বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫ , ০৬:৪৭ পিএম
ক্যানসার—এই শব্দটি শুনলেই শিউরে ওঠেন অনেকেই। প্রাণঘাতী এই রোগের পেছনে সাধারণত বায়ুদূষণ, ধূমপান ও মদপানের কথা বলা হয় বেশি। কিন্তু জানলে অবাক হবেন, রান্নাঘরের কিছু অভ্যাসও ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। প্রতিদিনের চেনা কিছু রান্নার ভুল, অজান্তেই শরীরের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। চলুন জেনে নেওয়া যাক এমন কিছু ভুল, যেগুলি এড়িয়ে চলাই ভালো—
সরাসরি আগুনে রুটি সেঁকা
অনেকে তাওয়ার বদলে গ্যাসের আগুনে সরাসরি রুটি সেঁকে নেন, যাতে রুটি দ্রুত ফুলে ওঠে। কিন্তু এই অভ্যাসটি শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। আগুনের সরাসরি তাপে তৈরি হয় ‘অ্যাক্রিলামাইড’ নামে একটি রাসায়নিক, যা ক্যানসারসহ বিভিন্ন জটিল রোগের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
একবার ব্যবহার করা তেল পুনরায় ব্যবহার
অনেকেই একবার ভাজার পর তেল ফেলে দিতে চান না। কিন্তু সেই তেল বারবার গরম করলে তাতে ট্রান্স ফ্যাট ও ফ্রি র্যাডিকেল তৈরি হয়, যা শরীরের কোষে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস সৃষ্টি করে। এর ফলে হৃদরোগ ও ক্যানসারের ঝুঁকি বহুগুণে বেড়ে যায়।
ডাল ও শস্য ঠিকমতো না ধোওয়া বা ভিজিয়ে না রাখা
ব্যস্ততায় অনেকেই ডাল বা অন্যান্য শস্য ভালোভাবে না ধুয়ে কিংবা না ভিজিয়ে সরাসরি রান্না করে ফেলেন। এতে শরীরে ক্ষতিকর ফাইটিক অ্যাসিড ও কীটনাশক ঢুকে পড়তে পারে। এই উপাদানগুলো খনিজ শোষণে বাধা দেয় এবং লিভারের ক্ষতি করে, যা ক্যানসারের ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
সবজির খোসা ফেলে দেওয়া
সবজির খোসায় থাকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা শরীরকে ক্যানসারের মতো রোগ থেকে সুরক্ষা দিতে পারে। সব সময় সবজির খোসা না ফেলে, ভালোভাবে ধুয়ে খোসাসহ রান্না করাই স্বাস্থ্যসম্মত।
আলু ফ্রিজে রাখা
অনেকে আলু ফ্রিজে সংরক্ষণ করেন, কিন্তু এতে আলুতে থাকা শর্করা অ্যাক্রিলামাইডে রূপান্তরিত হয় রান্নার সময়, যা ক্যানসার সৃষ্টি করতে পারে। তাই আলু ফ্রিজে না রাখা ভালো।
খাওয়ার পরপরই চা পান
খাবার শেষে গরম চা উপভোগের অভ্যাস অনেকেরই রয়েছে। কিন্তু চা-তে থাকা ট্যানিন ও অক্সালেট শরীরে আয়রনের শোষণ ব্যাহত করে। আয়রনের ঘাটতি শরীর দুর্বল করে, যা দীর্ঘমেয়াদে নানা রোগের আশঙ্কা বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই খাওয়ার অন্তত ৩০ থেকে ৪০ মিনিট পর চা পান করাই উত্তম।
শুধু বাইরের দূষণ নয়, ঘরের ভেতর রান্নাঘরেও লুকিয়ে থাকতে পারে ক্যানসারের ঝুঁকি। তাই প্রতিদিনের রান্নার অভ্যাসে কিছুটা সচেতনতা আনলেই সুস্থতা নিশ্চিত করা সম্ভব। স্বাস্থ্যকর রান্না মানেই স্বাস্থ্যকর জীবন।
আরটিভি/জেএম