সোমবার, ২১ আগস্ট ২০২৩ , ০৯:৪০ পিএম
Failed to load the video
শরীরে ১৮শ’ স্প্লিন্টারের তীব্র যন্ত্রণা নিয়ে দিন কাটাচ্ছেন ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় আহত ঢাকা জেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক নেত্রী মাহবুবা পারভীন। প্রধানমন্ত্রীর সহায়তায় জীবনে কিছুটা পরিবর্তন আসলেও সম্পূর্ণ সুস্থ হতে প্রয়োজন উন্নত চিকিৎসার। সুস্থ হয়ে নিজেকে আবারও রাজনীতিতে সম্পৃক্ত করার দৃঢ় প্রত্যয় তার। এদিকে ভালো নেই একই ঘটনায় নিহত পটুয়াখালীর মামুন মৃধার পরিবার। গ্রেনেড হামলা-মামলার রায় এখনও কার্যকর না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নিহতের পরিবার।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে বিকেল ৫টায় চলছিল আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশ। ট্রাকের ওপর অস্থায়ী মঞ্চে বক্তব্য রাখছিলেন তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অন্যান্য নেতাকর্মীর সঙ্গে সভায় অংশ নিয়েছিলেন ঢাকা জেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সে সময়কার নেত্রী মাহবুবা পারভীন।
সমাবেশ শেষ হওয়ার কিছু সময় আগে হঠাৎ বিকট শব্দে কেপে ওঠে চারপাশ। একের পর এক গ্রেনেড বিস্ফোরণ। রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন মাহবুবা। সেদিনের ভয়বহতা এখনও তাড়িয়ে বেড়ায় মাহবুবাকে। মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে বেঁচে ফিরলেও শরীরে ১৮শ’ স্প্লিন্টারের তীব্র যন্ত্রণা বয়ে বেড়াচ্ছেন তিনি। ইতোমধ্যে অপারেশন করিয়ে ৩টি স্প্লিন্টার বের করা হয়েছে।
মাহবুবা পারভীন বলেন, আমার শরীরে ১৮শ’ স্প্লিন্টার ছিল, তিনটি বের করা হয়েছে। এখনও মাঝে-মধ্যে স্প্লিন্টারে খোঁচায় তীব্র যন্ত্রণা অনুভব করি। আমার বাঁ-হাত ও বাম পা এখনও স্বাভাবিক হয়নি। হাত দিয়ে পানির গ্লাসটাও ওঠাতে পারি না।
দলীয় নেতাকর্মীরা খবর না নিলেও প্রধানমন্ত্রীর সহায়তায় বর্তমানে মাহবুবা কিছুটা ভালো আছেন। পুরোপুরি সুস্থ হয়ে আবারও রাজনীতিতে ফেরার স্বপ্ন তার।
মাহবুবা বলেন, আমার নেত্রী চিকিৎসার জন্য প্রতি মাসে টাকা পাঠিয়ে দেন। দুইবার দশ লাখ করে অনুদানও দিয়েছেন। ২০০৪ সাল থেকে আজ পর্যন্ত সাভারের দলীয় কোনো নেতা আমার খোঁজখবর নেননি।
এদিকে ইতিহাসের ঘৃণ্যতম এই হামলায় প্রাণ হারানোর তালিকায় রয়েছেন কলেজ পড়ুয়া ছাত্র পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার আলীপুর গ্রামের মামুন মৃধা। ২০০৪ সালের ২১ আগস্টের সেদিনের জনসভায় যোগ দেন তিনিও। কিন্তু কে জানতো ঘাতকের গ্রেনেড কেড়ে নেবে তার প্রাণ, সঙ্গে চুরমার করে দেবে মামুনকে ঘিরে মামুনের পরিবারের সব স্বপ্ন। বর্তমানে ভালো নেই তার পরিবার।
ছেলের শোকে মানসিক আর শারীরিকভাবে ভেঙে পড়েছেন মা মোর্শেদা বেগম ও বাবা আব্দুল মোতালেব মৃধা। হারিয়ে গেছে কর্মক্ষমতা। অর্থকষ্টও যোগ হয়েছে এরসঙ্গে। এখন তাদের একটাই চাওয়া মৃত্যুর আগে ছেলে হত্যার বিচারের রায়ের বাস্তবায়ন।
মামুনের বাবা বলেন, আমাদের দুইজনের বয়স হয়েছে। শরীরে বিভিন্ন রোগ বাসা বেঁধেছে। অসুস্থতার কারণে তেমন কাজকর্ম করতে পারি না। সংসার অভাব অনটনের মধ্য দিয়ে চলছে। আমাদের একটাই চাওয়া ছেলে হত্যার বিচারের রায় বাস্তবায়ন।
মামুনের মা মোর্শেদা বেগম বলেন, মামুন মারা গেছে ২০ বছর হলো। এখনও কোনো বিচার পাইনি আমরা। ছেলে হত্যার বিচারের রায় হলেও বাস্তবায়ন হয়নি। আমার চাওয়া মরার আগে যেন এর বিচার দেখে যেতে পারি।
দোষীদের মৃত্যুদণ্ড দ্রুত কার্যকর হোক এমন দাবি ২১ আগস্টের ঘটনায় হতাহতদের পরিবারের।