শিশুকে ভূতের ভয় দেখালে হতে পারে যেসব বিপদ

আরটিভি অনলাইন ডেস্ক

রোববার, ১৯ মার্চ ২০১৭ , ০২:৩১ পিএম


শিশুকে ভূতের ভয় দেখালে হতে পারে যেসব বিপদ

ঘুটঘুটে অন্ধকার আপনার কেমন লাগে? অন্ধকার ঘরে যখন একা শুয়ে থাকেন তখন কি ঠিকঠাক ঘুম আসে? কিন্তু কখনো ভেবে দেখেছেন কি এর কারণ? এর কারণ হলো, ছোট্টবেলায় আমাদের শোনানো সেই ভূতের গল্প। সেই বড় বড় চোখ, বড় বড় দাঁত, বিকৃত মুখমণ্ডল, সাদা কাপড় পরা ভূত, নির্জন রাস্তা, ঘুটঘুটে অন্ধকার ঘর। আমরা বড় হয়েও এসব কিছু ভুলতে পারি না। যতই সাহস সাহস বলি, আড়ালে আমাদের মধ্যে সেই আতঙ্ক গোপনে থেকেই যায়।

বিজ্ঞাপন

অনেক অভিভাবকই বলে থাকেন আমার সন্তান কেমন ভীতু! কারো সাহসী বাচ্চা দেখলে শুধু আক্ষেপ করেন! কিন্তু এক বারও মনে করে দেখে না যে, শিশুটির ছোটবেলায় তাকে শত শত ভূতের গল্প শুনিয়ে ভয় দেখিয়েছিলেন। রাক্ষসের কথা বলে ভাত খাইয়েছিলেন, বড় বড় চোখ আর নখের কাল্পনিক ছবি এঁকে ভয় দেখিয়ে ঘুম পারিয়েছিলেন।

শিশুকাল অত্যন্ত সরল, শুদ্ধ, স্বচ্ছ ও সহজ। এ সময়টিতে সতর্কতার সঙ্গে দেখভাল না করলে অনেক শিশুর মনে ঠাঁই পায় ভূতের ভয়ের মতো কিছু ছবি, যা আজীবন তাকে বয়ে বেড়াতে হয় অসুস্থতার মতো। তাই শিশুকে খেলার ছলে, গল্পের ছলে বা ভয় দেখাতে ভূত নামে অদৃশ্যের ভয়, অদৃশ্যের কাল্পনিক কাহিনী না বলা অথবা না শোনানোই উচিত। শিশুকে ভূতের ভয় না দেখিয়ে, অদৃশ্যের প্রতি ভীতু না করে বাস্তবতার প্রতি অভ্যস্ত করাই তো ভালো।

বিজ্ঞাপন

ব্রিটিশ শিশু গবেষক, জোসেফ ফ্রাঙ্কলিন বলেছেন, ‘ভয় এমন একটি জিনিস যা আজীবনেও চলে যায় না; বরং নানান সময়ে তা পথ আগলে দাঁড়ায় ঠিক কাল্পনিক সেই ভূতের মতোই।’

তাই আপনার চঞ্চল শিশুটিকে ভূতের ভয় দেখিয়ে দমন করা হলে যে কোনো সময়ে সামনে এসে দাঁড়াতে পারে এমন সব বিপদ গুলো।

 

বিজ্ঞাপন

• শিশুদের মনে একবার ভূতের  ভয় গেঁথে গেলে তা সারাজীবন লেগে থাকে ছবির মতো।

• কোনো শিশু যদি ভয়কে ঠিক গ্রহণ করতে না পারে তাহলে ভূত আতঙ্কে অপ্রকৃতস্থ হয়ে যাবার সম্ভাবনাই থাকে বহুলাংশে। এছাড়া শিশুর মধ্যে দেখ দিতে পারে মানসিক সমস্যা।

• অতিরিক্ত ভয়ের কারণে মানুষের মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণের হয়ে ঘটতে পারে অকাল মৃত্যু।

• যে বস্তুটি পৃথিবীতে নেই তার একটি কাল্পনিক রূপ এঁকে শিশুর সামনে ভয়ার্ত রূপে উপস্থাপন করলে অদৃশ্যের প্রতি শিশুর ভয় আরো বাড়তে থাকে।

• যে শিশুর মধ্যে ভৌতিক ভয় আছে সে শিশু অন্য শিশুর চেয়ে ধীর, ভীতু হয়; যা কাম্য নয়।

• ভৌতিক ভয় শিশুর স্বাভাবিক বৃদ্ধি, বুদ্ধিবৃত্তিতে শ্লথ করে দেয়।

• শিশুমন কোমল। এমতাবস্থায় ভয় তাদের মনে ছাপ ফেলে সহজে এবং তা আজীবন থেকে যায় মনে।

• কোনো শিশুর মধ্যে ভূত আতঙ্ক তৈরি হলে তার স্বাভাবিক বিকাশই বাধাগ্রস্ত হয়ে পড়ে।

• ভূতের ভয় থেকেই ভীতু মনোবল তৈরি হয় যা স্বাভাবিক দৃষ্টিতে বোঝা যায় না কিন্তু তা একটি অসুখ।

• তাই শিশুকে কোনোভাবেই ভূতের ভয় না দেখানো বা না শোনানো উচিত।

• ভূত বলতে যে কাল্পনিক রূপ আমরা এঁকেছি তা আমাদের বোকামি। শিশুর সামনে এ ছবি তুলে না ধরাই সমীচীন।

আরকে/এসএস

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন

Loading...


© All Rights Reserved 2016-2025 | RTV Online | It is illegal to use contents, pictures, and videos of this website without authority's permission