ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদ প্রতিটি পরিবারের কাছে ক্ষমা চাইলেন আইজিপি
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদ হওয়া প্রত্যেকের পরিবারের কাছে দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চেয়েছেন নবনিযুক্ত পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম।
বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) পুলিশ সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে শহীদদের পরিবারের কাছে ক্ষমা চান তিনি।
আইজিপি বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা একটি নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি। আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে এ নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে কাজ করতে হবে। এ আন্দোলনে ছাত্র, শিশু-কিশোর, সাধারণ মানুষ শহীদ হয়েছেন। এ ছাড়া কর্তব্য পালন করতে গিয়ে অনেক পুলিশ সদস্যও প্রাণ দিয়েছেন। আমি তাদের সবার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। তাদের শোক সন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি জানাচ্ছি গভীর সমবেদনা। যারা আহত হয়েছেন তাদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি।
তিনি বলেন, আন্দোলনের সময় ফ্যাসিবাদী সরকারের স্বার্থ রক্ষায় তাদের নির্দেশে পুলিশের কতিপয় সদস্য বাড়াবাড়ি করেছেন এবং আইন ভঙ্গ করেছেন, এতে কোনো সন্দেহ নেই। তবে অনেক নিরপরাধ পুলিশ সদস্যও নিহত হয়েছেন। প্রতিটি হত্যাকাণ্ডই নিন্দনীয়। আমি পুলিশ বাহিনীর পক্ষ থেকে প্রতিটি শহীদ পরিবারের কাছে আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করছি এবং ক্ষমা প্রার্থনা করছি।
তিনি আরও বলেন, পুলিশের প্রধান দায়িত্ব সংবিধানে উদ্ধৃত মৌলিক অধিকার, অর্থাৎ বেঁচে থাকার অধিকার, সম্পত্তির অধিকার, সমাবেশের অধিকার ইত্যাদি রক্ষা করা। মাঠ পর্যায়ে আদালতের পক্ষে এ কাজটা পুলিশই করে থাকে। এ বাহিনীর সদস্যরা সব সময় সর্বোচ্চ আন্তরিকতা, নিষ্ঠা ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালনের চেষ্টা করে আসছেন। আমরা আমাদের ওপর অর্পিত আইনি দায়িত্ব পালনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আইজিপি বলেন, গত ৫ আগস্টের পর বাংলাদেশ পুলিশ এক বিশাল চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে। পুলিশের জীবন ও সম্পত্তির ক্ষতি হয়েছে। জনগণ ও সরকারের সহযোগিতায় আমরা পুলিশের কার্যক্রমের গতিশীলতা আনার চেষ্টা করছি। পুলিশ সদস্যদের মনোবল ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি।
তিনি বলেন, জনগণের সমর্থন ও সহযোগিতা ছাড়া পুলিশের একার পক্ষে বর্তমান পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ করা দুরূহ। অপরাধ দমন ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় আমি সবিনয়ে দেশের জনগণের আন্তরিক সহযোগিতা প্রত্যাশা করছি।
তিনি আরও বলেন, আমি বিশ্বাস করি পুলিশ সদস্যদের তাদের কার্যক্রমের মাধ্যমেই জনগণের বিশ্বাস ও আস্থা অর্জন করতে হবে। এ জন্য জনগণের সঙ্গে বিনয়ী আচরণ করতে হবে। পুলিশের কাছে আইনি সেবা নিতে আসা জনগণের সঙ্গে আন্তরিকতা ও নিষ্ঠা দিয়ে দায়িত্ব পালন করত হবে। অপরাধ সংঘটিত হলে পুলিশ কাজ করবে, তল্লাশি চালাবে।
বাহারুল আলম বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার পুলিশ সংস্কারে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। পুলিশ সংস্কারের সুপারিশ বাস্তবায়ন করলে এই বাহিনী প্রকৃত অর্থেই জনবান্ধব হয়ে উঠবে বলে বিশ্বাস করি।
প্রসঙ্গত, আইজিপি পদে বাহারুল আলমের নিয়োগের বিষয়ে গত ২০ নভেম্বর প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। পরদিন ২১ নভেম্বর সকালে তিনি আইজিপির দায়িত্ব নেন। দায়িত্ব নেওয়ার পর আজই প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন আইজিপি।
আরটিভি/এফএ
মন্তব্য করুন