কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে বিচারককে যা বললেন মিল্টন সমাদ্দার

আরটিভি নিউজ

বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪ , ০৮:৫৪ পিএম


কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে বিচারককে যা বললেন মিল্টন সমাদ্দার
ছবি : সংগৃহীত

চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার আশ্রমের চেয়ারম্যান মিল্টন সমাদ্দার বলেছেন, ডাক্তার পরিচয়ে আমি কোনোদিন কাগজে স্বাক্ষর করিনি। আমাকে একটা সুযোগ দিন যাতে করে চিকিৎসক নিয়োগ দিয়ে আশ্রমটি ভালোভাবে চালাতে পারি।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (২ মে) শুনানি চলাকালে বিচারকের জেরার মুখে তিনি এ কথা বলেন।

ডেথ সার্টিফিকেটের বিষয়ে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেনের প্রশ্নের জবাবে মিল্টন জানান, যেহেতু তাদের নাম-ঠিকানা পাওয়া যায় না তাই মৃতদের কবরস্থ করার জন্য সার্টিফিকেট ইস্যু করা হয়। এর বাইরে অন্য কোনো উদ্দেশ্য নেই। কোনোটাতেই তার স্বাক্ষর নেই। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা স্বাক্ষর করে থাকেন।

বিজ্ঞাপন

সার্টিফিকেটে কী লেখা থাকে? -এ প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, কী কারণে লোকটি মারা গেছে সেটাই লেখা থাকে। মৃত্যুর এই কারণ কীভাবে পান এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, আমাদের একজন ডাক্তার আছেন। তিনি যখন তাদের দেখে যান কার কী সমস্যা সেটা উল্লেখ করা থাকে। সার্টিফিকেটও লেখা হয় তার কী কী রোগ ছিল সেটার ওপর ভিত্তি করে।

চিকিৎসার জন্য আশ্রমে কী কী ব্যবস্থা আছে বিচারক জানতে চাইলে মিল্টন জানান, চিকিৎসার জন্য আলাদা কোনো ব্যবস্থা নেই। 

মিল্টনের আইনজীবীর দাখিল করা ছবির বিষয়ে বিচারক বলেন, এই মানুষগুলোকে সেখানে (আশ্রম) নিয়ে গেলেই ভালো হয়ে যায় কি না। জবাবে তিনি বলেন, একজন ডাক্তার প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ করে থাকেন।

বিজ্ঞাপন

মিল্টন সমাদ্দার বলেন, এ পর্যন্ত আশ্রমে ১৩৫ জন মারা গেছেন। তাদেরকে কবরস্থ করার রশিদও আছে। মৃতদের কবরস্থ করার বিষয়ে একাধিক মন্ত্রণালয়ে ও প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও কোনো সহযোগিতা পাননি। এ বিষয়ে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা থাকলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ না করায় আশ্রমের নিজস্ব অর্থায়নে মৃতদের কবরস্থ করা হয়।

তিনি বলেন, ২৫৬ জন অসহায় বর্তমানে আশ্রমটিতে আছেন। তাদের সবাই বেওয়ারিশ, এর মধ্যে ৬ জন গর্ভবতী নারীও রয়েছে। তাদেরকে দেখভাল করার জন্য একজন ডাক্তার রয়েছেন। গর্ভবতীদের পাশের একটি বেসরকারি হাসপাতালে আশ্রমের নিজস্ব অর্থায়নে সিজার করানো হয়। আশ্রমটিতে বেওয়ারিশ ছাড়া অন্য কারও থাকার সুযোগও নেই।

আশ্রমের আয়-ব্যয়ের বিষয়ে মিল্টন জানান, অডিট ফার্ম ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে অডিট করা হয়। ২০১৭ সাল থেকে আয়-ব্যয়ের হিসাব সংরক্ষণ করা আছে।

তিনি জানান, আমি ২০১৪ সালে চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার আশ্রমের কার্যক্রম শুরু করি। ২০১৫ সালে সমাজসেবা অধিদপ্তরে লাইসেন্সের জন্য আবেদন করে ২০১৮ সালে আশ্রমের কার্যক্রম পরিচালনার লাইসেন্স পাই। এরপর আশ্রমটিকে কেন্দ্র করে মোট ২টি লাইসেন্স করি। এর মধ্যে একটি ফাউন্ডেশনের আরেকটি সমাজকল্যাণের লাইসেন্স। সমাজকল্যাণের লাইসেন্সে হতদরিদ্রদের আশ্রয়, সেবা দেওয়া ও চিকিৎসার বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত।

এদিন জাল মৃত্যু সনদ তৈরির অভিযোগে মামলায় চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার আশ্রমের চেয়ারম্যান মিল্টন সমাদ্দারের ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। জাল মৃত্যু সনদ তৈরি, আশ্রমের টর্চার সেলে মারধর ও মানবপাচারে অভিযোগে তার বিরুদ্ধে তিনিটি মামলা হয়েছে।

এর আগে, বুধবার (১ মে) রাতে রাজধানীর মিরপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে মিল্টন সমাদ্দারকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।

প্রসঙ্গত, মিল্টন সমাদ্দারের বিভিন্ন অপকর্ম নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাকে নিয়ে শুরু হয় সমালোচনার ঝড়। মুখ খুলতে থাকেন ভুক্তভোগীরাও। কয়েকটি গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সব অভিযোগ অস্বীকার করেন মিল্টন সমাদ্দার।
 

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন

Loading...


© All Rights Reserved 2016-2025 | RTV Online | It is illegal to use contents, pictures, and videos of this website without authority's permission