সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ , ০৯:৩১ এএম
উত্তর আফ্রিকার দেশ লিবিয়ার দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় শহর কুফরার মরুভূমিতে আরও দুটি গণকবরের সন্ধান পেয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। কবর দুটি থেকে উদ্ধার হয়েছেন ৪৯টি মরদেহ। জানা গেছে, অভিবাসন ও শরণার্থী প্রত্যাশীদের যারা দেশটির মধ্য দিয়ে ইউরোপে পাড়ি জমাতে চেয়েছিলেন এগুলো তাদের মরদেহ।
রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।
প্রতিবেদন অনুসারে, এদিন দেশটির নিরাপত্তা অধিদপ্তর এক বিবৃতি দিয়ে বলেছে, শুক্রবার দক্ষিণ-পূর্ব দিকের কুফরা শহরের একটি খামারের গণকবর থেকে ১৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এসব লাশের দেহাবশেষ ময়নাতদন্ত করা হচ্ছে।
আর কুফরার নিরাপত্তা বিভাগের প্রধান মোহাম্মদ আল-ফাদিল বলেন, শহরটির একটি বন্দিশিবিরে অভিযান চালালে সেখানে আরও একটি গণকবর পাওয়া যায়। এই কবর থেকে অন্তত ৩০টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
এ কর্মকর্তা আরও বলেন, বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের ভাষ্যমতে এই গণকবরে প্রায় ৭০ জন ব্যক্তিকে মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে। কর্তৃপক্ষ গণকবরটিতে অনুসন্ধান অব্যাহত রেখেছে। পূর্ব ও দক্ষিণ লিবিয়ায় অভিবাসন ও শরণার্থী প্রত্যাশীদের সহায়তাদানকারী দাতব্য প্রতিষ্ঠান আল-আবরিন বলেছে, গণকবরে যাদের মরদেহ পাওয়া গেছে, তাদের মধ্যে কয়েকজনকে মাটিচাপা দেওয়ার আগে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল।
লিবিয়াতে গণকবর শনাক্তের ঘটনা এটাই প্রথম নয়। গত বছর রাজধানী ত্রিপোলির দক্ষিণের শুয়ারিফ অঞ্চলের একটি গণকবর থেকে অন্তত ৬৫ অভিবাসন প্রত্যাশীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছিল।
মূলত, আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্য হয়ে ইউরোপে যাওয়ার জন্য অভিবাসন ও শরণার্থী প্রত্যাশীদের একটি বড় অংশ লিবিয়াকে বেছে নেন। তাদের বিভিন্ন ধরনের দুর্বলতার সুযোগ গ্রহণ করে মানবপাচারকারী চক্রের সদস্যরা। অঞ্চলটির চাদ, নাইজার, সুদান, মিসর, আলজেরিয়া এবং তিউনিসিয়াসহ ছয়টি দেশের সীমান্তজুড়ে এক দশকেরও বেশি ধরে অভিবাসন এবং শরণার্থী প্রত্যাশীদের পাচার থেকে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে তারা।
মানবাধিকার গোষ্ঠী ও জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো লিবিয়ায় পদ্ধতিগতভাবে জোরপূর্বক শ্রম, মারধর, ধর্ষণ এবং নির্যাতনের শিকার শরণার্থী প্রত্যাশীদের ওপর নির্যাতন নিয়ে নিয়মিত প্রতিবেদন প্রকাশ করে আসছে। সাগর থেকে যাদের আটক করে লিবিয়ায় ফিরিয়ে দেওয়া হয় তাদেরকে সেখানকার সরকার পরিচালিত বন্দিশিবিরে আটক রাখা হয়। সেখানে ধর্ষণ ও চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন ধরনের নির্যাতনের শিকার হন তারা।
আরটিভি/এসএইচএম/এস