‘মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধে বাংলাদেশে এখনই প্রভাব পড়বে না’

আরটিভি নিউজ

শনিবার, ১১ মে ২০২৪ , ০৮:০৭ পিএম


‘মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধে বাংলাদেশে এখনই প্রভাব পড়বে না’
ফাইল ছবি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৮ মে জাতীয় সংসদে বক্তব্য দেওয়ার সময় শঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতি সৃষ্টির যে আভাস দেখা যাচ্ছে, তা বিশ্বের পাশাপাশি বাংলাদেশের সামাজিক, রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও প্রভাব ফেলবে বলে ধারণা করা যায়। বিশ্ববাজারের অস্থিতিশীলতা, বাজার ব্যবস্থাপনায় অসামঞ্জস্যতা এবং বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার সূত্রে দেশের মূল্যস্ফীতি কিছুটা বাড়ার আশঙ্কা থাকে।

বিজ্ঞাপন

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা বলছেন, সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতির কারণে পণ্যের সাপ্লাই-চেন ক্ষতিগ্রস্ত হলে মূলত ইরান বা পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে রপ্তানি সংশ্লিষ্ট পরিবহন খরচ বাড়তে পারে। তবে বাংলাদেশে এখনই প্রভাব পড়ার শঙ্কা কম।

সাত মাসেরও বেশি সময় হলো ফিলিস্তিনে হামলা জারি রেখেছে ইসরায়েল। সাত মাসে গাজায় প্রায় ৩৫ হাজার লোক নিহত ও প্রায় ৬০ হাজার লোক আহত হয়েছে। অন্যদিকে ইসরায়েলের দাবি, এই সময়ে তাদের অন্তত এক হাজার ২০০ লোক নিহত হয়েছে। এই সংঘাতের উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছে আশপাশের দেশগুলোতেও।

বিজ্ঞাপন

এরইমধ্যে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যেও পাল্টাপাল্টি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়েছে। অন্যদিকে ইয়েমেনের ইরানপন্থি হুথি বিদ্রোহীরাও লোহিত সাগরে ইসরায়েলগামী জাহাজে হামলা চালাচ্ছে। তুরস্ক ইসরায়েলের সঙ্গে সব রকম বাণিজ্য বন্ধ ঘোষণা করেছে। এই উত্তেজনাকে ঘিরে ওঠানামা করছে জ্বালানি তেলের দাম। যুক্তরাষ্ট্র একদিকে ইসরায়েলকে সহিংসতা এড়ানোর আহ্বান জানাচ্ছে, আবার কোটি কোটি ডলারের অস্ত্রও সরবরাহ করছে। সহিংসতা দীর্ঘায়িত হলে বিশ্ব রাজনীতি ও অর্থনীতিতে এর সুদূরপ্রসারী প্রভাবের শঙ্কা রয়েছে বলে মনে করছেন রাজনীতিবিদ ও বিশ্লেষকরা।

কী হতে পারে জানতে চাইলে বিশ্লেষকরা বলেন, আরবে যুদ্ধাবস্থার কারণে বিশ্ব ক্ষতিগ্রস্ত হলে প্রধান আঘাত আসতে পারে আমাদের নির্ভরতার জায়গাগুলোতে। জ্বালানি তেলের দাম বাড়তে পারে, রেমিট্যান্স কমে যাবে। 

এ পরিস্থিতিতে শুরু থেকেই ফিলিস্তিনে এই সংঘাত ঠেকাতে বিশ্বনেতাদের আহ্বান জানিয়ে আসছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশে ও দেশের বাইরে সব প্ল্যাটফর্মে তিনি যুদ্ধ বন্ধ করে শান্তির ফিরিয়ে আনার কথা বার বার বলে যাচ্ছেন। 

বিজ্ঞাপন

মধ্যপ্রাচ্য সংকটের কারণে এখনই বাংলাদেশের বড় মাপে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কোনও কারণ নেই বলে মনে করছেন মাইগ্রেশন বিশেষজ্ঞ মেরিনা সুলতানা। তিনি বলেন, এখনও কর্মী ফেরানোর মতো পরিস্থিতি নেই। এসব ক্ষেত্রে রাতারাতি প্রভাব পড়ে না। শীর্ষ যে ১০টা দেশ থেকে আমাদের সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স আসে, তার মধ্যে ছয়টিই মধ্যপ্রাচ্যের— সৌদি আরব, আরব আমিরাত, কুয়েত, কাতার, ওমান ও বাহরাইন। আমাদের বাইরের ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে হবে। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সাজ্জাদ সিদ্দিকী সম্প্রতি করণীয় বিষয়ে গণমাধ্যমকে বলেন, সেক্যুলার বা অসাম্প্রদায়িক দেশ এবং শান্তির জন্য প্রচেষ্টারত আস্থাভাজন দেশ হিসেবে বাংলাদেশে আলাদা মর্যাদা তৈরি হয়েছে বিশ্বে। সেটা কাজে লাগানোর সময় এসেছে। শান্তিরক্ষা মিশনে অংশ নিয়ে, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় প্রতিবেশীদের সঙ্গে সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্ক রেখে বাংলাদেশ নিজের একটি শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করেছে। মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাত নিরসনে আমরা সরাসরি হয়তো ভূমিকা রাখার মতো অবস্থানে নেই। তবে যে বৃহৎ শক্তিগুলো যুদ্ধ থামাতে পারে তাদের প্রভাবিত করার কাজ চালিয়ে যেতে পারে সরকার।

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন

Loading...


© All Rights Reserved 2016-2025 | RTV Online | It is illegal to use contents, pictures, and videos of this website without authority's permission