বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫ , ১০:০৫ এএম
প্রকৃত নিয়োগপ্রাপ্ত না হয়েও এক ব্যক্তি দীর্ঘ ১২ বছর ধরে চাকরি করে যাচ্ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকে। অবশেষে তদন্তে বিষয়টি ধরা পড়লে তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। একই সঙ্গে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত বাংলাদেশ ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা মো. শাহজাহান মিঞাকেও চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিসি) মো. আবদুল ওয়ারেস আনসারী জানতেন না তার পরিচয় ও তথ্য ব্যবহার করে 'ওয়ারেস আনসারী' সেজে কেউ বাংলাদেশ ব্যাংকে চাকরি করছেন!
ভুয়া পরিচয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রাজশাহী আঞ্চলিক অফিসে যুগ্ম পরিচালক হিসেবে কর্মরত আনসারী ধরা পড়লেন এক যুগ পর। তিনি ২০১৩ সালের ২২ জুলাই সহকারী পরিচালক (সাধারণ) হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকে যোগ দিয়েছিলেন। তাকে চাকরিতে যোগ দিতে সহায়তা করেছিলেন তার চাচা মো. শাহজাহান মিয়া। সে সময় তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের অতিরিক্ত পরিচালক ছিলেন। তদন্তে উঠে এসেছে, শাহজাহান মিয়া সে সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়োগ বিভাগের উপপরিচালক ছিলেন।
জানা যায়, ২০১৩ সালে বাংলাদেশ ব্যাংক এবং প্রশাসন ক্যাডারে নিয়োগ পান মো. আব্দুল ওয়ারেছ আনসারী। তবে তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকে যোগ না দিয়ে প্রশাসন ক্যাডারে চলে যান এবং বর্তমানে নারায়ণগঞ্জে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হিসেবে কর্মরত। তার বাড়ি সিরাজগঞ্জ জেলায়।
এই সুযোগ কাজে লাগান মো. শাহজাহান মিঞা। তিনি নিজের ভাতিজা মো. আব্দুল ওয়ারেছ আনসারীর পরিচয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে যোগ দেন। ভুয়া পরিচয়ে ১২ বছর চাকরি করেন, এমনকি দুটি পদোন্নতি পেয়ে শেষমেশ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের যুগ্ম পরিচালক পদে পৌঁছে যান।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বুধবার (২৮) এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, শাহজাহান মিয়াকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে।
নারায়ণগঞ্জের এডিসি আবদুল ওয়ারেস আনসারী সম্প্রতি এই প্রতারণার বিষয়টি জানতে পেরেছেন। তিনি বলেন, আমি ২০১৩ সালে ৩১তম বিসিএস এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পরিচালক নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হই। পরে আমি সিভিল সার্ভিসে যোগ দেই। আমি জানতাম না যে, আমার পরিচয়ে কেউ বাংলাদেশ ব্যাংকে চাকরি করছেন। ভুয়া আনসারী গত ২৭ মে পর্যন্ত চাকরি করেছেন। ওই দিন তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়।
শাহজাহান মিয়া বরখাস্ত বলেন, আমি আজ অফিসে যাইনি। সাময়িক বরখাস্তের বিষয়ে আমি কিছু জানি না।
আরটিভি/এমএ/এআর