বরেণ্য সুরকার আলম খানের প্রয়াণের দুই বছর
দেশের জনপ্রিয় প্রয়াত সুরকার আলম খানের প্রয়াণের দুই বছর পূর্ণ হলো আজ (৮ জুলাই)। ২০২২ সালের আজকের এই দিনে সবাইকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান তিনি। আলম খান একাধারে গীতিকার, সুরকার এবং সংগীত পরিচালক ছিলেন।
ক্যারিয়ারে প্রায় দুই হাজারের বেশি গানের সুর করেছেন তিনি। পাশাপাশি ৩০০ সিনেমার সংগীত পরিচালনা করেছেন। তার লেখা শ্রোতাপ্রিয় গানের সংখ্যাও কম নয়।
১৯৭০ সালে পরিচালক আবদুল জব্বার খানের ‘কাঁচ কাটা হীরা’ সিনমোয় প্রথম চলচ্চিত্রে সংগীত পরিচালনার সুযোগ পান আলম খান। তার সুরকৃত প্রথম জনপ্রিয় গান ‘স্লোগান’ সিনমোর ‘তবলার তেড়ে কেটে তাক’। ১৯৭৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘সারেং বউ’ সিনমোর আবদুল জব্বারের কণ্ঠে ‘ওরে নীল দরিয়া’ গানটি এক অনন্য সৃষ্টি তার। এ ছাড়া আরও অসংখ্য কালজয়ী গানের সুর করেছেন তিনি।
১৯৪৪ সালে তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার বানিয়াগাতি গ্রামে নানাবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন আলম খান। তার গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইল। তার বাবা আফতাব উদ্দিন খান ছিলেন সেক্রেটারিয়েট হোম ডিপার্টমেন্টের অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অফিসার এবং মা জোবেদা খানম ছিলেন গৃহিণী।
সিরাজগঞ্জে কয়েক বছর থাকার পর বাবার চাকরির সুবাদে কলকাতায় চলে যান তারা। পরে ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পর বাবার সঙ্গেই ফিরে আসেন ঢাকায়। তারপর ঢাকাতেই স্থায়ী হন। রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরী স্কুল থেকে মেট্রিক (এসএসসি) পাস করেন আলম খান।
স্কুলে থাকাকালীন গানের প্রতি ঝোঁক সৃষ্টি হয় তার। বাবা আফতাব উদ্দিন প্রথমে আগ্রহ না দেখালেও মায়ের উৎসাহে গানের চর্চা চালিয়ে যান আলম খান। পরবর্তীতে তার বাবাই তাকে ওস্তাদ ননী চ্যাটার্জীর কাছে গানের তালিমের জন্য নিয়ে যান। পাঁচ ভাই ও তিন বোনের মধ্যে আলম খান মেজ। বাংলাদেশের প্রখ্যাত পপ সংগীতশিল্পী আজম খান ছিলেন তার ছোট ভাই।
আলম খানের উল্লেখিত শ্রোতাপ্রিয় গানগুলো হলো— ‘এক চোর যায় চলে’, ‘তুমি আছ সবি আছে’, ‘চাঁদের সাথে আমি দেব না’, ‘ডাক দিয়াছেন দয়াল আমারে’, ‘সবার জীবনে প্রেম আসে’, ‘তেল গেলে ফুরাইয়া’, ‘ভালোবেসে গেলাম শুধু’, ‘কী জাদু করিলা’, ‘তোমরা কাউকে বোলো না’, ‘আমি একদিন তোমায় না দেখিলে’, ‘বুকে আছে মন’, ‘কারে বলে ভালোবাসা’, ‘তোরা দেখ’, ‘দেখ রে চাহিয়া’, ‘জীবনের গল্প’, ‘আছে বাকি অল্প’, ‘চক্ষু দিয়া দেখতাছিলাম’, ‘তুমি ছিলে মেঘে ঢাকা চাঁদ’, ‘এখানে দুজনে নিরজনে’, ‘মনে বড় আশা ছিল’, ‘কাল তো ছিলাম ভালো’, ‘আমি তোমার বধূ’।
মন্তব্য করুন