নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে ঘর দখল ঠেকাতে জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯ এ কল করে সহায়তা চেয়েছে এক প্রবাসী পরিবার। তবে সহায়তা না করে উল্টো ওই পরিবারের ৭ সদস্যকে গ্রেপ্তারের অভিযোগ উঠেছে কোম্পানীগঞ্জ থানার পুলিশের বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে উপজেলার চাপরাশিরহাট বাজারে এক রোস্তোরাঁয় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী প্রবাসী জাহাঙ্গীর আলম আজাদ এমন অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে প্রবাসী জাহাঙ্গীর আলম আজাদ অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে প্রবাসে থেকেছেন। তিনি একজন রেমিটেন্স যোদ্ধা হয়ে কষ্টার্জিত প্রবাসের অর্থ দিয়ে কোম্পানীগঞ্জের চরফকিরা ইউনিয়নে ১৩ শতক জায়গা খরিদ করেন। ওই জায়গার চতুর্দিকে সীমানা প্রাচীর করে ভেতরে সেমি পাকা ১টি ঘর ও ১টি টিন সেট ঘর তৈরি করে ভাড় দেন। ওই ঘরে দীর্ঘদিন থেকে সাতটি ভাড়াটিয়া পরিবার বসবাস করে আসছে। গত ২৬ জানুয়ারি ভাড়াটিয়াদের থেকে ভাড়া আদায় করতে গেলে ফ্যাসিবাদের আশ্রয়-প্রশ্রয়কারী ও ভূমিদখলকারী জাফর, রাকিবের নেতৃত্বে কয়েকজন সন্ত্রাসী তার হাত থেকে ভাড়ার টাকাগুলো ছিনিয়ে নিতে চেষ্টা করে। তিনি বাধা দিলে তাকে মারধর করে জোরপূর্বক আদায়কৃত ভাড়ার টাকা ছিনিয়ে নেয়। একপর্যায়ে উল্টো তার কাছে জায়গা পাবে বলে দাবি করে অতর্কিতভাবে তার ওপর ও তার ভাড়াটিয়াদের ওপর হামলা চালায়। খবর পেয়ে তার পরিবারের অন্য সদস্যরা গেলে তাদের ওপরও হামলা চালায়। ওই সময় তাদের ঘর দরজাসহ সব কিছু ভাঙচুর করে তছনছ করে দেয়। এতে তার ২৫ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয় বলে দাবি করেন ভুক্তভোগী প্রবাসী।
তিনি আরও বলেন, আমি নিরুপায় হয়ে জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯ এ কল করলে পুলিশ এবং সেনাবাহিনী এসে সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে আমাদেরকে উদ্ধার করে। পরে স্থানীয় ইউপি সদস্য আবুল কালাম মিথ্যাচার করে পুলিশকে ম্যানেজ করে আমাদের পরিবারের ৭ জন সদস্যকে নিরাপদে সেখান থেকে সরিয়ে নেওয়ার কথা বলে থানায় নিয়ে যায়। একপর্যায়ে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করে। উল্টো এখন আমার ঘরগুলো আবুল কালাম মেম্বারের ছত্রছায়ায় সন্ত্রাসী দিয়ে দখল করে আছে। এমতাবস্থায় কোম্পানীগঞ্জ থানা প্রসাশনের থেকে কোন প্রকার সন্তোষজনক সহযোগিতা না পেয়ে আমি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের সহযোগিতা কামনা করছি।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, প্রবাসী জাহাঙ্গীর আলম আজাদের স্ত্রী ফেরদাউস বেগম, বোন লুতফুন নাহার, ছোট ছেলে সামিউল আরাফাত, প্রতিবেশী মহিউদ্দিন মাসুম, মো. কামরুল ও সাইফুল ইসলাম প্রমুখ।
অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে চরফকিরা ইউনিয়নের ৫নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবুল কালাম বলেন, প্রবাসী আজাদ সংঘবদ্ধ হয়ে প্রতিপক্ষের লোকজনের ওপর হামলা চালায়। সেখানে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে তারা ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেয়। খবর পেয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাদের উদ্ধার করে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গাজী মুহাম্মদ ফৌজুল আজিম বলেন, ‘ঘটনার দিন আমি ছুটিতে ছিলাম। বিষয়টি জেনে আমাকে বলতে হবে।’
আরটিভি/এমকে/এআর