রোববার, ২৫ মে ২০২৫ , ০২:২০ পিএম
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় অনাহারে চার বছর বয়সী এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। তার নাম মোহাম্মদ ইয়াসিন। গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ এ তথ্য জানিয়েছে।
এর মধ্য দিয়ে গাজায় ইসরায়েলের অবরোধ শুরুর পর থেকে অনাহারে মৃত ফিলিস্তিনির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৮-তে।
রোববার (২৫ মে) এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
আল জাজিরাকে দেওয়া এক বিবৃতিতে সংস্থার মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল জানান, ইসরায়েলের আরোপিত অবরোধের ফলে খাদ্য, পানি ও মানবিক সহায়তা গাজার বাসিন্দাদের কাছে পৌঁছাতে না পারায় এই শিশুটির মৃত্যু হয়েছে।
মাহমুদ বাসাল আরও বলেন, এটা গাজায় ক্ষুধায় প্রথম শিশু মৃত্যুর ঘটনা নয়। খাদ্য ও পানি প্রবেশ করতে না পারলে, সামনে আরও অনেক শিশুর মৃত্যু আমরা দেখতে পাবো। এই দুঃসহ পরিস্থিতির অবসানে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানাই।
এদিকে গাজার চিকিৎসক ইজজেদিন শাহিন জানিয়েছেন, দুর্ভিক্ষ এখন এমন শিশুদেরও মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে যারা আগে মোটামুটি সুস্থ ছিল।
সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ (সাবেক টুইটার) দেওয়া এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, দুর্ভিক্ষ এখন এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছে যেখানে শুধু অসুস্থ বা বিশেষ যত্নের দরকার এমন শিশু নয়, বরং আগে সুস্থ ছিল এমন শিশুরাও মৃত্যুর শিকার হচ্ছে, শুধুমাত্র অপুষ্টির কারণে।
গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ক্ষুধা বা অনাহারের কারণে মোহাম্মদ ইয়াসিনের মৃত্যু এই ধরনের ৫৮তম ঘটনা—অর্থাৎ ইসরায়েলের অবরোধ শুরু হওয়ার পর থেকে গাজায় ক্ষুধার কারণে এখন পর্যন্ত ৫৮ জন ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে।
বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) সতর্ক করে বলেছে, গাজায় ৭০ হাজারের বেশি শিশু তীব্র মাত্রার অপুষ্টিতে ভুগছে।
ইসরায়েলের সেনাবাহিনী বলেছে, গাজার খান ইউনিসে এক হামলায় নারী চিকিৎসকের ৯ সন্তান নিহত হওয়ার ঘটনাটি নিয়ে তারা পর্যালোচনা করছে। ওই হামলায় চিকিৎসক আলা আল-নাজ্জারের ১০ সন্তানের মধ্যে ৯ জনই নিহত হয়েছে। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে সবচেয়ে বড়টির বয়স ১২ বছর এবং ছোটটির বয়স মাত্র কয়েক মাস।
জাতিসংঘ ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা আগেই সতর্ক করেছিল, গাজা চরম মানবিক বিপর্যয়ের মুখে রয়েছে। একাধিক প্রতিবেদন ও তথ্য অনুযায়ী, বিশেষ করে উত্তর গাজায় খাদ্য ও চিকিৎসা সরবরাহ প্রায় সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। সহায়তা পৌঁছাতে না পারায় পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠছে।
আরটিভি/এআর