নায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা
রায় নিয়ে যা বললেন যাবজ্জীবন দণ্ড পাওয়া আজিজ মোহাম্মদ ভাই
২৫ বছর আগে নব্বই দশকের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরীকে বনানীতে ট্রাম্পস ক্লাবের নিচে গুলি করে হত্যা করা হয়। অবশেষে সেই মামলায় বৃহস্পতিবার (৯ মে) ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাইসহ তিনজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও বাকি ৬ আসামিকে বেকসুর খালাস দেন আদালত। তবে এই রায়ে ‘ন্যায়বিচার পাইনি’ বলে মন্তব্য আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের।
দেশের একটি গণমাধ্যমকে বৃহস্পতিবার (৯ মে) তিনি বলেন, সোহেল চৌধুরী হত্যাকাণ্ডের সময় আমি দেশেই ছিলাম না। অথচ আমাকে জড়ানো হয়েছে। তাই বলব, রায়ে ন্যায়বিচার পাইনি। কখনও সুযোগ পেলে দেশে ফিরে সত্য প্রতিষ্ঠায় লড়ব।
আজিজ মোহাম্মদ আরও বলেন, আপিলের সুযোগ থাকলে অবশ্যই করবো। কারণ, ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার সবার আছে।
এই মুহূর্তে কোথায় আছেন জানতে চাইলে ওই সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন,পৃথিবীতে থাকার মতো অনেক জায়গা রয়েছে। ধরে নেন, পৃথিবীর কোনো এক কোণায় বা প্রান্তে আছি। তবে আকাশে নেই, এতটুকু বলতে পারি। আরেকটা কথা, আমি থাইল্যান্ডেও নেই। যেখানেই আছি, ভালো আছি। আমার পরিবারের সবাইও ভালো আছে। সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন।
বৃহস্পতিবার (৯ মে) চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলার রায়ে ৯ আসামির মধ্যে তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৬ জনকে খালাস দেওয়া হয়।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়া আসামিরা হলেন, ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাই, ট্রাম্পস ক্লাবের মালিক আফাকুল ইসলাম ওরফে বান্টি ইসলাম ও আদনান সিদ্দিকী।
খালাসপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, তারেক সাঈদ মামুন, সেলিম খান, হারুন অর রশীদ ওরফে লেদার লিটন ওরফে বস লিটন, ফারুক আব্বাসী, ও আশীষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরী।
উল্লেখ্য, ১৯৯৮ সালের ১৭ ডিসেম্বর রাজধানীর বনানীতে ট্রাম্পস ক্লাবের নিচে সোহেল চৌধুরীকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় তার ভাই তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী গুলশান থানায় মামলা করেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, হত্যাকাণ্ডের কয়েক মাস আগে আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের সঙ্গে চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরীর কথা-কাটাকাটি হয়। এর প্রতিশোধ নিতে সোহেল চৌধুরীকে হত্যা করা হয়। ঘটনার রাতে সোহেল তার বন্ধুদের নিয়ে ট্রাম্পস ক্লাবে ঢোকার চেষ্টা করেন। কিন্তু তাকে ভেতরে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। রাত আড়াইটার দিকে আবারও তিনি ঢোকার চেষ্টা করেন। তখন সোহেলকে লক্ষ্য করে ইমন, মামুন, লিটন, ফারুক ও আদনান গুলি চালান।
মামলাটি তদন্ত শেষে ১৯৯৯ সালের ৩০ জুলাই গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার আবুল কাশেম ব্যাপারী ৯ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন। ২০০১ সালের ৩০ অক্টোবর ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। এর দুই বছর পর ২০০৩ সালে মামলাটির বিচার দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য ঢাকার ২ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়।
ওই বছরই আসামি আদনান সিদ্দিকী হাইকোর্টে রিট করেন। এর প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট ২০০৪ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে রুলসহ আদেশ দেন। পরে বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তীর তৎকালীন ডিভিশন বেঞ্চ শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ৫ আগস্ট রায় দেন। রায়ে রুলটি খারিজ করে দেওয়া হয় এবং হাইকোর্টের দেওয়া স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করা হয়। মামলায় ১০ জনের সাক্ষ্য শেষ হয়।
মন্তব্য করুন