বাংলাদেশি পর্যটক না আসায় ধস নেমেছে ভারতের পর্যটন ব্যবসায়
পাঁচদিন ধরে শিলিগুড়ি ও ঢাকার মধ্যে কোনো বাস চলাচল করেনি। যাত্রী না থাকায় বাসের কাউন্টারগুলো ফাঁকা পড়ে রয়েছে। পর্যটকের অভাবে প্রায় লাটে উঠেছে হোটেল ব্যবসাও, পাশাপাশি চিকিৎসা, শিক্ষা ও প্রতিষ্ঠানেও প্রভাব পড়েছে।
একদিকে, ভিসা জটিলতায় বাংলাদেশি পর্যটক আসছে না, অন্যদিকে, ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে বাংলাদেশ সম্পর্কে নেতিবাচক সম্প্রচারের কারণে আতঙ্কে বাংলাদেশমুখী হওয়ার সাহস করছেন না ভারতীয় পর্যটকরাও। এমন পরিস্থিতিতে বাস চালিয়ে লোকসান হওয়ায় অনির্দিষ্টকালের জন্য ঢাকা-শিলিগুড়ি বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে মালিকপক্ষ।
মূলত চ্যাংরাবান্ধা সীমান্ত হয়ে বাংলাদেশ থেকে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর শিলিগুড়িতে আসেন মানুষজন। তাই দার্জিলিং, সিকিম, আসাম-বিহার থেকে থেকে নেপাল, ভুটান এমনকি চীন সীমান্ত পর্যন্ত সারা বছর ভিড় লেগে থাকে। সেই কারণেই পর্যটকদের সুবিধার জন্য চালু হয়েছিল ঢাকা থেকে শিলিগুড়ি সরাসরি ট্রেন মিতালী ও বেসরকারি বাস চলাচল। গত ৫ আগস্টের পর বাংলাদেশে চলমান নানা পরিস্থিতির কারণে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেয় ভারত। এবার পর্যটক সংকটে অনির্দিষ্টকালের জন্য বাস চলাচলও বন্ধ হয়ে গেছে।
গত আগস্ট মাসের আগেও বাস যাত্রীতে ভিড় লেগে থাকতো জানিয়ে একটি কাউন্টারে কর্মরত কর্মী শিবোপ্রসাদ ঘোষ জানান, বাংলাদেশের পরিস্থিতির জন্য প্যাসেঞ্জার নেই। যাও ২-১ জন হচ্ছে তাদের দিয়ে তো বাস চালানো সম্ভব না। ভারত সরকার ভিসা দিচ্ছে না, ভিসা না দিলে কীভাবে বাস চলাচল স্বাভাবিক হবে? আমরা চাইছি ভারত সরকার আবার ভিসা দেওয়া শুরু করুক। এতে আমাদের বাস চলাচল চালু হবে। তিনজন কর্মী কাউন্টারে কাজ করি। কাউন্টার চালাতে খরচ রয়েছে। এমন চললে তো কাউন্টারের ঝাঁপ বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া উপায় থাকবে না।
সংশ্লিষ্ট পরিবহণ সংস্থার ম্যানেজার বাবলু ঘোষ জানান, শিলিগুড়ি পথে ঢাকা বর্তমানে যাত্রী পাওয়া যাচ্ছে না। এদেশের মানুষের মধ্যে বাংলাদেশ নিয়ে ভয় তৈরি হয়েছে। প্রতিদিন একজোড়া বাস দু-দেশের মধ্যে চলাচল করে। দুটি বাসই বর্তমানে বন্ধ করে রাখা হয়েছে।
এদিকে, একাধিক হোটেল কর্তৃপক্ষ জানান, হাসমি চক, মহাত্মা গান্ধী চক, জংশন, মাল্লাগুড়ি, বিধান মার্কেট এলাকার একাধিক হোটেলে বাংলাদেশ থেকে মানুষ এসে থাকতেন। তাদের যাতায়াত কমায় হোটেল ব্যবসায় প্রভাব পড়েছে। সরকার পতনের পর বাংলাদেশের নাগরিকদের যাতায়াত শিলিগুড়িতে একেবারে কমে গেছে। আগে যারা ভিসা পেয়েছিলেন সেই সব মানুষরা ট্যুরিস্ট ভিসা নিয়ে আসছেন। কিন্তু ভিসার মেয়াদ প্রায় শেষ। শিক্ষা ও চিকিৎসার জন্য বহু মানুষ এদেশে আসেন। কিন্তু সেই সংখ্যা তলানিতে ঠেকায় নিশ্চিতভাবে আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
আরটিভি/কেএইচ
মন্তব্য করুন