সম্ভব ছিল না, তাহলে এপ্রিল মাসে এটি কী করে সম্ভব হয়? এমন প্রশ্ন করে তিনি বলেন, ‘‘তাহলে আমাকে বলতে হবে, আপনি জানুয়ারি মাসেও জানতেন এটি সম্ভব না, এপ্রিল মাসেও জানেন যে, এটি সম্ভব না। বলার জন্য বলছেন। তো বলার জন্য বলছেন, যদি সাধারণ লোকজনের কাছে এ মেসেজটা যায়, তাহলে সে কেন...?’’
এদিকে ১ সপ্তাহের লকডাউনে সরকার কী অর্জন করতে চায়? এমন প্রশ্নের জবাবে বিএসএমএমইউ’র ভাইস চ্যান্সেলর শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘‘মানুষের মধ্যে ভয় চলে গেছে, যে কারণে তারা আর করোনাকে গুরুত্ব দিচ্ছে না, যে কারণে সরকার কঠোর লকাডাউনের চিন্তা করছে।’’ তবে ৭ দিন বা ১৪ দিন পরও যদি দেখা যায় সংক্রমণ কমছে না, সেক্ষেত্রে লকডাউন বাড়ানোর পরামর্শ তার।
‘অনেকের কাছে জীবনের চেয়ে জীবিকা বড় হয়ে উঠেছে’- এমন মন্তব্য করে শারফুদ্দিন আহমেদ আরো বলেন, যে সরকার নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য ব্যবস্থা নিয়েছে। তবে করোনা ঠেকাতে মানুষের মধ্যে সচেততা বৃদ্ধির বিষয়েই গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে সরকারে সমালোচনা করে আলী রীয়াজ আরো বলেন, সরকার গত বছরের অভিজ্ঞতার আলোকে কোনো পরিকল্পনা গ্রহণ করেনি। করোনা মোকাবিলায় প্রস্তুতির ঘাটতি আছে- এমন মত প্রকাশ করে তিনি বলেন, সাধারণ মানুষকে দায়ী না করে এর জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে।
শারফুদ্দিন আহমেদ মনে করেন, মানুষ লকডাউন না চাইলেও সংক্রমণ কমাতে হলে লকডাউন দিতে হবে। বিভিন্ন অঞ্চলকে রেড, ইয়োলো, গ্রিন ইত্যাদি জোনে ভাগ করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের কথা বলেন তিনি।
তার মতে, করোনা ঠেকাতে এ মহূর্তে ‘কম্পলিট লকডাউন’ দেয়া উচিত।
সূত্র:- ডয়েচে ভেলে
কেএফ