ঢাকাশুক্রবার, ০৯ মে ২০২৫, ২৬ বৈশাখ ১৪৩২

জবি রেজিস্ট্রারের পদত্যাগ দাবিতে বিক্ষোভ, কুশপুত্তলিকা দাহ

জবি প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫ , ০৪:০৬ পিএম


loading/img
ছবি: আরটিভি

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে রেজিস্ট্রার কর্তৃক শিক্ষার্থী হেনস্তার ঘটনায় তার পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। দায়িত্বে অবহেলা ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অসদাচরণের জন্য রেজিস্ট্রারের জবাবদিহিতা দাবি করেন তারা।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) দুপুর দেড়টায় শহীদ মিনারের পাদদেশ থেকে মিছিল নিয়ে কাঁঠালতলা ও সায়েন্স ফ্যাকাল্টি ঘুরে ভিসি ভবনের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে তারা। এ সময় ভিসি ভবনের সামনে রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. শেখ গিয়াস উদ্দিনের একটি কুশপুত্তলিকা দাহ করেন তারা।

বিক্ষোভ মিছিলে ‘জ্বালো রে জ্বালো, আগুন জ্বালো’, ‘রেজিস্ট্রারের গদিতে, আগুন জ্বালো একসাথে’, ‘ওয়ান টু থ্রি ফোর, রেজিস্ট্রার নো মোর’, ‘এক দুই তিন চার, রেজিস্ট্রার তুই গদি ছাড়’, ‘কুয়েট থেকে শিক্ষা নে, রেজিস্ট্রার গদি তুই ছাইড়া দে’, ‘দফা ১ দাবি ১, রেজিস্ট্রারের পদত্যাগ’, ‘তুমি কে আমি কে, ইভান ইভান’—ইত্যাদি স্লোগান দেন।

বিজ্ঞাপন

বিক্ষোভ সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জবি শাখার আহ্বায়ক মাসুদ রানা বলেন,  ৫ আগস্ট হয়েছিল স্বৈরাচারী মনোভাব ও শাসনের বিরুদ্ধে। কিন্তু ৫ আগস্টের পরেও ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে সন্ত্রাসী, ফ্যাসিস্ট মনোভাবী হয়ে উঠছে। আমার মনে হয় হাসিনা দিল্লি থেকে তাদেরকে মদদ দিচ্ছেন। তাদেরই একজন এই রেজিস্ট্রার গিয়াস। তার দপ্তরে গেলে বলেন, বের হয়ে যাও। বদমেজাজি এই ধরনের লোক আমরা প্রশাসনে চাই না। আপনি ক্লাস থেকে এসেছিলেন, ক্লাসে ফিরে যান। যদি না যান, তবে আমরা টেনেহিচড়ে আপনাকে গদি ছাড়া করব।

বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক কিশোয়ার সাম্য বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক এই কথা বলতে পারেন না—তুমি বের হয়ে যাও, নিরাপত্তার দায়িত্ব আমার না। এমন কথা একজন ঔপনিবেশিক শাসকই বলতে পারেন। আমরা কোনো কলোনিয়ালিস্ট চাই না। এই কলোনিয়ালিস্টের কোনো অনুশোচনা নেই, ২৪ ঘণ্টা বা ৪৮ ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও তিনি অনুশোচনা করেননি, ক্ষমা পর্যন্ত চাননি।

received_1191240972652397

বিজ্ঞাপন

প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে সাম্য বলেন, প্রশাসনও নীরব ভূমিকা পালন করেছে। তারা আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। তাই এমন বাস্তবতায় আমরা রেজিস্ট্রার গিয়াসের পদত্যাগ চাই।

ছাত্রফ্রন্ট সভাপতি ও ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ইভান তাহসীব বলেন, ক্যাম্পাসে একের পর এক চুরির ঘটনায় প্রশাসনের পদক্ষেপ ও নিরাপত্তা চাইতে গিয়ে রেজিস্ট্রারের কাছে দায়িত্বহীন বক্তব্য পেয়েছি। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব নাকি তার নয়! রেজিস্ট্রারের এই ঘৃণিত বক্তব্যের জবাবদিহি  করতে হবে। শিক্ষার্থীদের কাছে তাকে ক্ষমা চাইতে হবে।

ছাত্র অধিকার সভাপতি রাকিব বলেন, অযোগ্য লোককে গুরুত্বপূর্ণ পদে বসিয়ে রাখলে দেশের উন্নতি হয় না। প্রশাসনকে জবাবদিহি করতে হবে—একজন একাডেমিশিয়ানকে কেন এই গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক পদে বসানো হয়েছে?

রেজিস্ট্রারকে উদ্দেশ্য করে রাকিব বলেন, আপনি সাবধান হয়ে যান। ক্ষমতার হাতই যদি চূড়ান্ত হয়, তবে শিক্ষার্থীরা আপনাকে রুখে দেবে। রেজিস্ট্রারের পদত্যাগ দাবি করে রাকিব বলেন, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আমরা রেজিস্ট্রারের অব্যাহতি চাই, অন্যথায় আমরা কঠিন কর্মসূচি ঘোষণা করব।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার দায়িত্ব প্রশাসনের। যে শিক্ষার্থী রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছেন আমি তার সাথে কথা বলেছি। আমরা আলোচনা করে ব্যবস্থা নিব।

প্রসঙ্গত, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অফিসে শহীদ সাজিদ একাডেমিক ভবনের গ্যারেজ থেকে গত তিন মাসে একাধিক সাইকেল চুরির ঘটনা নিয়ে লিখিত অভিযোগ দিতে যান ইভান তাহসীভসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী। এসময় রেজিস্ট্রার এর সমাধান না করে উল্টো অভিযোগকারীর উপর চড়াও হন।

তিনি বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের মালামালের নিরাপত্তা দিতে পারবো না, মালামাল শিক্ষার্থীদের নিজ দায়িত্বে রাখতে হবে। শিক্ষার্থীরা কি খাবে, কোথায় থাকবে? এই দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের না। শিক্ষার্থীদের কিছু হলে এর দায়ভার বিশ্ববিদ্যালয়ের না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এর দায়ভার নিতে পারবে না। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে রেজিস্ট্রার বলেন, বের হয়ে যাও, ওকে বের করে দাও। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে কেনো পড়তে আসো এলাকায় পড়লেই তো পারতে।

আরটিভি/এমএ

 

 

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |