images

খেলা / ক্রিকেট

আইসিসির হল অব ফেমে জায়গা পেলেন ৭ কিংবদন্তি ক্রিকেটার

মঙ্গলবার, ১০ জুন ২০২৫ , ১২:২৭ পিএম

images

টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালের আগে ৭ ক্রিকেটার আইসিসির বিশেষ সম্মাননা পেলেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) তাদের সম্মানজনক ‘হল অব ফেম’-এ নতুন করে সাতজন কিংবদন্তিকে যুক্ত করেছে। সোমবার (৯ জুন) লন্ডনের ঐতিহাসিক অ্যাবি রোড স্টুডিওতে এক জমকালো আয়োজনে এ ঘোষণা দেন আইসিসির চেয়ারম্যান জয় শাহ।

আইসিসির চেয়ারম্যান বলেন, হল অব ফেমের মাধ্যমে আমরা তাদের শ্রদ্ধা জানাই, যারা নিজের পারফরম্যান্স দিয়ে খেলাটিকে সমৃদ্ধ করেছেন এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করেছেন। এবারে আমরা সাতজন অসাধারণ ক্রিকেটারকে এই মর্যাদাসূচক তালিকায় যুক্ত করতে পেরে গর্বিত। তাদের প্রতি আন্তরিক শুভেচ্ছা।

এই তালিকায় জায়গা পাওয়া সাতজন ক্রিকেটারই নিজ নিজ সময়ের সেরা পারফর্মার হিসেবে পরিচিত। আইসিসি আশা করছে, তাদের এই স্বীকৃতি কেবল অতীতের সাফল্যের সম্মানই নয়, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণাও হবে। 

আইসিসির হল অব ফেমে স্থান পাওয়া নতুন ৭ কিংবদন্তি : 
নিচে আইসিসি হল অব ফেমে অন্তর্ভুক্ত হওয়া চার কিংবদন্তির তথ্য আরও গুছিয়ে ও পরিমার্জিতভাবে উপস্থাপন করা হলো:

১. ম্যাথু হেইডেন (অস্ট্রেলিয়া):  
অস্ট্রেলিয়ার ভয়ডরহীন ওপেনারদের একজন হিসেবে স্মরণীয় হেইডেন ছিলেন প্রতিপক্ষ বোলারদের জন্য আতঙ্ক।  
টেস্ট: ১০৩ ম্যাচ, ৮,৬২৫ রান, গড় ৫০.৭৩, সেঞ্চুরি ৩০  
ওয়ানডে: ১৬১ ম্যাচ, ৬,১৩৩ রান, গড় ৪৩.৮০  
টি–টোয়েন্টি: ৯ ম্যাচ, ৩০৮ রান, গড় ৫১.৩৩  
২০০৭ বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক এবং ২০০৩ ও ২০০৭ বিশ্বকাপ জয়ী দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য।  তিনি বলেন, হল অব ফেমে যাদের পাশে আমার নাম উঠেছে, তারা অনেকেই আমার আদর্শ ছিলেন। এটা বিশাল সম্মানের ব্যাপার।

২. হাশিম আমলা (দক্ষিণ আফ্রিকা):  
প্রশান্ত স্বভাব ও শুদ্ধ টেকনিকের জন্য পরিচিত আমলা ছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিং স্তম্ভ।  
টেস্ট: ১২৪ ম্যাচ, ৯,২৮২ রান, গড় ৪৬.৬৪  
ওয়ানডে: ১৮১ ম্যাচ, ৮,১১৩ রান, গড় ৪৯.৪৬  
টি–টোয়েন্টি: ৪৪ ম্যাচ, ১,২৭৭ রান, গড় ৩৩.৬০  
২০১২ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৩১১* রানের ইনিংস খেলে দেশের প্রথম ট্রিপল সেঞ্চুরিয়ান হন।  
আমলা বলেন, গ্রায়েম স্মিথের সঙ্গে এই সম্মান ভাগ করে নেওয়া আমার জন্য অনেক বড় পাওয়া।

৩. এমএস ধোনি (ভারত):  
ভারতের সফলতম অধিনায়ক, যিনি দলকে এনে দিয়েছেন আইসিসির তিনটি প্রধান ট্রফি—  
২০০৭ টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ  
২০১১ ওয়ানডে বিশ্বকাপ  
২০১৩ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি  
ব্যাট হাতে ‘ফিনিশার’ হিসেবে তার হেলিকপ্টার শট সবার মনে জায়গা করে নিয়েছে। ধোনি বলেন, এই স্বীকৃতি আমার ক্রিকেট জীবনের অন্যতম শ্রেষ্ঠ মুহূর্ত।

৪. গ্রায়েম স্মিথ (দক্ষিণ আফ্রিকা):  
মাত্র ২২ বছর বয়সে অধিনায়কত্ব নিয়ে ১০০ টেস্টে নেতৃত্ব দিয়েছেন, ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথম।  
টেস্ট ক্যারিয়ার: ১১৭ ম্যাচ, ৯,২৬৫ রান, গড় ৪৮.২৫  
অধিনায়ক ও ব্যাটার হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেট ইতিহাসে স্মিথের অবদান অবিস্মরণীয়।  
তিনি বলেন, এই সম্মান শুধু আমার নয়, দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেটের জন্যও।

৫. ড্যানিয়েল ভেটোরি (নিউজিল্যান্ড):  
নিউজিল্যান্ডের বাঁহাতি স্পিনার ভেটোরি ছিলেন একজন আদর্শ অলরাউন্ডার।  
টেস্ট: ১১৩ ম্যাচ, ৪,৫৩১ রান ও ৩৬২ উইকেট  
ওয়ানডে: ২৯৫ ম্যাচ, ২,২৫৩ রান ও ৩০৫ উইকেট  
টি–টোয়েন্টি: ৩৪ ম্যাচ, ২০৫ রান ও ৩৮ উইকেট  
মাত্র তিনজন ক্রিকেটার টেস্টে ৪০০০+ রান ও ৩০০+ উইকেটের মালিক; তাদের একজন তিনি।  
বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ার সহকারী কোচ ভেটোরি বলেন, এই স্বীকৃতি আমাকে সত্যিই সম্মানিত করেছে। এই কাতারে আসা এক বিশাল অর্জন।

৬. সানা মির (পাকিস্তান):  
আইসিসি হল অব ফেমে অন্তর্ভুক্ত হওয়া প্রথম পাকিস্তানি নারী ক্রিকেটার।  
ওয়ানডে: ১২০ ম্যাচ, ১,৬৩০ রান ও ১৫১ উইকেট  
টি–টোয়েন্টি: ১০৬ ম্যাচ, ৮০২ রান ও ৮৯ উইকেট  
শুধু পারফরম্যান্সই নয়, নেতৃত্ব, সামাজিক সচেতনতা এবং নারী খেলোয়াড়দের এগিয়ে নিতে ভূমিকা রেখেছেন।  

সানা বলেন, ছোটবেলায় ভাবিনি পাকিস্তানে নারী ক্রিকেট দল থাকবে, আর আজ আমি হল অব ফেমে! এটি এক স্বপ্নপূরণ।

৭. সারা টেইলর (ইংল্যান্ড):  
বিশ্ব ক্রিকেটে অন্যতম সেরা উইকেটরক্ষক হিসেবে বিবেচিত, তার লেগ-সাইড স্ট্যাম্পিং ছিল দুর্দান্ত।  
- টেস্ট: ১০ ম্যাচ, ৩০০ রান, ২০ ডিসমিসাল  
- ওয়ানডে: ১২৬ ম্যাচ, ৪,০৫৬ রান, ১৩৮ ডিসমিসাল  
- টি–টোয়েন্টি: ৯০ ম্যাচ, ২,১৭৭ রান, ৭৪ ডিসমিসাল  
২০০৯ ও ২০১৭ বিশ্বকাপ জয়ী ইংল্যান্ড দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য।

আরও পড়ুন
bff

বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুর ম্যাচ ঘিরে বাফুফের নির্দেশনা

টেইলর বলেন, হল অব ফেমে নিজের নাম দেখে মনে হচ্ছে, আমি সত্যিই কিছু অর্জন করতে পেরেছি।

এই সাতজন কিংবদন্তিকে নিয়ে ২০২৫ সালের আইসিসি হল অব ফেম হয়ে উঠেছে আরও ঐতিহাসিক ও বৈচিত্র্যময়।

আরটিভি/এসকে/এআর