images

স্বাস্থ্য পরামর্শ

জেনে নিন ক্যানসার প্রতিরোধের সর্বোত্তম উপায়

মঙ্গলবার, ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ , ০৩:১৯ পিএম

আজ ৪ ফেব্রুয়ারি, বিশ্ব ক্যানসার দিবস। অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও দিনটি পালন করা হচ্ছে। ক্যানসার বিশ্বব্যাপী একটি গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা। বিশেষ করে সীমিত চিকিৎসা সুবিধা, সচেতনতার অভাব ও দেরিতে রোগ নির্ণয়ের ফলে ক্যানসারে মৃত্যুহার বাড়ছে। ক্যানসার প্রতিরোধের সবচেয়ে কার্যকর উপায় হলো ঝুঁকিগুলো সম্পর্কে জানা এবং সচেতন থাকা।

বাংলাদেশে স্তন, মুখগহ্বর, জিহ্বা, খাদ্যনালি, কোলোরেক্টাল, জরায়ুমুখ ও ফুসফুসের ক্যানসার সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। গবেষণায় দেখা গেছে, স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা ও টিকা গ্রহণের মাধ্যমে ৩০-৫০ শতাংশ ক্যানসার প্রতিরোধ করা সম্ভব। পাশাপাশি নিয়মিত স্ক্রিনিং ও প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্তকরণ জীবন রক্ষা করতে পারে।

ক্যানসার প্রতিরোধের কার্যকর উপায়—

সঠিক খাদ্যাভ্যাস:
ভাজাপোড়া ও ট্রান্সফ্যাটযুক্ত ফাস্টফুড এড়িয়ে চলা।
পর্যাপ্ত শাকসবজি ও ফলমূল খাওয়া।
স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করে কোলন ও স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি কমানো।
শারীরিক কার্যক্রম ও ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা।

নিয়মিত ব্যায়াম:
অতিরিক্ত ওজন ও স্থূলতা ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়, তাই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুতে হবে।

ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য পরিহার:
ধূমপান ফুসফুস, মুখগহ্বরসহ বিভিন্ন ধরনের ক্যানসারের জন্য দায়ী। শুধু সিগারেট নয়, জর্দা, গুল ইত্যাদিও ক্যানসার সৃষ্টির কারণ।

নিরাপদ যৌন অভ্যাস ও টিকা গ্রহণ:
অল্প বয়সে বিয়ে, একাধিক সঙ্গী ও অনিরাপদ যৌনসম্পর্ক জরায়ুমুখ ও যকৃতের ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়।
জরায়ুমুখ ও লিভার ক্যানসার প্রতিরোধে যথাযথ টিকা গ্রহণ করতে হবে (যেমন- হেপাটাইটিস বি টিকা)।

পরিবেশ দূষণ ও ক্ষতিকর রাসায়নিক এড়িয়ে চলা:
কলকারখানার দূষণ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
তেজস্ক্রিয়তা ও অপ্রয়োজনীয় ওষুধ সেবন ক্যানসারের কারণ হতে পারে, তাই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ গ্রহণ করা উচিত নয়।

নিয়মিত স্ক্রিনিং ও প্রাথমিক অবস্থায় শনাক্তকরণ:
ক্যানসারের কোনো লক্ষণ না থাকলেও স্ক্রিনিং করানো জরুরি, বিশেষ করে যদি পারিবারিক ইতিহাস থাকে।

স্তন ক্যানসারের জন্য ব্রেস্ট আল্ট্রাসাউন্ড, ম্যামোগ্রাফি।
জরায়ুমুখ ক্যানসারের জন্য প্যাপস স্মিয়ার, ভায়া টেস্ট।
বৃহদন্ত্রের ক্যানসারের জন্য কোলনোস্কপি।

আরও পড়ুন

কোন বয়সে শিশুদের চা এবং কফি দেওয়া উচিত

সতর্কতা ও দ্রুত চিকিৎসা
যেকোনো অস্বাভাবিক উপসর্গ যেমন ওজন হ্রাস, দীর্ঘমেয়াদি কাশি, মুখে ঘা, রক্তপাত, গ্ল্যান্ড ফুলে যাওয়া ইত্যাদি অবহেলা করা উচিত নয়। এসব লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

ক্যানসার মানেই মৃত্যু নয়। সঠিক সময়ে শনাক্তকরণ ও চিকিৎসার মাধ্যমে অনেক ক্যানসার নিরাময়যোগ্য। সচেতনতা ও নিয়মিত স্বাস্থ্যপরীক্ষা ক্যানসারের বিরুদ্ধে সবচেয়ে কার্যকর প্রতিরোধ ব্যবস্থা।