সোমবার, ২৬ মে ২০২৫ , ০৬:৩৪ পিএম
বিশ্বব্যাপী নারীদের মৃত্যুর একটি প্রধান কারণ হৃদরোগ হলেও, এখনও অনেকেই এটিকে শুধুমাত্র পুরুষদের সমস্যা বলে মনে করেন। এই ভুল ধারণা নারীদের জন্য প্রাণঘাতী হতে পারে, কারণ এতে রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা দেরিতে হয়।
আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী, ২০ বছর বা তার বেশি বয়সী নারীদের প্রায় অর্ধেকই কোনো না কোনো ধরনের কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজে (সিভিডি) আক্রান্ত। বর্তমানে বিশ্বজুড়ে প্রায় ৬ কোটির বেশি নারী হৃদরোগে ভুগছেন।
নারীদের ক্ষেত্রে হার্ট অ্যাটাকের উপসর্গগুলো অনেক সময় পুরুষদের তুলনায় ভিন্ন ও সূক্ষ্ম হয়ে দেখা দেয়। ফলে সেগুলো অন্য রোগ ভেবে উপেক্ষা করা হয়। নিচে নারীদের হার্ট অ্যাটাকের কিছু ভিন্ন উপসর্গ তুলে ধরা হলো, যা সময়মতো শনাক্ত হলে জীবন রক্ষা করা সম্ভব।
গলা, চোয়াল ও পিঠের ওপরের অংশে ব্যথা: অনেক নারী গলা, চোয়াল বা পিঠের ওপর অংশে অস্বস্তি বা ব্যথা অনুভব করেন, যা দাঁতের সমস্যা বা মাসল পুল ভেবে অবহেলা করা হয়। কিন্তু এই ব্যথা হার্ট অ্যাটাকের ইঙ্গিত হতে পারে, বিশেষ করে অন্য উপসর্গ থাকলে।
শ্বাসকষ্ট: বুকের ব্যথা ছাড়াই হঠাৎ শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে তা সতর্কসংকেত হতে পারে। নারীরা অনেক সময় এটিকে অ্যাজমা বা উদ্বেগজনিত সমস্যা ভেবে ভুল করেন।
বমি বমি ভাব বা বমি: হার্ট অ্যাটাকের সময় নারীদের অনেক সময় বমি বা বমি বমি ভাব দেখা দেয়। এটি সাধারণ হজমের গোলমাল বা ভাইরাল ইনফেকশন মনে করে গুরুত্ব না দিলে মারাত্মক হতে পারে।
অতিরিক্ত ক্লান্তি: কোনো কারণ ছাড়াই দীর্ঘদিন ধরে অতিরিক্ত দুর্বলতা বা ক্লান্তি অনুভব করা হৃদরোগের উপসর্গ হতে পারে। এটি কর্মব্যস্ততা বা ঘুমের ঘাটতির ফল বলে মনে করা হয়, কিন্তু এটি একটি লুকানো সংকেত।
মাথা ঘোরা বা হালকা মাথাব্যথা: হঠাৎ মাথা ঘোরা, ভারসাম্য হারানো বা অজ্ঞান হয়ে যাওয়া – এই উপসর্গগুলোকে ডিহাইড্রেশন বা দুশ্চিন্তা হিসেবে ধরা হয়, কিন্তু এগুলোও হৃদরোগের পূর্বাভাস দিতে পারে।
বুকজ্বালা বা গ্যাস্ট্রিকের মতো অনুভূতি: হার্ট অ্যাটাকের সময় অনেক নারী বুকজ্বালা, পেট ফাঁপা বা অ্যাসিডিটির মতো অস্বস্তি অনুভব করেন। ফলে অনেকে গ্যাস্ট্রিক মনে করে চিকিৎসায় দেরি করেন।
ঠাণ্ডা ঘাম: কোনো কাজ না করেও হঠাৎ ঠাণ্ডা ঘামে ভিজে যাওয়া, যার সঙ্গে মাথা ঘোরা বা বমির অনুভূতিও থাকতে পারে— এটি হার্ট অ্যাটাকের একটি বড় সতর্কতা।
এই উপসর্গগুলোর যেকোনো একটি দেখা দিলেই অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসকের সহায়তা নিন। সময়মতো পদক্ষেপই হতে পারে জীবন বাঁচানোর চাবিকাঠি।
আরটিভি/জেএম