images

তথ্যপ্রযুক্তি / অন্যান্য

এমআরটি পাস নিবেন নাকি র‍্যাপিড পাস

মঙ্গলবার, ৩০ জানুয়ারি ২০২৪ , ১২:৪৯ পিএম

images

মেট্রোরেলের পুরোপুরি সুফল পাচ্ছেন যাত্রীরা। যারা মেট্রোরেলে যাতায়াতের জন্য সিরিয়ালে দাঁড়িয়ে বারবার টিকিট কাটতে চান না, তাদের জন্য আছে এমআরটি পাস কার্ড।

                                                                                                          এমআরটি পাস 

নিয়ার ফিল্ড কমিউনিকেশন বা কম দূরত্বের যোগাযোগের জন্য এমআরটি পাস ব্যবহার করা হয়। এটি একটি অত্যাধুনিক প্রযুক্তিভিত্তিক সংযোগবিহীন স্মার্ট আইডি কার্ড।এই কার্ড দিয়ে খুবই সহজে মেট্রোরেলের ভাড়া পরিশোধ করা যায়। এই কার্ড দিয়ে ভবিষ্যতে বাস, লঞ্চ, মেট্রোরেলের পরিচালিত শপিংমল ইত্যাদির বিল এবং ভাড়া পরিশোধ করা যাবে।

এমআরটি পাস ব্যবহারের নিয়ম: এক যাত্রার ক্ষেত্রে ভাড়ার তালিকা অনুযায়ী প্রতিবার একক যাত্রার টিকিট (এসজেটি) কিনে ভ্রমণ করতে হয়। তবে এমআরটি পাসের ক্ষেত্রে এন্ট্রি বা এক্সিট গেটে পাস স্পর্শ করে ভ্রমণ করা যাবে। এতে আপনাকে লাইন ধরার ঝামেলায় পড়তে হবে না।

রিচার্জ করবেন যেভাবে: এমআরটি পাসে প্রথমবার করা রিচার্জের টাকা শেষ হয়ে এলে যে কোনো স্টেশন থেকে টিকেট কেনার মেশিন (টিভিএম), টিকেট অফিস (টিওএম) এবং অতিরিক্ত ভাড়া আদায় অফিস (ইএফও) থেকে এমআরটি পাস সহজেই রিচার্জ করে নিতে পারবেন।

হারানো কার্ড ফেরত পেতে কী করবেন: হারিয়ে যাওয়া এমআরটি পাস পুনঃইস্যুর জন্য পুনরায় নিরাপত্তা জামানত ২০০ টাকা এবং প্রসেসিং ফি বাবদ ২০০ টাকা মোট ৪০০ টাকা জমা দিতে হবে। পুনঃইস্যুর পর হারিয়ে যাওয়া পাসটি খুঁজে পাওয়া গেলে এবং ব্যবহারযোগ্য হলে ৫০ টাকা সার্ভিস চার্জ প্রদান করে নিরাপত্তা জামানত ফেরত পাওয়া যাবে।

এমআরটি পাস ফেরত দিতে চাইলে: এমআরটি পাস ফেরত দিতে চাইলে ৫০ টাকা সার্ভিস চার্জ কেটে নিরাপত্তা জামানত ও অব্যবহৃত স্থিতি ফেরত দেওয়া হবে।

মেট্রোরেল ভ্রমণের জন্য অনেকেই এরইমধ্যে এমআরটি পাস ব্যবহার করছেন। তবে কার্ডটি যত্নে রাখতে বলছেন সংশ্লিষ্টরা। ওয়ালেটে বা মানিব্যাগে না রেখে সাবধানে রাখার কথা বলা হচ্ছে। কারণ, কার্ডটি নষ্ট হলে বা হারিয়ে গেলে পুনরায় ইস্যুর জন্য আপনাকে টাকা দিতে হবে।

এমআরটি পাসের সুবিধা: এমআরটি পাস ব্যবহার করে মেট্রোরেলে ভ্রমণ করলে যাত্রীরা ভাড়ার ওপর ১০% ছাড় পাবেন।

এমআরটি পাস ব্যবহারে সমস্যা হলে: মেট্রোরেলের এন্ট্রি বা এক্সিট গেটে এমআরটি পাস যথাযথভাবে স্পর্শ করা না হলে পরবর্তী সময়ে এন্ট্রি বা এক্সিটের সময় সমস্যা হবে। এ ক্ষেত্রে ইএফওতে যোগাযোগ করে পাসটি কার্যকর করে নিতে হবে।

এমআরটি পাস ব্লক হলে: এমআরটি পাস ব্যবহারে কোনো অনিয়ম করা হলে পাসটি ব্লক হয়ে যাবে। এক্ষেত্রে পাসটি কার্যকর করার জন্য নির্ধারিত ফরম পূরণ করে ইএফওতে আবেদন দাখিল করতে হবে।

প্রতিদিন সকাল ৭টা ১০ মিনিট থেকে রাত ৮টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত উত্তরা-মতিঝিল রুটে চলাচল করবে এই মেট্রোরেল। তবে স্টেশন থেকে একক যাত্রার টিকিট কেটে যারা যাতায়াত করবেন তারা সকাল সাড়ে ৭টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চলাচল করতে পারবেন। এর বাইরে অতিরিক্ত সময়ে চলতে হলে থাকতে হবে এমআরটি বা র‍্যাপিড পাস। সব কটি স্টেশনেই থামবে ট্রেন।

                                                                                                             র‍্যাপিড পাস

র‌্যাপিড পাস কার্ড: র‌্যাপিড পাস কার্ডের মাধ্যমে পরিবহনে নির্ধারিত ভাড়া দেয়া যাবে। র‌্যাপিড পাস মূলত ক্রেডিট কিংবা ডেবিট কার্ডের মতো। যাত্রী বাসে ওঠার সময় কার্ডটি বাসে রাখা মেশিনে পাঞ্চ করলে সবুজ বাতি জ্বলে উঠবে। আবার যাত্রী যখন কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে নামবেন তখন আবার কার্ড পাঞ্চ করলে নির্ধারিত গন্তব্য অনুযায়ী কার্ড থেকে ভাড়া কেটে নেয়া হবে। সেই কার্ড আবার রিচার্জ করা যাবে। বিআরটিসি এসি ও ঢাকা চাকা বাসের পরে পর্যায়ক্রমে এই কার্ড বেসরকারি গণপরিবহনে ব্যবহার বিষয়ে কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

র‌্যাপিড পাস কার্ড পেতে যা করতে হবে: কার্ড ব্যবহারকারীকে প্রথমে নিবন্ধন ফরম জমা দিয়ে কার্ড সংগ্রহ করতে হবে। প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে দুই কার্যদিবস সময় লাগবে। ৪০০ মূল্যে কার্ডটি ক্রয় করা যাবে। প্রাথমিকভাবে রিচার্জের টাকা শেষ হয়ে গেলে ডাচ বাংলা ব্যাংকের ৮টি শাখা থেকে র‌্যাপিড পাস কার্ড ক্রয় এবং রিচার্জ করা যাবে। রিচার্জ করার শাখাগুলো হলো- মতিঝিল লোকাল অফিস শাখা, মতিঝিল বৈদেশিক বিনিময় শাখা, এলিফ্যান্ট রোড শাখা, উত্তরা শাখা, বনানী শাখা, গুলশান সার্কেল-১ শাখা, গুলশান শাখা ও সোনারগাঁ জনপথ শাখা। এছাড়া নতুন বাজার, গুলশান-২, শ্যুটিং ক্লাব ও বনানী টিকেট কাউন্টার থেকে ঢাকা চাকার র‌্যাপিড পাস কার্ড ক্রয় ও রিচার্জ করা যাবে। অন্যদিকে বিআরটিসির এসি বাসের জন্য হাউজ বিল্ডিং, বনানী, শাহাবাগ ও মতিঝিলে পাওয়া যাবে।

ক্ষতিগ্রস্ত কার্ড পুনঃপ্রদান: ব্যবহারকারী ক্ষতিগ্রস্ত কার্ড অপারেটরকে ফেরত দিয়ে পুনঃপ্রদান ফি বাবদ ২০০ টাকা প্রদান সাপেক্ষে নতুন কার্ড নিতে পারবেন। সেক্ষেত্রে অপারেটর নতুন প্রদানকৃত কার্ডের পূর্বের ব্যালেন্স স্থানান্তর করে দিবেন।

হারানো কার্ড পুনঃপ্রদান: ব্যবহারকারী নতুন কার্ডের জন্য ২০০ টাকা জমা ফি এবং ২০০ টাকা পুনঃপ্রদান ফি প্রদান করবেন। অপারেটর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করে নতুন প্রদানকৃত কার্ডের পূর্বের ব্যালেন্স স্থানান্তর করে দিবেন।

হারানো কার্ড ফেরত: ব্যবহারকারী হারানো কার্ড ফেরত পেলে অপারেটরকে জমামূল্য ফেরত প্রদানের জন্য দিবেন। অপারেটর সত্যতা যাচাই সাপেক্ষে কার্ড নিষ্ক্রিয় করে রিফান্ড ফি বাবদ ১০ টাকা কেটে নিয়ে কার্ডের মূল্য ফেরত দিবেন।

কার্ড রিচার্জ করতে ভুলে গেলে: কেউ যদি কার্ড রিচার্জ করতে ভুলে গেলেন কিন্তু হাতে সময় নেই। তখন কার্ড টাচ করে যাতায়াত করতে পারবে। তখন যাতায়াত ভাড়া নেগেটিভ হিসেবে কার্ডে থাকবে। যখন কার্ড রিচার্জ করা হবে তখন টাকা কেটে নিবে। বাস ভাড়া ধার নেওয়া যাবে একবার রিচার্জ করার আগ পর্যন্ত।

রিফান্ড: যদি কোনো নিবন্ধিত ব্যবহারকারী কার্ড ফেরত দিতে চান, সেক্ষেত্রে অপারেটর সত্যতা যাচাই সাপেক্ষে ১০ টাকা কেটে নিয়ে কার্ডের মূল্য (জমা ও রিচার্জ) ফেরত দিবেন।

এমআরটি বা র‌্যাপিড পাস ছাড়া চড়া যাবে না যেসব ট্রেনে: সকাল ৭টা ১০ এবং সকাল ৭টা ২০ মিনিটে উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে দুটি ট্রেন মতিঝিলের উদ্দেশে ছেড়ে যাবে। এই দুটি ট্রেনে শুধু এমআরটি বা র‍্যাপিড পাসধারীরাই চড়তে পাবেন।

এছাড়া রাত ৮টা ১০, ৮টা ২০, রাত ৮টা ৩০ এবং রাত ৮টা ৪০ মিনিটে মতিঝিল থেকে ৪টি মেট্রো ট্রেন উত্তরা উত্তর স্টেশনের উদ্দেশে যাত্রা করবে। প্রতিটি স্টেশনে ট্রেনগুলো থামবে। এই ৪টি মেট্রো ট্রেনে শুধু এমআরটি বা র‍্যাপিড পাস এবং ভ্রমণের দিন রাত ৭টা ৪৫ মিনিটের আগে কেনা একক যাত্রার টিকিটধারী যাত্রীরা ভ্রমণ করতে পারবেন।