সরকার ২৬ রমজান পর্যন্ত গরু, খাসি, মহিষের মাংসের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে। এ পর্যন্ত আমরা সরকার নির্ধারিত দামে বিক্রি করব। কিন্তু এরপর মাংসের দাম কত বাড়বে তা আমরা বলতে পারব না। জানালেন মাংস ব্যবসায়ী সমিতির মহাসচিব রবিউল আলম।
রোববার সকালে ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রবিউল আলম বলেন, গাবতলী গরুর হাটের অতিরিক্ত খাজনা আদায় ও চাঁদাবাজি বন্ধ হয়নি। তাই ইজারাদারদের নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে মাংসের দাম ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে।
তিনি বলেন, গরুর মাংসের ব্যবসা নিয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন মাংস ব্যবসায়ী সমিতির সঙ্গে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) ও ইজারাদারদের দ্বন্দ্ব চলছে দীর্ঘ দিন। ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন দেশবাসীকে যেন অল্প দামে মাংস খাওয়ানো যায়। তার জন্য সিটি করপোরেশন ইজারা নির্ধারণ করে দেয়া হয় ৫০ টাকা। তবে এটা কেউ মানছেন না। অতিরিক্ত চাঁদা আদায় করা হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, “১৫ মাস আন্দোলন করার পর সাড়া না পেয়ে মহাসচিবের পদ থেকে সরে যেতে বাধ্য হলাম। ৪০ বছর এ সংগঠনের দায়িত্ব পালন করেছি। এখন আর পারছি না। উত্তরের মেয়রের সাক্ষাৎ চেয়ে পাইনি। চাঁদাবাজরা তাকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে।”
তিনি আরো বলেন, “মাংস ব্যবসায়ী সমিতির অফিসে সন্ত্রাসীরা তালা দিয়েছে। আগামী ৭ দিনের মধ্যে তা না খুলে দিলে এ সমিতি বিলুপ্ত করা হবে।”
রবিউল জানান, চাঁদাবাজি বন্ধ হলে মাংসের দাম কমবে। প্রতি কেজি মাংস ৪শ টাকায় নিয়ে আসা যাবে। চাঁদাবাজি বন্ধে প্রায় ৬০০ আবেদন করেও কোনো সাড়া পাইনি। একটি আবেদনেরও তদন্ত করেনি কর্তৃপক্ষ। অনেক অসাধু ব্যবসায়ী সিটি কর্পোরেশেনের নির্ধারিত দাম থেকে অতিরিক্ত টাকা নিচ্ছে। আমাদের অফিস তালা লাগানো থাকায় তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছি না।
তিনি আরো বলেন, “দাম বেশি হওয়ায় সাধারণ মানুষ গরু ও খাসির মাংস খাওয়া ছেড়ে দিয়েছেন। এর ফলে মাংস বিক্রি শূন্যের কোটায় নেমে এসেছে। দেশে অর্ধেকের বেশি মাংসের দোকান বন্ধ হয়ে গেছে।
এর আগে ১৩ থেকে ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ছয় দিনের কর্মবিরতি পালন করেছিলেন মাংস ব্যবসায়ীরা।
গেলো ২৩ মে রাজধানী রমজানে প্রতি কেজি বিদেশি গরু ৪৪০ টাকা, দেশি গরু ৪৭৫, মহিষ ৪৪০ ও ভেড়া বা ছাগীর মাংস প্রতিকেজি ৬২০ টাকায় দাম নির্ধারণ করে দেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র সাঈদ খোকন।
কিন্তু মাংসের দোকানগুলোতে মানা হচ্ছে না সরকার নির্ধারিত দাম। উল্টো বাড়তি দামে মাংস বিক্রি করছেন তারা। প্রতি কেজি গরু ৪৮০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫২০ থেকে ৫৫০ টাকা, খাসি প্রতি কেজি ৭০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৭২০ থেকে ৭৫০ টাকায় বিক্রি করছেন তারা।
সিটি করপোরেশন থেকে মনিটরিং করার কথা বলা হয়েছে, তবে তা করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ করে ক্রেতারা বলেন, মাংস নিয়ে কারসাজি চলছে। মাংস ব্যবসায়ী সমিতি ও ইজারদারদের দ্বন্দ্বের জেরে আমাদের বাড়তি টাকা গুনতে হচ্ছে। এক দফায় মাংসের দাম বাড়ানো হয়েছে ৮০ টাকা। এভাবে চলতে থাকলে দেশের মানুষ মাংস খাওয়া ভুলে যাবে।
এমসি/এসএস