স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে জরুরি চিকিৎসা সামগ্রী প্রদান রেড ক্রিসেন্টের
ডেঙ্গু, কলেরা এবং কোভিড-১৯ সহ বিভিন্ন সংক্রামক রোগ মোকাবিলায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে আনুষ্ঠানিকভাবে চিকিৎসা সামগ্রী প্রদান করেছে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি (বিডিআরসিএস)। জাপান সরকার এবং এশিয়া-ইউরোপ ফাউন্ডেশনের (এএসইএফ) অর্থায়নে বিডিআরসিএস এবং ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অফ রেড ক্রস অ্যান্ড রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিজের (আইএফআরসি) যৌথ পরিচালনায় স্টকপাইল বা মজুত সংগ্রহ প্রকল্পের আওতায় সারাদেশের হাসপাতালগুলোতে গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসা সামগ্রী সরবরাহের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবায় জরুরি অবস্থা ও ভবিষ্যত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার অংশ হিসেবে এই উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বিডিআরসিএস’র জাতীয় সদর দপ্তরে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাজমুল হোসেন এর কাছে চিকিৎসা সামগ্রী হস্তান্তর করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি, বিডিআরসিএসের মহাসচিব ড. কবির মো. আশরাফ আলম এনডিসি, আইএফআরসি’র এশিয়া প্যাসিফিক আঞ্চলিক পরিচালক আলেকজান্ডার ম্যাথিউ।
বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি বলেন, সাম্প্রতিক বন্যা বাংলাদেশের মানুষের ওপর দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলবে। আমি আশা করি, এই প্রকল্প বাংলাদেশ সরকার এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে দুর্যোগ ও সংক্রামক রোগ মোকাবিলার প্রস্তুতি গ্রহণে সহায়তা অব্যাহত রাখবে। জাপান এই পরিস্থিতির উন্নয়নে এবং বাংলাদেশিদের স্বাস্থ্য ও কল্যাণে সহায়তা অব্যাহত রাখবে, যা ১৯৭০ সালের পর থেকে চলমান রয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাজমুল হোসেন বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবায় বিডিআরসিএ‘র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার উপর জোর দিয়ে বলেন, চলতি বছরের শুরুতে বিডিআরসিএস ভিটিএম সহ ৭,৫০০ কোভিড-১৯ আরটি-পিসিআর কিট এবং ১০ হাজার র্যাপিড অ্যান্টিজেন কিট সরবরাহ করেছে, যা আমাদের করোনা শনাক্তকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। এছাড়াও সাম্প্রতিক দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের আকস্মিক বন্যায় বিডিআরসিএস স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনুরোধে দ্রুত সাড়া প্রদান করে ৫০ হাজার বোতল কলেরা স্যালাইন সরবরাহ করে, যার মধ্যে ২০ হাজার বোতল ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর ও কুমিল্লাসহ সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলোতে আমরা পাঠাতে সক্ষম হয়েছি।
সোসাইটির মহাসচিব ড. কবির মো. আশরাফ আলম বলেন, মজুদ সংগ্রহ প্রকল্পের আওতায় ইতোমধ্যে সারাদেশের হাসপাতালগুলোতে ১ লাখ বোতল কলেরা স্যালাইন, ডেঙ্গুর জন্য ৬০ হাজার কম্বো টেস্টিং কিট এবং স্যালাইন সলিউশনসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসা সামগ্রী বিতরণ করেছে। বর্তমান স্বাস্থ্যসেবায় জরুরি অবস্থা ও ভবিষ্যত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এই কার্যক্রম অত্যাবশ্যক।
বাংলাদেশে আইএফআরসি’র হেড অব ডেলিগেশন আলবার্তো বোকানেগ্রা স্টকপাইল প্রজেক্টের বৃহত্তর উদ্দেশ্যের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, হাসপাতালগুলোতে মেডিকেল ডিভাইস ও ব্যবহার্য সামগ্রী দিয়ে সুসজ্জিত করার মাধ্যমে তাৎক্ষণিক স্বাস্থ্য চাহিদার পূরণ এবং দীর্ঘমেয়াদী প্রস্তুতি উভয়ই মোকাবিলার জন্য এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে, আইএফআরসি বিভিন্ন জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা পরিচালনা এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্য স্থিতিস্থাপকতা জোরদার করার জন্য দেশের ক্ষমতা জোরদার করার লক্ষ্যে কাজ করে।
আরটিভি/এসএ/ডিসিএনই
মন্তব্য করুন