কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, পানিবন্দি ৮০ হাজার মানুষ

কুড়িগ্রাম (উত্তর) প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

বৃহস্পতিবার, ০৪ জুলাই ২০২৪ , ০২:৪৮ পিএম


কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, পানিবন্দি ৮০ হাজার মানুষ
ছবি: আরটিভি

কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) সকালে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি নুনখাওয়া, চিলমারী ও হাতিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর মধ্যে হাতিয়া পয়েন্টে ৬৯ সেন্টিমিটার, নুনখাওয়া পয়েন্টে ৬৩ ও চিলমারী পয়েন্টে ৬৩ সেন্টিমিটার বিপদসীমার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়া ধরলা নদীর পানি কুড়িগ্রাম পয়েন্টে বিপদসীমার ২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।  

বিজ্ঞাপন

ব্রহ্মপুত্র নদের পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ায় প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। বাড়ি ঘরে পানি উঠায় উঁচু জায়গায় স্থান নিচ্ছেন নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দারা। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে চরাঞ্চলের ৮০ হাজারের বেশী মানুষ। পানিতে ডুবে আছে এসব এলাকার ফসলি জমি।

কুড়িগ্রাম সদর, নাগেশ্বরী, ভূরুঙ্গামারী, উলিপুর, চিলমারী, রৌমারী, রাজিবপুর, ফুলবাড়ি এবং রাজারহাট উপজেলার বিভিন্ন জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, ২৫ থেকে ৩০টি ইউনিয়নের প্রায় ৮০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। 

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বন্যা পরিস্থিতির অবনতির ফলে গত তিনদিন ধরে ঘরের ভেতর মাচা ও চৌকি উঁচু করে আশ্রয় নিয়েছেন বানভাসি মানুষ। চৌকিতে রান্না-বান্না, চৌকিতেই রাত কাটছে তাদের। বাড়ির চারপাশে থৈথৈ পানিতে অসহায় দিন কাটছে নারী, শিশু ও প্রতিবন্ধীদের।

নাগেশ্বরী উপজেলার আমেনা বেগম জানান, তিনদিন থেকে তার বাড়িতে পানি উঠেছে। পানির স্রোতে তার ঘর ছিন্ন ভিন্ন হয়ে গেছে। তিনি এখন মানুষের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

উলিপুরের বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের বালাডোবা গ্রামের আসমত ও নুরবানু বলেন, ‘গত তিনদিন ধরে পানিবন্দি অবস্থায় আছি। ছেলে মেয়েকে উঁচু জায়গায় রেখে গরু-ছাগল পাহারা দিচ্ছি। এখনও কেউ খোঁজ খবর নিতে আসেনি।’ 

একই গ্রামের ফরিদা বলেন, ‘চারটে ভাত ফুটাচ্ছি। তরকারি নাই। লবন দিয়া খাইতে হইবো।’

যাত্রাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুল গফুর বলেন, ‘আমার ইউনিয়নে ১৫০০ মানুষের বাড়িঘর তলিয়ে গেছে। এ ছাড়াও ৮ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছে।’

বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার আব্দুল হামিদ শেখ বলেন, ‘আমার ওয়ার্ডে দেড়শ ঘরে পানি উঠেছে। এ ছাড়াও এই ইউনিয়নে প্রায় ৮শ’ পরিবার পানিবন্দি অবস্থায় আছে।’

ফকিরের চরে একটি আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় ৮০টি পরিবার আশ্রয় নিলেও তারা বিশুদ্ধ পানি ও ওয়াশরুমের সমস্যায় ভুগছেন।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান বলেন, ‘জেলার নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেলেও স্বল্প মেয়াদি বন্যা বিরাজ করবে।’ 

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরিফ বলেন, ‘বন্যা কবলিত কুড়িগ্রাম সদর, চিলমারী, উলিপুর ও নাগেশ্বরী, ভূরুঙ্গামারী, রৌমারী, রাজীবপুর, রাজারহাট উপজেলায় খোঁজখবর নেওয়ার পাশাপাশি ইতোমধ্যে দুর্গত এলাকায় ত্রাণ বিতরণ শুরু করা হয়েছে। বুধবার এক হাজার ২শ’ পরিবারকে ১০ কেজি করে চালসহ অন্যান্য সামগ্রি বিতরণ করা হয়।’ 

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন

Loading...


© All Rights Reserved 2016-2025 | RTV Online | It is illegal to use contents, pictures, and videos of this website without authority's permission