কোটাবিরোধীদের ওপর হামলায় অ্যামনেস্টির বিবৃতি 

আরটিভি নিউজ

বৃহস্পতিবার, ১১ জুলাই ২০২৪ , ০৯:৪৫ পিএম


কোটাবিরোধীদের ওপর হামলায় অ্যামনেস্টির বিবৃতি 
ফাইল ছবি।

কুমিল্লায় কোটাবিরোধীদের আন্দোলনে পুলিশের হামলায় ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) অ্যামনেস্টির সাউথ এশিয়ার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এ বিবৃতি দেওয়া হয়।

এতে বলা হয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলায় শিক্ষার্থীসহ অন্তত ২০ জন আহত হওয়ার খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল উদ্বিগ্ন।

বিজ্ঞাপন

‘সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি পুনর্বহালের দাবিতে দেশব্যাপী আন্দোলনে অংশ নিচ্ছিলেন শিক্ষার্থীরা। সাধারণ মানুষের অভিযোগগুলো তুলে ধরতে শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অনুমতি দেওয়া জরুরি।’

বিবৃতি আরও বলা হয়, আন্তর্জাতিক আইন ও বাংলাদেশ নিজস্ব সংবিধান অনুসারে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ ও স্বাধীন অধিকারের বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই প্রতিবাদের অধিকারকে সম্মান করতে হবে, শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদকারীদের রক্ষা করতে হবে এবং অপ্রয়োজনীয় ও অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ বন্ধ করতে হবে।

বিজ্ঞাপন

এর আগে, বৃহস্পতিবার বিকেলে কোটা বাতিলের দাবিতে আন্দোলন করতে গেলে পুলিশি বাধার সম্মুখীন হন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বাধা উপেক্ষা করে মহাসড়কের দিকে যেতে চাইলে পুলিশের সঙ্গে তাদের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। 

এ সময় শিক্ষার্থীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে পুলিশের পক্ষ থেকেও ফাঁকাগুলি এবং টিয়ারশেল নিক্ষেপ করা হয়। এতে অন্তত ৫ জন আহত হয়েছেন।

এদিকে, কোটা বাতিলের দাবিতে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে শাহবাগে অবস্থান নেয় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। এ সময় আন্দোলনকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় কিছু শিক্ষার্থীকে পুলিশের সাঁজোয়া যানের ওপর উঠে উল্লাস করতে দেখা যায়।

শাহবাগে প্রায় চারঘণ্টা অবস্থান নেওয়ার পর রাত ৯টার দিকে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ হাসান।

তিনি বলেন, আমরা সব বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে অনুরোধ জানাবো, নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব কিন্তু আপনাদের। আপনারা শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন। আমাদের ওপর হামলাকারীদের বিচারের আওতায় আনুন। আমাদের ওপর যে হামলা হয়েছে তার প্রতিবাদে আগামীকাল (শুক্রবার) আমরা সারাদেশের সব ক্যাম্পাসে বিকেল ৪টায় বিক্ষোভ মিছিল করব।

উল্লেখ্য, ২০১৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ কোটা প্রচলিত ছিল। এর মধ্যে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা, ১০ শতাংশ নারী কোটা, অনগ্রসর জেলার বাসিন্দাদের জন্য ১০ শতাংশ কোটা, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদের জন্য ৫ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধীদের জন্য ১ শতাংশ আসন সংরক্ষিত ছিল।

ওই বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোটা সংস্কারের দাবিতে বড় বিক্ষোভ হয়। কোটাব্যবস্থার সংস্কার করে ৫৬ শতাংশ কোটা থেকে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনার দাবি জানিয়েছিলেন আন্দোলনকারীরা। পরে সে বছরের ৪ অক্টোবর কোটাপদ্ধতি বাতিলবিষয়ক পরিপত্র জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

এর মাধ্যমে ৪৬ বছর ধরে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে যে কোটাব্যবস্থা ছিল, তা বাতিল হয়ে যায়। পরে ২০২১ সালে সেই পরিপত্রের মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের অংশটিকে চ্যালেঞ্জ করে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান উচ্চ আদালতে রিট করেন। সেই রিটের রায়ে চলতি বছরের ৫ জুন পরিপত্রের ওই অংশ অবৈধ ঘোষণা করা হয়। এরপর চাকরিপ্রত্যাশী সাধারণ শিক্ষার্থীরা মাঠে নামেন।

টানা কয়েক দিন আন্দোলনের পর গত ৯ জুলাই কোটা পুনর্বহাল নিয়ে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী। পরদিন হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের ওপর এক মাসের স্থিতাবস্থা জারি করেন আপিল বিভাগ। এ আদেশের ফলে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করে ২০১৮ সালে সরকারের জারি করা পরিপত্র বহাল থাকছে। তবে শিক্ষার্থীরা আপিল বিভাগের এই আদেশ প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন

Loading...


© All Rights Reserved 2016-2025 | RTV Online | It is illegal to use contents, pictures, and videos of this website without authority's permission