চলচ্চিত্র থেকে দূরে সরে যাওয়ার কারণ জানালেন রাজ্জাকপুত্র সম্রাট
প্রয়াত কিংবদন্তি নায়করাজ রাজ্জাক ছিলেন উজ্জ্বল নক্ষত্রের দৃষ্টান্ত। এই নায়কের দুই ছেলে যথাক্রমে বড় ছেলে বাপ্পারাজ ও ছোট ছেলে খালিদ হোসেন সম্রাট বাবার সেই সফলতার ধারের কাছেও নেই। তবে বাপ্পারাজ অভিনয়ে অনেকটাই সফল। কিন্তু তার ছোট ভাই সম্রাট সেভাবে আলোচনায় জায়গা করে নিতে পারেননি।
নায়করাজের পরিচালনায় ‘কোটি টাকার ফকির’ সিনেমার মাধ্যমে বড়পর্দায় ডেবিউ হয়েছিল সম্রাটের। এরপর কয়েকটি সিনেমায় দেখা গেছে তাকে। তারপর অনেকটাই যেন আড়ালে চলে যান রাজ্জাকপুত্র সম্রাট। মাঝে একবার অভিমান ভেঙে ফিরেছিলেন তিনি। তবে সেভাবে কিছু করতে পারেননি। এরপর ফের আড়ালে চলে যান এই অভিনেতা।
সম্পতি একটি গণমাধ্যমকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে অভিমানের সুরে সম্রাট বলেন, আমি প্রশিক্ষণ নিয়ে এসেছি, সহকারী পরিচালকের কাজ করেছি। প্রোডাকশনে কাজ করেছি। আমি অভিনয়ের জন্য কাজ করেছি। একজন শিল্পীর তৈরি হওয়ার জন্য একটু সময় লাগে। নিজেকে যখন আমি তৈরি করে একটা অবস্থানে এসেছি, তখন আমাদের দেশের হলগুলো প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, আমি যখন শুরু করেছিলাম, তখন একশ’ থেকে দেড়শ’ সিনেমা হল ছিল। ওই সময় ঈদকে কেন্দ্র করে আমার সিনেমা মুক্তি পায়নি, স্বাভাবিক সময়েই মুক্তি পেত এবং টাকা উঠিয়ে আনা সম্ভব হতো। কিছু সিনেমার লাভ হতো, আবার কিছুর লোকসানও হতো।
এ অভিনেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মূলত একজন শিল্পী হতে চাইলে তাকে শৈল্পিক বিষয়গুলো শিখে আসতে হয়। আমি তো রাজনীতি শিখে আসিনি। এ কারণে রাজনীতি করতে পারিনি, ফলে ইন্ডাস্ট্রিতে আমি টিকতে পারিনি। আর এটা কেবলই আমার ব্যক্তিগত মতামত। তবে আমাকে অনেক কষ্ট করে কাজ শিখতে হয়েছে।। শুধু আমি কেন, প্রতিটি শিল্পীরই একটা অবস্থানে যেতে কষ্ট করতে হয়।
এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ একটা সময় চলে গেছে আমার। আর কাজের কথাও মনে পড়ে। এছাড়া এখন এফডিসিতে মিস করব কাকে? আমাদের তো কেউ মিস করে না। এটা কষ্টের কিছু না, আমি বাস্তবটা বললাম। যাদের দেখে আমরা বড় হয়েছি, যাদের সঙ্গে আমরা কাজ করেছি, তারা অনেকেই এখন নেই, গত হয়েছেন, মারা গেছেন। অনেকে আবার এই পেশা ছেড়ে চলে গেছেন। আর এখন এফডিসিতে যারা আছেন, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল না আমাদের। এ জন্য বন্ডিংটা সেভাবে তৈরি হয়নি। ফলে একটা গ্যাপ রয়ে গেছে।
এছাড়া প্রয়াত নায়করাজ রাজ্জাক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অবশ্যই বাবার সিনেমাগুলো দেখি। বাবার কথা মনে হলেই সিনেমা দেখা হয়। আবার কীভাবে নায়করাজ রাজ্জাক হয়েছেন তিনি, সেটি বোঝার জন্যও দেখতে হয়। এদিকে নতুন শিল্পীরাও চেষ্টা করছে। আসলে একজন শিল্পীর তৈরি হওয়ার জন্যও সময়ের প্রয়োজন হয়।
প্রসঙ্গত, সম্রাট অভিনীত সিনেমাগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘কার্তুজ’, ‘আয়না কাহিনী’, ‘মন দিয়েছি তোমাকে’, ‘রিকশাওয়ালার ছেলে’ ও ‘বাপ বড় না শ্বশুর বড়’।
মন্তব্য করুন