ঢাকা

প্রধানমন্ত্রী বরাবর বিসিএস নন-ক্যাডারদের মানবিক আবেদন

বৃহস্পতিবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০১৬ , ০৯:১২ পিএম


loading/img

প্রিয় প্রধানমন্ত্রী,

বিজ্ঞাপন

মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে অশেষ কৃতজ্ঞতা যে, আমরা আপনাকে এদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পেয়েছি। আপনার সুদক্ষ নেতৃত্বে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি আজ বিশ্বের বুকে সগৌরবে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে। একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, সর্বস্তরে দুর্নীতির মূলোৎপাটন, তথ্যপ্রযুক্তি খাতে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া, দেশের নানা ক্রান্তিকালে দৃঢ় নেতৃত্বের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান প্রভৃতি ইতিবাচক পদক্ষেপের মাধ্যমে জাতির জনকের স্বপের সোনার বাংলা গড়তে আপনার দৃঢ় সংকল্প ইতোমধ্যে সকল মহলে প্রশংসা কুড়িয়েছে। বাংলাদেশকে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত করতে আপনার এ প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা আমাদের জন্য অত্যন্ত গৌরবের ও অহংকারের।

হে দেশহিতব্রতী,

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় সম্মেলনে আপনার দুঃখীদরদী মনের বক্তব্য, “জনগণের দুঃখের কথা আমার কাছে পৌঁছে দাও” শুনে গত ৩ বছরের বেকারত্বের অভিশাপে জর্জরিত, আমরা ৩৫তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ, কিন্তু পদস্বল্পতার কারণে ক্যাডার পদে সুপারিশ না পাওয়া আপনার সন্তানতুল্য ৩,৩৫৯ জন বেকার অত্যন্ত আশান্বিত হয়েছিলাম। ভেবেছিলাম, কোনোভাবে একবার জননেত্রীর কাছে আমরা আমাদের কষ্টের কথা পৌঁছে দিতে পারলেই বুঝি এ বেকার জীবনের কষ্টময় দীর্ঘ রজনীর অবসান ঘটবে। কিন্তু, আপনার কাছে আমাদের কষ্টের কথা পৌঁছে দেওয়াও যে অনেক কঠিনতর হবে তা আমাদের জানা ছিল না।

হে প্রিয় নেত্রী,

বিগত ২ মাস ধরে আমরা তরুণেরা দেশের প্রতিটি জেলার জেলা প্রশাসক মহোদয় থেকে শুরু করে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিব মহোদয়দের আমাদের দুর্ভোগের কথা জানিয়েছি। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক থেকে শুরু করে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী ও নিজ নিজ এলাকার সংসদ সদস্যদের কাছে গিয়ে আপনার কাছে প্রেরণের জন্য আবেদনপত্র ও স্মারকলিপি জমা দিয়েছি। যার মূল বিষয়গুলো ছিল নিম্নরুপ:

বিজ্ঞাপন

১. নন-ক্যাডার পদে নিয়োগ (বিশেষ) বিধিমালা ২০১০ (সংশোধিত বিধিমালা ২০১৪) সংশোধন করে সরকারি ৯ম ও ১০ম গ্রেডের নন-ক্যাডার পদসমূহের শতভাগেই (বর্তমানে ৫০% নিয়োগ দেওয়া হয়) ৩৫তম বিসিএস উত্তীর্ণ নন-ক্যাডার পদ প্রত্যাশীদের নিয়োগ। উলেখ্য, ২০১৫ সালে এ বিধিমালা সংশোধনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হলেও তা আজও মন্ত্রীপরিষদ সভায় অনুমোদিত হয়নি।

২. মন্ত্রণালয়সমূহ থেকে পিএসসিতে শূন্য পদের অধিযাচনপত্র দ্রুত প্রেরণ। এক্ষেত্রে পিএসসি আগ্রহ প্রকাশ করলেও মন্ত্রণালয়সমূহের সাড়া কম।

৩. সরকারি নন-ক্যাডার পদসমূহে কোটা শিথিলকরণ (কোটার প্রার্থী পাওয়া না গেলে মেধা হতে পূরণ)।

আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস ছিল, উপরিউক্ত বিষয়সমূহ আপনার গোচরে এলেই আমাদের সমস্যার সমাধান হবে। কিন্তু, আমরা জানি না, আমাদের এ আবেদনসমূহ আপনার কাছে পৌঁছেছে কি না।

হে কল্যাণকারী,

প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে প্রায় ৭০ হাজার নন-ক্যাডার পদ খালি রয়েছে। অন্যদিকে, আমরা দেশের সর্বোচ্চ নিয়োগ পরীক্ষা বিসিএস-এ (যেখানে প্রায় আড়াই লক্ষ পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছিল) উত্তীর্ণ হয়েও বেকার থাকছি। অথচ, নন-ক্যাডার পদের নিয়োগ পরীক্ষায় যেখানে সাকূল্যে ৪০০ নম্বরের পরীক্ষায় পাশ করতে হয়, সেখানে বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের সর্বমোট ১,৩০০ নম্বরের পরীক্ষায় পাশ করতে হয়। তাই, পদস্বল্পতার কারণে ক্যাডার পদ না পেলেও নন-ক্যাডার পদের জন্য তো আমরা সকলেই বিবেচ্য হতে পারি। এতে সরকারি ক্যাডার ও নন-ক্যাডার উভয় পদেই বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ তরুণেরা দেশের সেবা করতে পারবে, ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনে সক্রিয়ভাবে অংশ নিতে পারবে।

হে মমতাময়ী,

বেকার সন্তানের একটি চাকুরির আশায় বাবা-মায়ের ব্যাকুলতা; তাদের মুখে হাসি ফুটাতে না পারার ব্যর্থতায় নির্ঘুম রাত্রি যাপন করা বেকারের বুকফাটা নিশ্চুপ কান্না কেউ শুনতে পায় না। তাই, আমরা আজ আপনার কৃপাপ্রার্থী।

পরিশেষে, আমাদের উপর্যুক্ত আবেদনসমূহ বিবেচনা করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশ বিনির্মাণে অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়ার আকুতি জানাচ্ছি।

নিবেদক-

৩৫তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ নন-ক্যাডার পদ প্রত্যাশী প্রার্থীবৃন্দ

ডিএইচ

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন

Loading...


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |