বর্তমান সময়ের আলোচিত-সমালোচিত নাম ডা. সাবরিনা। পেশায় চিকিৎসক হলেও আকর্ষণীয় সাজগোজে ছবি-ভিডিও প্রকাশের জন্য বেশ আলোচিত তিনি। বিভিন্ন সময় তার নানা ইন্টারভিউ বেশ ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। শুধু তা-ই নয়, শোবিজের নানা অনুষ্ঠানেও ইদানীং তাকে দেখা যায়।
এদিকে, সাবেক ডিবি প্রধান হারুনকে নিয়ে বিস্ফোরক তথ্য দিয়েছেন বন্দিনী ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ডা. সাবরিনা হুসেন মিষ্টি।
শনিবার (১৮ জানুয়ারি) সকালে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে পিরোজপুর ইউনিয়নের ভবনাথপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বন্দিনী ফাউন্ডেশনের ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য দেন।
ডা. সাবরিনা বলেন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল করার জন্য আমাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হয়েছে। ওই সময় করোনা মোকাবিলায় বিগত সরকারের বেশ কিছু ব্যর্থতা স্পষ্ট হয়ে উঠছিল, তখন জনসাধারণের ফোকাস সরিয়ে নেওয়ার জন্য বিনাকারণে আমাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর পুরো কাজটি করেছে সাবেক ডিবি প্রধান হারুন। অথচ, এই মামলায় আমি কোনো এজহারের মূল আসামি ছিলাম না। আমার সঙ্গে এই মামলার কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না। তাছাড়া যে প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলাটি হয়েছে সে প্রতিষ্ঠানেরও কোনো কিছুতে আমি জড়িত ছিলাম না।
সাবেক ডিবি প্রধান হারুন সম্পর্কে বিস্ফোরক তথ্য দিয়ে তিনি বলেন, আমার মামলার সময়ে সাবেক ডিবি প্রধান হারুন অর রশিদ তেজগাঁও জোনের ডিসি ছিলেন। আমাকেও তেজগাঁও থানার একটি মামলায় সম্পৃক্ত করা হয়। পরে তিনি আমাকে আন-অফিসিয়ালি ফোন করে ব্যক্তিগতভাবে সেখানে যেতে বলেন। পরে একাধিকবার ফোন করে আমাকে যেতে বলেন। তবে ওনার কি উদ্দেশ্য ছিল তা জানা নেই। পরে আমাকে যখন তেজগাঁও থানায় ডেকে নেওয়া হলো সেবার তার সঙ্গে দেখা হলে তিনি আমাকে প্রশ্ন করেন, কোন মেডিকেল কলেজ ও কততম বিসিএস? এই দুটো প্রশ্ন করে তিনি আমাকে গ্রেপ্তার করলেন। কিন্তু গণমাধ্যমে নানা কিছু বলে নাটক সাজিয়ে তিনি আমাকে গ্রেপ্তার দেখান।
নাটক সাজিয়ে মামলায় ফাঁসানো হয়েছে উল্লেখ করে ডা. সাবরিনা বলেন, বিগত আওয়ামী লীগ সরকার আমলে তৎকালীন ডিবিপ্রধান হারুন পরিকল্পনা অনুযায়ী নাটক সাজাতে ও নাটক পছন্দ করতেন। সেটা সরকারের কোনো পদক্ষেপ বাস্তবায়ন কিংবা তার নিজের কোনো ব্যক্তিগত ইস্যুতে হোক না কেন। আমার ক্ষেত্রেও পুরোটা এমনই হয়েছে। রাজনৈতিক কারণে তিনি নাটক সাজিয়ে আমাকে ডেকে নিয়ে গ্রেপ্তার দেখিয়েছেন। এটা পুরোটাই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত একটি মামলা।
মামলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মামলার ৪৩ সাক্ষীর মধ্যে একজনও বলেনি আমি তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছি বা কোনো কিছুতে সই করেছি। সাক্ষীদের সবার একটাই বক্তব্য, তারা বিভিন্ন মিডিয়ায় আমার সম্পর্কে জানতে পেরেছেন আমি ওই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ইত্যাদি ইত্যাদি। আর তৎকালীন সময়ে মিডিয়াতে সেটাই দেখানো হয়েছে যা সাবেক ডিবি প্রধান হারুন চেয়েছেন। এটা আমার সঙ্গে ভীষণভাবে অন্যায় করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ২৩ জুন করোনার ভুয়া সনদ দেওয়া, জালিয়াতি ও প্রতারণার অভিযোগে ডা. সাবরিনা ও আরিফুলসহ ছয় জনকে গ্রেফতার করে তেজগাঁও থানা পুলিশ। নিম্ন আদালতে সাজা পেয়ে উচ্চ আদালতে আপিল আবেদন করে জামিন পান তিনি। ২০২৩ সালের ৫ জুন প্রায় তিন বছর কারাগারে কাটিয়ে জামিনে মুক্তি পান সাবরিনা।
আরটিভি/এএ-টি