আমৃত্যু দণ্ডিত পলাতক যুদ্ধাপরাধী আব্দুল জব্বার মারা গেছেন
পিরোজপুর-৩ মঠবাড়িয়া আসনের জাতীয় পার্টি ও বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য জাতীয় পার্টির নেতা ৭১’র যুদ্ধাপরাধের দায়ে আমৃত্যু দণ্ডিত আসামী আব্দুল জব্বার ইঞ্জিনিয়ার (৯০) পলাতক অবস্থায় মারা গেছেন।
মঙ্গলবার (১৮ আগস্ট) ভোরে আমেরিকার ফ্লোরিডায় তার মেয়ের বাসায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। মৃত্যুর বিষয়টি তার পারিবারিক সূত্র স্থানীয় সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন। তিনি বেশ কয়েক বছর ধরে ক্যান্সারে আক্রান্ত অবস্থায় আমেরিকায় তার বড় মেয়ের বাসায় আত্মগোপনে ছিলেন।
১৯৭১ মুক্তিযুদ্ধের সময় আব্দুল জব্বার ইঞ্জিনিয়ার মঠবাড়িয়ায় পিস কমিটির চেয়ারম্যান হয়ে বিশাল এক রাজাকার বাহিনী গড়ে তোলেন। ৩৬ জন মুক্তিকামী মানুষের ওপর গণহত্যা, ৫৫৭টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ, ২০০ জনকে জোরপূর্বক ধর্মান্তরিত করাসহ ৫টি গুরুতর অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়। এছাড়াও তিনি সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম ঘোষিত ৫০ যুদ্ধাপরাধীর তালিকায় তার নাম রয়েছে। ২০১৪ সালের যুদ্ধাপরাধের মামলায় তিনি আমৃত্যু দণ্ডিত হন। এছাড়া ’৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তার নির্দেশে রাজাকার বাহিনীর কমান্ডার ইসকান্দার মৃধার নেতৃত্বে একদল রাজাকার বাহিনী দু’টি গণহত্যাসহ ৮ মেধাবী ছাত্র হত্যা, হিন্দু বাড়িতে লুটপাট, নারী নির্যাতন ও অগ্নি সংযোগ করে।
২০১১ সালের ৬ সেপ্টেম্বর মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত জ্ঞানেন্দ্র মিত্র (৬২) বাদী হয়ে মঠবাড়িয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল মাজিস্ট্রেট আদালতে আব্দুল জব্বার ইঞ্জিনিয়ার বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেছিলেন। মামলায় জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল জব্বার ইঞ্জিনিয়ারকে প্রধান আসামি করে সাত জনকে আসামি করা হয়। এছাড়া মামলায় আরও ৬০/৬৫ জনকে অজ্ঞাত নামা আসামী করা হয়। ওই বছর ২১ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা স্থানান্তরিত হয়। পরে তার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী পাঁচ ধরনের অভিযোগে ২০১৪ সালের ১ মে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন। ওই বছর ১২ মে জব্বারের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়।
এর আগে ২০১০ সালে তিনি গোপনে দেশ ছেড়ে পালিয়ে আমেরিকায় আত্মগোপন করেন। ২০১৫ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি এনায়েতুর রহীম এর নেতৃত্বাধীন গঠিত ট্রাইব্যুনাল-১ এর আদালতে পলাতক যুদ্ধাপরাধী আব্দুল জব্বারের আমৃত্যু কারাদন্ডাদেশ দেয়া হয়।
আরও পড়ুন: ‘বৃষ্টি হলে তো বটেই, সাগরে জোয়ার এলেও হাঁটু পানিতে ডুবে হাসপাতালটি’
এনএম/এসএস
মন্তব্য করুন