ঢাকাবৃহস্পতিবার, ১২ জুন ২০২৫, ২৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

আদালতের রায়ে ক্ষমতা ফিরে পেলেন দ. কোরিয়ার অভিশংসিত ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, আরটিভি নিউজ

সোমবার, ২৪ মার্চ ২০২৫ , ১০:৪৫ এএম


loading/img
ছবি: সংগৃহীত

দক্ষিণ কোরিয়ার অভিশংসিত ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হান ডাক-সু তার হারানো পদ ফিরে পেয়েছেন আদালতের রায়ে।  

বিজ্ঞাপন

গত বছরের ডিসেম্বরে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওল সংসদে আইনপ্রণেতাদের ভোটে অভিশংসিত হওয়ার দুই সপ্তাহ পর একই পরিণতি হয় ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হান ডাক-সুরও। খবর রয়টার্সের। 

বার্তাসংস্থাটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, সোমবার (২৪ মার্চ) দক্ষিণ কোরিয়ার প্রধানমন্ত্রী হান ডাক-সুর ক্ষমতা পুনর্বহাল করেছে দেশটির সাংবিধানিক আদালত। 

বিজ্ঞাপন

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওল অভিশংসিত হওয়ার ফলে গত ১৪ ডিসেম্বর দেশটির ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেন ৭৫ বয়সী এ নেতা। কিন্তু মাত্র দুই সপ্তাহের মাথায় তাকেও অভিশংসিত করেন আইনপ্রণেতারা। 

তবে, আদালতের আদেশের পর প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলের কাছ থেকে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন হান ডাক-সু। দক্ষিণ কোরিয়ার সাম্প্রতিক অস্থির রাজনীতিতে অনেক বড় ঘটনা হিসেবে দেখা হচ্ছে এটিকে।

আদালতের রায়ের পর হান বলেন, সাংবিধানিক আদালতের বিজ্ঞ সিদ্ধান্তের জন্য আমি কৃতজ্ঞ। আমি বরখাস্ত থাকাকালীন কঠোর পরিশ্রমের এ সময়ে মন্ত্রিসভার সদস্যরা যেভাবে দায়িত্ব পালন করেছে, সেজন্য তাদেরকে ধন্যবাদ জানাই।

বিজ্ঞাপন

টেলিভিশনে সম্প্রচারিত মন্তব্যে হান বলেন, আমরা বিশ্বব্যাপী পরিবর্তনের প্রতিক্রিয়া প্রস্তুত ও বাস্তবায়নের জন্য একসাথে কাজ করব এবং ভূ-রাজনৈতিক রূপান্তরের যুগে দক্ষিণ কোরিয়া যাতে ভালোভাবে বিকশিত হতে থাকে তা নিশ্চিত করব।

বিজ্ঞাপন

মূলত, ২০২২ সালের মে মাস থেকে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বপালন করছেন হান ডাক-সু। আর প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওলের অভিশংসনের পর গত বছরের ডিসেম্বরে তিনি দেশটির ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন। তবে এর দুই সপ্তাহের মাথায় তিনি নিজেও অভিশংসিত হন এবং সেই পদক্ষেপ পূর্ব এশিয়ার এই দেশটির চলমান সংবিধানিক সংকট আরও বাড়িয়ে তুলেছিল।

গত বছরের ৩ ডিসেম্বর সামরিক আইন জারি করার ব্যর্থ প্রচেষ্টার পর দক্ষিণ কোরিয়ার সংসদে প্রেসিডেন্ট ইউনকে অভিশংসিত করার পর প্রধানমন্ত্রী হান ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন। মূলত দেশটিতে সেসময় যে রাজনৈতিক অস্থিরতা চলছিল তা থেকে দেশকে মুক্ত করতে নেতৃত্ব দেওয়ার কথা ছিল হানের।

কিন্তু বিরোধী এমপিরা অভিযোগ করেছিলেন, তিনি ইউনের অভিশংসন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করার দাবি প্রত্যাখ্যান করছেন। এরপর ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে দেশটির পার্লামেন্টে বিশৃঙ্খলার মধ্যেই তাকে অভিশংসনের জন্য ভোটাভুটি অনুষ্ঠিত হয়। সেই ভোটাভুটিতে মোট ১৯২ জন আইনপ্রণেতা তার অভিশংসনের পক্ষে ভোট দিয়েছিলেন।

রয়টার্স বলছে, ইউনের সামরিক আইন ঘোষণা এশিয়ার চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতি এবং যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ সামরিক মিত্র দক্ষিণ কোরিয়াকে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক সংকটে ফেলে দেয় এবং বিভিন্ন শীর্ষ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিশংসন, পদত্যাগ এবং ফৌজদারি অভিযোগের মধ্যে দেশটিতে নেতৃত্বের শূন্যতা তৈরি করে।

সোমবার আদালতের বিচারপতিরা সাত-এক ভোটে হানের অভিশংসন বাতিল করার রায় দিয়েছেন। আট বিচারপতির মধ্যে পাঁচজন বলেছেন, অভিশংসন প্রস্তাব বৈধ, কিন্তু আদালতের বিবৃতি অনুসারে, হানকে অভিশংসন করার মতো পর্যাপ্ত কারণ ছিল না। তিনি সংবিধান বা আইন লঙ্ঘন করেননি।

আর দুই বিচারপতি রায় দিয়েছেন, ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হানের বিরুদ্ধে অভিশংসন প্রস্তাব শুরু থেকেই অবৈধ ছিল। কারণ সংসদের দুই-তৃতীয়াংশ আইনপ্রণেতা এটি পাস করেননি। 

আরটিভি/এসএইচএম/এআর

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন
Advertisement
Advertisement

Loading...


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |