গুলি করে হত্যা
পাগলের বেশ ধারণ, মুখ খুলছেন না কনস্টেবল কাউসার
রাজধানীর গুলশান থানাধীন বারিধারা ডিপ্লোমেটিক জোন এলাকার ফিলিস্তিন দূতাবাসের নিরাপত্তাকর্মীদের ডিউটিবুথের সামনে ডিউটিরত কনস্টেবল মনিরুল ইসলামকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় কাউসার আলী নামে অপর এক পুলিশ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও মুখ খুলছেন না তিনি। পুলিশ বলছে, পাগলের বেশ ধরেছেন কনস্টেবল কাউসার। কোনো প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন না।
অন্যদিকে নিহতের বড় ভাই বাদী হয়ে ঘাতক কনস্টেবল কাউসার আলীকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
গুলশান থানার ওসি মাজহারুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, দায়ের করা হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কনস্টেবল কাউসারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে, ডিএমপির ডিপ্লোম্যাটিক সিকিউরিটি জোনের সহকারী পুলিশ কমিশার আরিফুল ইসলাম সরকার বলেন, কাউসার আলী মানসিকভাবে বিপর্যস্ত অবস্থায় ছিলেন। পাঁচ-ছয় দিন থেকে খুব চুপচাপ ছিলেন। অন্যান্য সহকর্মীদের সঙ্গেও কথা বলছিলেন না। তার ব্যাচমেটদের সঙ্গে কথা বলে এসব জেনেছি।
শনিবার (৮ জুন) একই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন জাপান দূতাবাসের এক গাড়িচালকও। তাকে ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। একই ঘটনায় আরেকজন পথচারী আহত হয়েছেন। তবে তার সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি। রাত পৌনে ২টার দিকে ঘাতক কনস্টেবলকে হেফাজতে নেয় গুলশান থানা পুলিশ।
দিবাগত ২টায় ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন।
তিনি বলেন, ঘটনাস্থলে আমাদের লোক ছিল, ঘটনা যিনি ঘটিয়েছেন তিনিও আমাদের লোক। আসলে ঘটনাটা কী কারণে ঘটেছে সেটা আমরা জানার চেষ্টা করছি।
রোববার (৯ জুন) বেলা ১১টার দিকে গুলশান বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) রিফাত রহমান শামীম বলেন, রাতেই ঘাতক কনস্টেবল কাউসারকে নিরস্ত্র করে হেফাজতে নেওয়া হয়। তাকে থানা হেফাজতে নিয়ে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়, কিন্তু চুপচাপ কনস্টেবল কাউসার।
ডিসি রিফাত বলেন, তিনি দীর্ঘদিন পুলিশে কর্মরত। পাগলের বেশ ধরেছেন তিনি। ঘটনা স্পর্শকাতর। ঘটনা গুরুতর। এই অপরাধের শাস্তি সম্পর্কে জানেন কনস্টেবল কাউসার। সংগত কারণে তিনি পাগলের বেশ ধরতে পারেন। মুখে কুলুপ এঁটেছেন, অধিকাংশ প্রশ্নের উত্তর তিনি দিচ্ছেন না।
একাধিক গুলি ছুড়ে কনস্টেবল মনিরুলকে হত্যা করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে কী মনে হয়? ঘাতক কাউসার মানসিকভাবে বিপর্যস্ত বা ভারসাম্যহীন? এমন প্রশ্নের উত্তরে ডিসি রিফাত বলেন, পাগল প্রমাণ করতে পারলে তিনি মামলায় সুবিধা পেতে পারেন। সেটা জেনে-বুঝেই হয়তো পাগলের বেশ ধরেছেন। আমরা আরও জিজ্ঞাসাবাদ করবো। তারপর বলা সম্ভব ঘটনার আসল মোটিভ।
এদিকে চাঞ্চল্যকর এ ঘটনায় এরই মধ্যে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে বারিধারা এলাকায়। ঘটনাস্থল ফিলিস্তিনি দূতাবাসের সামনে মোতায়েন রাখা হয়েছে ডিবি, সোয়াটসহ পুলিশের একাধিক দল।
মন্তব্য করুন