স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যা, আসামিদের স্বীকারোক্তি

টাঙ্গাইল (দক্ষিণ) প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

সোমবার, ০৬ জুন ২০২২ , ১১:০০ পিএম


স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যা, আসামিদের স্বীকারোক্তি
ছবি: আরটিভি নিউজ

টাঙ্গাইলের বাসাইলে শিশু তৃষা মনি (৯) কে দলবেঁধে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় আসামি তিনজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।

বিজ্ঞাপন

আসামিরা হলেন- বাসাইল উপজেলার ভাটপাড়া গ্রামের স্বপন মণ্ডলের ছেলে গোবিন্দ মণ্ডল (১৯), আনন্দ মণ্ডলের ছেলে চঞ্চল চন্দ্র মণ্ডল (১৭) ও লালিত সরকারের ছেলে বিজয় সরকার (১৬)। 

এরআগে গতকাল রোববার (৫ জুন) দিবাগত রাতে বাসাইল ও সখীপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) টাঙ্গাইল। সোমবার (৬ জুন) সন্ধ্যায় সিনিয়র জুডিশিয়াল বাসাইল ও ঘাটাইল আমলী আদালতের বিচারক মোছা রুমি খাতুন ১৬৪ ধারা জবানবন্দি রেকর্ড করেন।

বিজ্ঞাপন

এ বিষয়ে আদালতের পরিদর্শক তানভীর হাসান বলে, স্বীকারোক্তি জবানবন্দির পর গোবিন্দ মণ্ডলকে জেল হাজতে ও বাকি দুই আসামি চঞ্চল চন্দ্র মণ্ডল ও বিজয় সরকারকে আদালতের মাধ্যমে কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে প্রেরণ করা হয়েছে। মৃত তৃষা মণি উপজেলার ভাটপাড়া গ্রামের আবু ভূইয়ার মেয়ে। তৃষা বাসাইল পৌর এলাকার শহীদ ক্যাডেট স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী।

জানা গেছে, গত ২৬মে বিকেলে তৃষার মা সম্পা বেগম তার ছেলে শুভকে স্কুল থেকে আনতে বের হন। এর কিছুক্ষণ পর তিনি বাড়িতে ফিরে দেখেন তৃষা সিলিংফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আছে। পরে তৃষাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখান থেকে তাকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় স্থানান্তর করেন। পরে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ২৮ মে বিকেলে তার মৃত্যু হয়। ওই সময় অভিযোগ উঠে তৃষাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে হত্যার উদ্দেশ্যে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রাখা হয়।

এ ঘটনায় প্রাথমিক পর্যায়ে বাসাইল থানা পুলিশ একটি অপমৃত্যু মামলা হয়। এরপর ময়নাতদন্তের রিপোর্টে দলবেঁধে ধর্ষণের পর হত্যার আলামত পাওয়া যায়। এরপর গত ৪ জুন তৃষার বাবা আবু ভূইয়া বাদি হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধনী-২০০৩)  এর ৯(৩) ধারায় মামলা দায়ের করেন। পরে মামলাটি পিবিআই তদন্তের দায়িত্ব নেয়।

বিজ্ঞাপন

পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার সিরাজ আমিন জানান, তৃষা মণি বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পূজোয় নাচ-গান করত। তার নাচ দেখে বাড়ির আশপাশের গোবিন্দ মণ্ডল, চঞ্চল চন্দ্র মণ্ডল ও বিজয় সরকার আকৃষ্ট হয়। পরে তৃষাকে বিভিন্ন সময় নানা কায়দায় উত্যক্ত করতো। প্রায় দুই মাস আগে তৃষা তার মা সম্পা বেগমের কাছে বিষয়টি খুলে বলে। কিন্তু আসামিরা বখাটে ও প্রভাবশালী হওয়ায় শিশুটির মা সম্পা তাদের কিছু বলতে সাহস পায়নি। আসামিরা তৃষার মায়ের অবস্থান অনুসরণ করতো। আসামিরা জানতে পারেন তৃষাকে বাড়িতে একা রেখে তার মা ওইদিন ছেলে শুভর স্কুল ছুটির পর তাকে এগিয়ে আনতে যায়। এই সুযোগে অভিযুক্ত তিনজন ঘরে গিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে হত্যার উদ্দেশ্যে সিলিংফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখে। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে শিশুটির মৃত্যু হয়।

মৃত তৃষার মা সম্পা বেগম বলেন, আমার মেয়েকে যারা অমানবিকভাবে হত্যা করেছে, আমি তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হিসেবে ফাঁসি দাবি করছি। যাতে পরবর্তীতে আর কোনও মায়ের কোল এভাবে খালি না হয়। 

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন

Loading...


© All Rights Reserved 2016-2025 | RTV Online | It is illegal to use contents, pictures, and videos of this website without authority's permission