বুধবার, ২৮ মে ২০২৫ , ০২:২৩ পিএম
উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়েছে। এটি আরও ঘনীভূত হতে পারে। এর ফলে টানা ৫ দিন বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদ মোস্তফা কামাল পলাশ।
বুধবার (২৮ মে) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্টে এ তথ্য জানান তিনি।
পোস্টে মোস্তফা কামাল লেখেন, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া মৌসুমি লঘুচাপের প্রভাবে বুধবার সকাল থেকেই বৃষ্টি শুরু হয়েছে বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের উপকূলীয় জেলাগুলোতে। ৩১ মে পর্যন্ত পরপর ৪ দিন চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহ, ঢাকা ও রংপুর বিভাগের বিভিন্ন জেলা এবং ভারতের ত্রিপুরা, মেঘালয় ও আসাম রাজ্যে বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। বিশেষ করে ২৯ ও ৩০ মে সারাদেশে বৃষ্টির আশঙ্কা করা যাচ্ছে।
সংবাদটি অনেক খারাপ ও আতংকের। তার পরেও বলতে হচ্ছে যে ২০২৪ সালের আগস্ট মাসে ফেনী ও কুমিল্লা জেলায় ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি করেছিল যে লঘুচাপটি সেটা ঠিক একই স্থানে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে মঙ্গলবার (২৭ মে)।
শুধু তাই নয়, ফেনী ও কুমিল্লা জেলায় ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি করা লঘুচাপটি যে পথের ওপর দিয়ে বাংলাদেশের স্থল ভাগে প্রবেশ করেছিল গতকাল সৃষ্টি হওয়া লঘুচাপটি ঠিক একই পথের ওপর দিয়ে অতিক্রমের আশঙ্কা করা হচ্ছে। অর্থাৎ, লঘুচাপটি বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের উপকূলের ওপর দিয়ে ধীরে-ধীরে স্থল ভাগের ওপরে প্রবেশ করে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য ও বাংলাদেশের সিলেট বিভাগের দিকে অগ্রসর হওয়ার আশঙ্কা করা যাচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) দুপুরের পর থেকে শুরু করে ৩১ মে মধ্যরাত পর্যন্ত পরপর ৪ দিন চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহ, ঢাকা ও রংপুর বিভাগের বিভিন্ন জেলা ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, খাগড়াছড়ি, উত্তর চট্টগ্রাম, ব্রাক্ষণবাড়িয়া, হবিগঞ্জ, মৌলভীজার, সুনামগঞ্জ, সিলেট, নেত্রকোনা, শেরপুর, কিশোরগঞ্জ, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট এবং ভারতের ত্রিপুরা, মেঘালয় ও আসাম রাজ্যের ওপরে প্রতিদিন ৫০ থেকে ৩০০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের প্রবল আশঙ্কা করা যাচ্ছে।
লঘুচাপটির প্রভাবে বুধবার (২৮ মে) থেকে শুরু করে রোববার (১ জুন) পর্যন্ত দেশব্যাপী সম্ভাব্য বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, বুধবার (২৮ মে) খুলনা ও বরিশাল বিভাগের উপকূলবর্তী সমুদ্রের ওপরে অবস্থান। দুপুরের পর থেকে খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের উপকূলীয় জেলাগুলোর ওপরে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টি শুরুর প্রবল আশঙ্কা করা যাচ্ছে। বিশেষ করে কক্সবাজার, বান্দরবন, চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, কুমিল্লা, ফেনী, নোয়াখালী, চাঁদপুর জেলার ওপরে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টির আশঙ্কা করা যাচ্ছে দুপুর ১২টার পর থেকে রাত ১২টার মধ্যে।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের উপকূলের ওপর দিয়ে স্থল ভাগে প্রবেশ করার আশঙ্কা করা যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার বরিশাল, চট্টগ্রাম, ঢাকা, সিলেট বিভাগের বিভিন্ন জেলা এবং ভারতের ত্রিপুরা, আসাম ও মেঘালয় রাজ্যের বিভিন্ন জেলার উপরে ভারি থেকে খুবই ভারি বৃষ্টির আশঙ্কা করা যাচ্ছে। ত্রিপুরা রাজ্যের ওপরে খুবই ভারি বৃষ্টির আশঙ্কা করা যাচ্ছে। ফেনী ও গোমতী নদীর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা করা যাচ্ছে।
কুমিল্লা, ফেনী, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি জেলায় ২০০ থেকে ৩০০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টির আশঙ্কা করা যাচ্ছে। সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জ, সিলেট এবং ময়মনসিংহ বিভাগের নেত্রকোনা ও শেরপুর জেলায় ১৫০ থেকে ২৫০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টির আশঙ্কা করা যাচ্ছে।
শুক্রবার (৩০ মে) সিলেট, ময়মনসিংহ, রংপুর, ঢাকা বিভাগের বিভিন্ন জেলা এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিকের কুচবিহার, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর ও মেঘালয় রাজ্যের বিভিন্ন জেলার ওপরে ভারি থেকে খুবই ভারি বৃষ্টির প্রবল আশঙ্কা করা যাচ্ছে। শুক্রবারে আসাম, ও সিকিম রাজ্যের পাহাড়ি এলাকায় ভারি থেকে খুবই ভারি বৃষ্টির আশঙ্কা করা যাচ্ছে।
কুমিল্লা, ফেনী, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি জেলায় ১০০ থেকে ২০০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টির আশঙ্কা করা যাচ্ছে। কুমিল্লার গোমতী এবং ফেনীর পশুর নদীর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা করা যাচ্ছে। সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার ওপরে ২০০ থেকে ৩০০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টির আশঙ্কা করা যাচ্ছে। রাজশাহী বিভাগের বিভিন্ন জেলায় ৫০ থেকে ১০০ পর্যন্ত বৃষ্টির আশঙ্কা করা যাচ্ছে।
রংপুর বিভাগের কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, লালমনিরহাট, নীলফামারী, পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও জেলায় ১০০ থেকে ২০০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টির আশঙ্কা করা যাচ্ছে।
শনিবার (৩১ মে) সিলেট, ময়মনসিংহ, রংপুর, রাজশাহী, খুলনা বিভাগের বিভিন্ন জেলা এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিকের কুচবিহার, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর ও মেঘালয় রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় ভারি থেকে খুবই ভারি বৃষ্টির প্রবল আশঙ্কা করা যাচ্ছে।
রংপুর বিভাগের কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, লালমনিরহাট, নীলফামারী, পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও জেলায় ৫০ থেকে ১৫০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টির আশঙ্কা করা যাচ্ছে।
রোববার (১ জুন) রংপুর বিভাগের কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, লালমনিরহাট, নীলফামারী, পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও জেলায় ৫০ থেকে ১৫০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টির আশঙ্কা করা যাচ্ছে।
আরটিভি/এমএ/এআর