images

আবহাওয়া

আবহাওয়া নিয়ে ৫ দুঃসংবাদ

শনিবার, ২৪ মে ২০২৫ , ০৬:২৭ পিএম

images

বাংলাদেশের আবহাওয়া নিয়ে পাঁচটি দুঃসংবাদ এবং ঘূর্ণিঝড় নিয়ে একটি সুখবর দিয়েছেন বেসরকারি আবহাওয়াবিষয়ক ওয়েবসাইট আবহাওয়া ডটকমের প্রধান আবহাওয়াবিদ মোস্তফা কামাল পলাশ।

শনিবার (২৪ মে) বিকেলে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে এ তথ্য জানান তিনি। 

একমাত্র সুখবর দিয়ে মোস্তফা কামাল পলাশ লিখেছেন, বঙ্গোপসাগরে যে ঘূর্ণিঝড়টি সৃষ্টি হওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল পূর্বের পাঁচটি আপডেটে, সেই ঘূর্ণিঝড়টি (যদি হয় তবে নাম হবে মন্থা) সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা কিছুটা কমে গেছে। তবে, পুরোপুরি শেষ হয়ে যায়নি। ঘূর্ণিঝড়ট সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা কিছুটা কমে গেলেও লঘুচাপ অথবা নিম্নচাপ অথবা গভীর নিম্নচাপ সৃষ্টির সম্ভাবনা নির্দেশ করতেছে। এখানে উল্লেখ্য যে বর্ষাকালে মৌসুমি বায়ুপ্রবাহ শুরু হলে বঙ্গোপসাগরের ওপরে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হতে পারে না। মৌসুমি বায়ুপ্রবাহ শুরু হলে উ-লম্ব বায়ু-শিয়ারের মান অনেক বৃদ্ধিপায় যা ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির জন্য প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করে। এ কারণে বর্ষাকালে মৌসুমি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারলেও তা ঘূর্ণিঝডড়ে পরিণত হতে পারে না। ঠিক এই কারণে বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির ২টা মৌসুম রয়েছে। একটি হলো বর্ষাকাল শুরুর পূর্বে (১৫ মার্চের পর থেকে ৩১ মে পর্যন্ত) ও অন্যটি হলো বর্ষাকাল শেষের পরে (১৫ অক্টোবরের পর থেকে ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত)।

প্রথম দুঃসংবাদ

ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর আজকে ঘোষণা দিয়েছে, ২০২৫ সালের বর্ষাকালের মৌসুমি বায়ুপ্রবাহ আজ (শনিবার) ভারতের কেরালা রাজ্য পৌঁছে গেছে। সেইসঙ্গে ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, ২০০৯ সালের পরে সর্বপ্রথম এত তাড়াতাড়ি মৌসুমি বায়ুপ্রবাহ শুরু হলো। ঐতিহাসিকভাবে বর্ষাকালের উত্তর-পশ্চিমমুখী মৌসুমি বায়ুপ্রবাহ শুরু দিন অপেক্ষা ৮ দিন পূর্বে। ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে প্রাপ্ত বায়ুপ্রবাহের চিত্রে দেখা যাচ্ছে, মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলার উপকূলে পৌঁছে গেছে আজ (শনিবার)। অর্থাৎ, আজ বা আগামীকাল থেকে বাংলাদেশে বর্ষাকাল শুরু হতে যাচ্ছে। এখানে উল্লেখ্য যে, ঐতিহাসিকভাবে বর্ষাকালের উত্তর-পশ্চিমমুখী মৌসুমি বায়ুপ্রবাহ কক্সবাজার জেলায় পৌঁছে ৩১ মে বা ১ জুনে। অর্থাৎ ২০২৫ সালের মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের প্রবেশ করা শুরু করলো প্রায় ৮ দিন পূর্বে।
  
দ্বিতীয় দুঃসংবাদ
 
লঘুচাল/নিম্নচাপ/গভীর নিম্নচাপ সৃষ্টির যে সম্ভাবনা রয়েছে তা সর্বশেষ ৫টি আপডেটে ভারতের ওড়িশা রাজ্যের উপকূল দিয়ে স্থল ভাগে প্রবেশের সম্ভাবনা নির্দেশ করলেও আজকের পূর্বাভাস অনুসারে, সরাসরি বাংলাদেশের খুলনা ও বরিশাল বিভাগের ওপর দিয়ে স্থল ভাগে প্রবেশের। যেহেতু সরাসরি খুলনা ও বরিশাল বিভাগের ওপর দিয়ে স্থল ভাগে প্রবেশ করে উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হওয়ার সম্ভাবনা নির্দেশ করতেছে তাই প্রবল আশঙ্কা করা যাচ্ছে লঘুচাপ/নিম্নচাপ/গভীর নিম্নচাপে প্রভাবে বাংলাদেশের ওপরে বেশিভাগ বৃষ্টিপাত হবে। 

তৃতীয় দুঃসংবাদ

লঘুচাপ/নিম্নচাপ/গভীর নিম্নচাপের কারণে সৃষ্টি হওয়া গভীর সঞ্চরণশীল বৃষ্টিযুক্ত মেঘ ও উত্তর-পশ্চিমমুখী মৌসুমি বায়ুপ্রবাহের সরাসরি সংঘর্ষ ঘটবে বাংলাদেশের ওপরে লঘুচাপ সৃষ্টির একদম শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত। তাই বাংলাদেশের ওপরে ২৯, ৩০, ৩১ মে এবং ১ জুন ভারি থেকে খুবই ভারি বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা করা যাচ্ছে। সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা করা যাচ্ছ রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের জেলাগুলোর ওপরে।

চতুর্থ দুঃসংবাদ

আগামী ২৫, ২৬, ও ২৭ মে আবহাওয়া যে পরিমাণ ভালো হওয়ার সম্ভাবনা ছিল তার কমে গেছে। অর্থাৎ, পূর্বে আশা করা হয়েছিল এই ৩ দিন দেশব্যাপী অনেক কম বৃষ্টিপাত হবে ও আকাশ রৌদ্রোজ্জ্বল থাকবে তার সম্ভাবনা কমে গেছে। কারণ মৌসুমি বায়ু আজ বা আগামীকাল থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করা শুরু করবে।

পঞ্চম দুঃসংবাদ

যদি সম্ভব্য লঘুচাপ/নিম্নচাপ/গভীর নিম্নচাপটি সরাসরি বাংলাদেশের খুলনা ও বরিশাল বিভাগের ওপর দিয়ে স্থলভাগে প্রবেশ করে বাংলাদেশের মধ্যভাগের ওপর দিয়ে আসাম ও মেঘালয় রাজ্যের দিকে অগ্রসর হয়, তবে ভারতের আসাম ও সিকিম রাজ্যের ওপরে খুবই ভারি বৃষ্টির আশঙ্কা করা যাচ্ছে। আসাম ও সিকিম রাজ্যের ওপরে যে বৃষ্টিপাত হয় তার পুরোটাই তিস্তা নদীর ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। ফলে আশঙ্কা করা যাচ্ছে যে তিস্তা নদীর ওপরে অবস্থিত ভারতের গজল-ডোবা বাঁধের সকল গেট খুলা দেওয়া হবে। যার কারণে বাংলাদেশের তিস্তা নদীর ওপরে অবস্থিত ডালিয়া ব্রিজের গেটগুলো খুলে দিতে হবে। ফলে আশঙ্কা করা যাচ্ছে তিস্তা নদীর চর অঞ্চলগুলো বন্যার পানিতে প্লাবিত হবে।

আরটিভি/আরএ