মানুষকে মশা-মাছি ভেবে মাড়িয়ে যেতে চায় ভারত?
নানা অসম আচরণ ও বন্ধুত্বের চাদরে ঢাকা বৈষম্যের ভিত্তিতে ভারতের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্কের যে এক বিকট পরিবর্তন এসেছে তা এখন দৃশ্যমান।
তবে দেশে দেশে সংঘাত বা রাজনৈতিক দর্শন, সব কিছুই পরিচালিত হয় মানুষের মাধ্যমেই, সমাধানেও কাজ করতে হয় মানুষকে। আর ‘মানুষ’ শব্দটি এলেই উঠে আসে ভদ্রতা, সভ্যতা ও নম্রতার প্রসঙ্গ।
কিন্তু ভারতের ক্ষমতাসীন দলের নেতা শুভেন্দু অধিকারী তোয়াক্কা করেন না এ সমস্ত মানবীয় গুণের, বাকযন্ত্র যেহেতু আছে তাই যা খুশি তা বলতে পারাই যেন গৌরবের তার জন্য। স্বার্থে কিঞ্চিৎ আঘাত আসলেই মানুষকেও ‘মশা-মাছি’ বলে মন্তব্য করতে দুবার ভাবেন না তিনি, শুধু যে মশা মাছি ভেবেই তিনি ক্ষান্ত হয়েছেন তা নয় বরং মারিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়ও ব্যক্ত করেছেন, সভ্যতার এই সময়ে এসে মানুষকে মশা-মাছি ভেবে মারিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা যেন কেবলই ছেলে খেলা তার কাছে। শুধু তাই নয় যেভাবে বুক ফুলিয়ে বাংলাদেশের মানুষকে নিয়ে কটূক্তি করেছেন তিনি, সেটি ভালো করে লক্ষ করলে মনে হবে পৃথিবীতে ‘ভদ্রতা’ বলতে কোন শব্দ ছিলোই না কখনো। চরম অভদ্রতাই যেন চির গৌরবের।
তবে ব্যাপারটি শুভেন্দুর দোষ হিসেবে দেখার আগে তার বোকামো বা অজ্ঞতা হিসেবে দেখা উচিত, কেন না বর্তমান বিশ্বে কোন কিছুই আর ঘর কেন্দ্রিক নয়, গ্লোবালাইজেশনের এই সময়ে যে কোন কিছুই আলোচিত-সমালোচিত হতে পারে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে, সেই সূত্র ধরেই বলা যায় ভারতের সরকারি দলের একজন নেতার এ ধরনের মানবতা বিরোধী শিষ্টাচার বহির্ভূত বক্তব্য সহসাই সমালোচনায় ফেলতে পারে পুরো ভারতকে।
ফলে অন্তত ভদ্রতার কথা ভেবে হলেও ভারতেই শিক্ষিত নাগরিক সমাজের উচিত হবে শুভেন্দু অধিকারীর অভদ্র আচরণের প্রতিবাদ করা অথবা নিন্দা প্রদর্শন। তাতে করে এই অভদ্রতার দায় দেশ হিসেবে হয়ত ভারতকে গ্রহণ নাও করতে হতে পারে, বরং তা একান্তই বর্তাবে শুভেন্দুর ওপর, এবং তার পারিবারিক শিক্ষার ওপর।
মূলত ২৪ ডিসেম্বর বিকেলে জনসম্মুখে এক বক্তব্যে শুভেন্দু বলেন ‘বাংলাদেশীরা তো মশা-মাছির মতো, আমরা চাইলে তাদের মারিয়ে যেতে পারি যে কোন সময়, শুধু তাই নয় কলকাতায় প্রতিদিন যা আবর্জনা হয়, কার্গো বিমানে নিয়ে ফেললে ঢাকা পড়ে যাবে বাংলাদেশ।’
লেখক: অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট
আরটিভি/এএইচ
মন্তব্য করুন