বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন ২০২৫ , ০৭:৪৬ পিএম
ইরান-ইসরায়েল সংঘাত দিনদিন ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। দুই দেশই একে অপরকে লক্ষ্য করে শত শত মিসাইল ছোড়ার পাশাপাশি নিয়মিত ড্রোন হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইস্যুটি নিয়ে এবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের মধ্যে ফোনালাপ হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) সিএনএন জানায়, চীনের প্রেসিডেন্ট এই সংঘাত নিরসনে ‘বড় শক্তিগুলোর’ প্রতি উত্তেজনা কমানোর আহ্বান জানিয়েছেন। ফোনালাপে ইসরায়েলের ইরানবিরোধী পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়েছেন দুই নেতা।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের নাম উল্লেখ না করেই চীনের প্রেসিডেন্ট বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়- বিশেষ করে বড় শক্তিগুলোর তাদের উচিত পরিস্থিতি ঠান্ডা করার উদ্যোগ নেওয়া, উল্টোটা নয়।
এ ছাড়া তিনি তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতির জন্য ইরান ও ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানান। চলমান উত্তেজনা কমানোর জন্য বিশেষভাবে ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানান শি জিনপিং।
ফোনালাপে পুতিনকে চীনের প্রেসিডেন্ট বলেন, সংঘাতে জড়িত পক্ষগুলো- বিশেষ করে ইসরায়েলের দ্রুত যুদ্ধবিরতিতে যাওয়া উচিত, যাতে পরিস্থিতি আর না বাড়ে এবং যুদ্ধ অন্য কোথাও ছড়িয়ে পড়া ঠেকানো যায়।
ফোনালাপের বিষয়ে রাশিয়ার পক্ষ থেকে জানানো হয়, পুতিন ও জিনপিং একমত যে এই সংঘাতের বা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির কোনো সামরিক সমাধান নেই। এগুলোর সমাধান কেবল রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক উপায়েই সম্ভব।
পুতিনের বক্তব্য তুলে ধরে ক্রেমলিন উপদেষ্টা ইউরি উশাকভ বলেন, যদি প্রয়োজন হয়, রাশিয়ার পক্ষ থেকে মধ্যস্থতার যেকোনো সম্ভাব্য উদ্যোগ নেওয়া হবে। চীনের প্রেসিডেন্টও এমন মধ্যস্থতাকে সমর্থন জানিয়েছেন, কারণ এটি বর্তমান অত্যন্ত উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি প্রশমনে সহায়ক হতে পারে।
দুই দেশ একমত হয়েছে, আগামী দিনগুলোতে তাদের কূটনৈতিক ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর মধ্যে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ বজায় থাকবে।
গত ১২ জুন দিনগত রাত হঠাৎ ইরানে হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ নামের এই অভিযানে রাজধানী তেহরানসহ ইরানের বিভিন্ন সামরিক স্থাপনা, পরমাণু গবেষণা কেন্দ্র ও আবাসিক স্থাপনায় হামলা চালায় ইহুদিবাদী সেনারা।
হামলায় ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান মোহাম্মদ বাঘেরি, দেশটির ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) প্রধান কমান্ডার হোসেইন সালামি, খাতাম আল-আনবিয়া সদরদপ্তরের কমান্ডার ও বিপ্লবী রক্ষীবাহিনীর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মেজর জেনারেল গোলাম আলি রশিদ ও ছয়জন পরমাণু বিজ্ঞানীসহ অন্তত কয়েকশ মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
ইসরায়েলের হামলার পর পাল্টা প্রতিশোধ হিসেবে শুক্রবার রাতে ‘অপারেশন ট্রু প্রমিস-৩ নামে’ অভিযান শুরু করে ইরান। তেহরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের উন্নত আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে ভেদ করে গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানছে। এতে হতাহত কম হলেও ইসরায়েলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। ইরানের হামলার ভয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছেন ইহুদিবাদীরা। দুই দেশের মধ্যে সংঘাত এখনও চলমান রয়েছে।
আরটিভি/আরএ