সাবেক গভর্নর রউফসহ ২৫ ব্যাংক কর্মকর্তার লকার খুঁজে পায়নি দুদক

আরটিভি নিউজ

রোববার, ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ , ০৫:৪৫ পিএম


সাবেক গভর্নর রউফসহ ২৫ ব্যাংক কর্মকর্তার লকার খুঁজে পায়নি দুদক
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল শাখায় সুরক্ষিত সাবেক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারসহ সাবেক ও বর্তমান ২৫ কর্মকর্তার লকার বা সেফ ডিপোজিটের কিছুই পায়নি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। 

বিজ্ঞাপন

রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৪টায় লকারের রেজিস্টার খাতা তল্লাশি শেষে  এ তথ্য জানান দুদকের পরিচালক কাজী সায়েমুজ্জমান।

এর আগে, দুপুর সাড় ১২টার দিকে বাংলাদেশ ব্যাংকে পৌঁছায় দুদকের আট সদস্যের একটি দল। দুদকের পরিচালক কাজী সায়েমুজ্জমানের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্মকর্তাদের লকার খুলতে যান তারা।

বিজ্ঞাপন

বিষয়টি নিশ্চিত করে দুদক পরিচালক কাজী মোহাম্মদ সায়েমুজ্জামান বলেন, আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকের অভিযুক্ত সাবেক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারসহ ২৫ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংকে এসেছি। তবে ঢাকা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদি হাসানের উপস্থিতিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের লকারের রেজিস্টার পরীক্ষা করে তাদের লকার সুবিধা পাওয়া যায়নি। 

তিনি আরও বলেন, দুদকের কাছে অনেক অভিযোগ রয়েছে। সেসব অভিযোগের ভিত্তিতে ভবিষ্যতে আদালতের নির্দেশক্রমে অন্য কর্মকর্তাদেরও সুবিধা আছে কি না সেটি দেখা হবে। কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেলে বা প্রমাণ পাওয়া গেলে যত প্রভাবশালী হোক কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।
 
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, আদালতের নির্দেশনাক্রমে দুদকের কর্মকর্তারা বাংলাদেশ ব্যাংকের লকারের রেজিস্টার দেখেছিল। রেজিস্টার যাচাই-বাছাই করে এই ২৫ কর্মকর্তার কোনো লকার সুবিধা পাননি। এ কারণে কোনো লকার আজ খোলা হয়নি। ভবিষ্যতে আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী অন্য কোনো ব্যক্তির লকার খোলার আদেশ পাওয়া গেলে খুলে দেখা হবে।

প্রসঙ্গত, সাবেক ও বর্তমান ২৫ ব্যাংক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারাই। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাদের অনেকেই এখনো বাংলাদেশ ব্যাংকে কর্মরত। আবার অনেকে এখন চাকরিতে নেই। তবে এখন পর্যন্ত মোট ২৭২টি সেফ ডিপোজিট লকারের সন্ধান পাওয়া গেছে। 

বিজ্ঞাপন

এর মধ্যে, গত ২৬ জানুয়ারি দুদক কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর এস কে সুরের লকারে তল্লাশি করে প্রায় পাঁচ কোটি টাকার সম্পদের সন্ধান পায়। সেগুলো এখন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জিম্মায় রাখা হয়েছে। অভিযানের সময় দুদক কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের নামে আরও কিছু লকার খুঁজে পায়। এর মধ্যে যাদের নামে বর্তমানে দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত চলছে, তাদের নামেও লকার থাকতে পারে বলে সন্দেহ করা হয়। এ কারণে দুদক ওই সব লকারেও তল্লাশি চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। 

এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ২ ফেব্রুয়ারি দুদক থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরকে চিঠি দেওয়া হয়। কেউ যেন ওই সব লকার খুলতে না পারে, সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানান তারা। এরপর থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মতিঝিল শাখার লকার আর কাউকে খুলতে দেওয়া হচ্ছে না।
 
বাংলাদেশ ব্যাংকের নিরাপত্তা বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক ও বর্তমান মিলিয়ে ৩১৩ জন কর্মকর্তার নামে লকার সুবিধা আছে। এর মধ্যে বেশিরভাগ লকার রয়েছে নারী কর্মকর্তাদের। রয়েছে বিভিন্ন ব্যাংকের ভোল্টের চাবি ও ব্যক্তিগত ডকুমেন্টস। তবে এসব লকারেই দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থসম্পদ বা সেগুলোর নথিপত্র রক্ষিত থাকতে পারে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।

আরটিভি/কেএইচ

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন

Loading...


© All Rights Reserved 2016-2025 | RTV Online | It is illegal to use contents, pictures, and videos of this website without authority's permission