বিশ্ববাজারে চালের দাম নিম্নমুখী, দেশের বাজারে ঊর্ধ্বমুখী

আরটিভি নিউজ

রোববার, ০৬ জুলাই ২০২৫ , ০৪:৫২ পিএম


বিশ্ববাজারে চালের দাম নিম্নমুখী, দেশের বাজারে ঊর্ধ্বমুখী
সংগৃহীত ছবি

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা জানিয়েছে, চাহিদা কমায় বিশ্ববাজারে নিম্নমুখী চালের মতো খাদ্যশস্যের দর। জুনে আন্তর্জাতিক বাজারে বাসমতিসহ বিভিন্ন জাতের চালের চাহিদা কমেছে। এতে দানাদার এই খাদ্যশস্যের দাম কমেছে শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ। অথচ দেশের বাজারে চালের দাম ঊর্ধ্বমুখী। বাজারে চালের কোনো সরবরাহ সংকট নেই। বাড়েনি চাহিদাও। পরিবহন ব্যয় বা শ্রমিকের মজুরি বাড়ার তথ্যও নেই তাদের কাছে।

বিজ্ঞাপন

টিসিবির হিসাবে, গত জুন মাসে দেশের বাজারে কেজিতে ৭ থেকে ৮ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে চালের দাম। মিনিকেট বিক্রি হচ্ছে ৮২ থেকে ৮৫ টাকায়। ৫৬ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি মোটা চাল। 

এ বিষয়ে ক্যাবের সহসভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেন, অন্য সময় ধাপে ধাপে ১-২ টাকা করে চালের দাম বাড়লেও, এবার ভরা মৌসুমে হঠাৎ করে দাম বেড়ে গেছে। এই সময়টাতে কোনো বছর দাম বাড়ে না। ব্যবসায়ীরা ধানের দাম, শ্রমিক খরচসহ নানা অজুহাতে দাম বাড়াচ্ছেন।

বিজ্ঞাপন

ক্যাবের সহ-সভাপতি বলেন, সিন্ডিকেটের হাতে নিত্যপণ্যের বাজার জিম্মি। রাজনৈতিক পট পরিবর্তন হলেও ব্যবসায়ীদের মানসিকতা বদলায়নি। তারা খোলস পরিবর্তন করেছে মাত্র। বাজার সিন্ডিকেট একই রয়ে গেছে। গুটিকয়েক অসাধু ব্যবসায়ী বাজারকে অস্থির করে তুলছে।

তিনি আরও বলেন, অসাধু ব্যবসায়ীরা সবসময়ই পণ্যের দাম বাড়ানোর পাঁয়তারায় থাকে। সময়-সুযোগ পেলেই তারা দাম বাড়িয়ে দেয়। চালের দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে চালকল মালিক ও ব্যবসায়ী একে অপরকে দুষে থাকেন। তবে উভয়েই দাম বাড়ানোর প্রতিযোগিতায় থাকেন।
 
চালের দাম বাড়ার সত্যতা নিশ্চিত করে ব্যবসায়ী রাকিব বলেন, ঈদের পরে হঠাৎ করেই বেড়ে গেছে দাম। অথচ বাজারে সরবরাহ স্বাভাবিক রয়েছে। 

এ অবস্থায় ভোক্তাকে স্বস্তি দিতে সরকারি তদারকি বাড়ানোর পরামর্শ দিয়ে কৃষি অর্থনীতিবিদ ড. জাহাঙ্গীর আলম খান বলেন, কিছু অসাধু চালকল মালিক, বড় ব্যবসায়ী ও করপোরেট হাউজের মালিকদের কারসাজিতে অস্থির হয়েছে চালের বাজার। সরকার মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করলে বাজারে চালসহ অন্যান্য পণ্যের অবৈধ মজুত কমবে। দামও কমে আসবে।

বিজ্ঞাপন

পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকায় নিম্নমুখী ভুট্টা, জোয়ার ও বার্লির বাজার। মে মাসের তুলনায় জুনে দাম কমেছে, এক দশমিক পাঁচ শতাংশ। তবে কিছুটা বেড়েছে গমের দর। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বাড়তে পারে চিনির উৎপাদন। এতেই টানা ৪ মাসের ধারাবাহিকতায় জুনেও চিনির দাম কমেছে ৫ দশমিক ২ শতাংশ। ২০২১ সালের এপ্রিলের পর আন্তর্জাতিক বাজারে চিনির দাম সর্বনিম্ন পর্যায়ে রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

তবে এফএও জানায়, দুগ্ধজাত পণ্য, মাংস ও ভোজ্যতেলের বাড়তি দরের প্রভাবে মে মাসের তুলনায় জুনে বিশ্ববাজারে সার্বিকভাবে খাদ্যের দাম বেড়েছে দশমিক ৫ শতাংশ। বছর ব্যবধানে যা ৫ দশমিক ৮ শতাংশ বেশি। আর বিশ্বব্যাপী সয়া, রেপসিড ও পাম তেলের ঊর্ধ্বমুখী চাহিদায় ভোজ্যতেলের দাম বেড়েছে  ২ দশমিক ৩ শতাংশ। এর মধ্যে পাম তেলের দামই বেড়েছে প্রায় ৫ শতাংশ। তবে ভালো ফলনের পূর্বাভাসে কমেছে সূর্যমুখী তেলের দর। এদিকে চাহিদার তুলনায় অপর্যাপ্ত সরবরাহের কারণে সব ধরনের মাংসের দাম ২ দশমিক ১ শতাংশ বেড়েছে।

এ ছাড়া, চাহিদার বিপরীতে যোগান কম থাকায় জুনে দুগ্ধজাত পণ্যের দাম শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ বেড়েছে। এর মধ্যে মাখনের দাম ২ দশমিক ৮ শতাংশ বেড়ে রেকর্ড উচ্চতায় উঠেছে। তিন মাস ধরে বাড়ছে পনিরের দামও। তবে চাহিদা কমে যাওয়ায় গুঁড়া ‍দুধের দাম পড়েছে ২ দশমিক ৩ শতাংশ।

আরটিভি/কেএইচ -টি

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন
Advertisement
Advertisement

Loading...


© All Rights Reserved 2016-2025 | RTV Online | It is illegal to use contents, pictures, and videos of this website without authority's permission