হঠাৎ মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বাসভবনে মির্জা ফখরুল
চায়ের আমন্ত্রণে যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত মেগান বোল্ডিনের বাসভবনে গিয়ে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) সকালে মির্জা ফখরুলের নেতৃত্বে ৩ সদস্যের প্রতিনিধি দল গুলশানে রাষ্ট্রদূতের বাসভবনে যান।
বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, চায়ের আমন্ত্রণে বিএনপির মহাসচিব ছাড়াও গেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটি সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ।
তবে তাদের মধ্যে কী ধরনের আলোচনা হয়েছে, এই বিষয়ে কিছু জানাতে পারেননি তিনি।
আরটিভি/এসএপি-টি
মন্তব্য করুন
দুই নেতাকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করল বিএনপি
সিলেট মহানগর বিএনপির ২ নেতাকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করেছে দলটি। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও দলের নীতি, আদর্শ ও সংহতি পরিপন্থী অনৈতিক কার্যকলাপের অভিযোগ থাকায় তাদের বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নিয়েছে বিএনপি।
সোমবার (১৪ অক্টোবর) সন্ধ্যায় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তাদেরকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের আদেশ দেওয়া হয়।
বহিষ্কৃত দুই নেতা হলেন, সিলেট মহানগরীর ২৫নং ওয়ার্ড কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. সোলেমান হোসেন সুমন এবং ২৬নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো.আবদুল মান্নান।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং দলের নীতি, আদর্শ ও সংহতি পরিপন্থী অনৈতিক কার্যকলাপের জন্য বিএনপির প্রাথমিক সদস্যসহ সকল পর্যায়ের পদ থেকে তাদের স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ১৪ অক্টোবর রাতে সিলেটের সিলেট-ঢাকা মহাসড়কে ভারতীয় চোরাই চিনির ট্রাক ছিনতাই চেষ্টা করে বহিষ্কৃত দুই নেতাসহ ৬ জন। এ সময় স্থানীয়রা তাদেরকে আটক করে পুলিশে দেয়।
আরটিভি নিউজ
সারজিস ও হাসনাতকে রংপুরে অবাঞ্ছিত ঘোষণা
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম ও হাসনাত আব্দুল্লাহকে রংপুরে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছেন জাতীয় পার্টির নেতা ও সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা।
সোমবার (১৪ অক্টোবর) রংপুর সেন্ট্রাল রোড জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে জেলা ও মহানগরের যৌথ সভায় তিনি এ ঘোষণা দেন।
জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, ‘জাতীয় পার্টিকে রাজনৈতিক সংলাপে না ডাকতে ফেসবুকে সারজিস আলম ও হাসনাত আব্দুল্লাহ যে ঘোষণা দিয়েছে- তারা রংপুরে আসতে পারবে না। যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে এই রংপুরের পার্টি অফিসে বসে থাকবেন। আমরা দেখিয়ে দিতে চাই, রংপুরে জাতীয় পার্টির শক্তি কতটুকু। যদি এই আন্দোলনকে আমরা জনস্রোত করতে না পারি তাহলে জাতীয় পার্টি থেকে নাকে খত দিয়ে চলে যাবো।’
ফেসবুকে সারজিস ও হাসনাতের লেখার ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘রংপুরের মাটিতে সারজিস আলম এবং হাসনাত আব্দুল্লাহর কোনও প্রোগ্রাম হতে দেওয়া হবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই বক্তব্যের মাধ্যমে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, ডিআইজি, পুলিশ কমিশনার- আপনাদেরকে জানিয়ে দিতে চাই, জাতীয় পার্টিকে বাদ দিয়ে কোনও আলোচনা নয়। রংপুরে কোনও রাজনৈতিক সংলাপে যদি জাতীয় পার্টিকে ডাকা না হয়, সম্মান দেওয়া না হয়- তাহলে জাতীয় পার্টি নিজেই অধিকার আদায় করে নেবে। এর জন্য আপনারা প্রস্তুত থাকবেন।’
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে নির্বাচনসহ বিভিন্ন ইস্যুতে সংলাপ করছেন। এর মধ্যে জাতীয় পার্টির সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার সংলাপ প্রসঙ্গে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম ও হাসনাত আব্দুল্লাহ।
গত ৭ অক্টোবর দিবাগত মধ্যরাতে নিজ নিজ ফেসবুক পেজে এই বিষয়ে পোস্ট দিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা।
পোস্টে সারজিস আলম লিখেছিলেন, ‘জাতীয় পার্টির মতো মেরুদণ্ডহীন ফ্যাসিস্টের দালালদের প্রধান উপদেষ্টা কিভাবে আলোচনায় ডাকে?’
হাসনাত লিখেছিলেন, ‘স্বৈরাচারের দোসর জাতীয় পার্টিকে সংলাপে আমন্ত্রণ জানানো হলে, আমরা সেই আত্মঘাতী সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ ও কঠোর বিরোধিতা করব।’
আরটিভি/এসএপি
হাসনাত-সারজিসকে রংপুরে অবাঞ্ছিত ঘোষণার প্রতিবাদে জাপাকে আল্টিমেটাম
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় দুই সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সারজিস আলমকে রংপুরে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে রোষের মুখে পড়েছে জাতীয় পার্টি (জাপা)। অবিলম্বে ক্ষমা চেয়ে দলটিকে বক্তব্য প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছেন রংপুরের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও সমর্থকরা। তেমনটি না করলে জাতীয় পার্টির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলার হুঁশিয়ারিও দিয়েছে তারা।
মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) মধ্যরাতে রংপুর নগরীর মেডিকেল মোড় থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও সমর্থকরা। এ সময় মিছিল থেকে বিভিন্ন স্লোগান দেন তারা। মিছিল নিয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে আয়োজন হয় প্রতিবাদ সমাবেশের, যেখানে জাতীয় পার্টিকে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়ে আল্টিমেটাম দেন বিক্ষোভকারীরা।
সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধিরা বলেন, ছাত্র-জনতার মুক্তির লড়াই চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান। অসংখ্য প্ৰাণ আর ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত এই আন্দোলনে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলা সবার মুক্তির প্লাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। সারজিস আলম, হাসনাত আব্দুল্লাহরা চব্বিশ বিপ্লবের নায়ক, তাদের অবাঞ্ছিত করার এখতিয়ার জাতীয় পার্টির নেই।
প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রংপুরের প্রতিনিধি ইমরান আহমেদ, মোতাওয়াক্কীল বিল্লাহ শাহ্ ফকির, ইমতিয়াজ আহমেদ প্রমুখ।
এর আগে, সোমবার (১৪ অক্টোবর) রাতে রংপুর মহানগর ও জেলা জাতীয় পার্টির যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভা থেকে রংপুরে সারজিস আলম ও হাসনাত আব্দুল্লাহকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও রংপুর সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা।
দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, জাতীয় পার্টিকে রাজনৈতিক সংলাপে না ডাকতে ফেসবুকে সারজিস আলম ও হাসনাত আব্দুল্লাহ যে ঘোষণা দিয়েছে, সেজন্য তারা রংপুরে আসতে পারবে না। যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে এই রংপুরের পার্টি অফিসে বসে থাকবেন। আমরা দেখিয়ে দিতে চাই, রংপুরে জাতীয় পার্টির শক্তি কতটুকু। যদি এই আন্দোলনকে আমরা জনস্রোতে রূপান্তরিত করতে না পারি তাহলে জাতীয় পার্টি থেকে নাকে খত দিয়ে চলে যাবো।
সারজিস ও হাসনাতের ফেসবুক পোস্টের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করে সাবেক মেয়র বলেন, রংপুরের মাটিতে সারজিস আলম এবং হাসনাত আব্দুল্লাহর কোনও প্রোগ্রাম হতে দেওয়া হবে না।
মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা আরও বলেন, এই বক্তব্যের মাধ্যমে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, ডিআইজি, পুলিশ কমিশনার- আপনাদেরকে জানিয়ে দিতে চাই, জাতীয় পার্টিকে বাদ দিয়ে কোনও আলোচনা নয়। রংপুরে কোনও রাজনৈতিক সংলাপে যদি জাতীয় পার্টিকে ডাকা না হয়, সম্মান দেওয়া না হয়, তাহলে জাতীয় পার্টি নিজেই অধিকার আদায় করে নেবে। এর জন্য আপনারা প্রস্তুত থাকবেন।
প্রসঙ্গত, দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে নির্বাচনসহ বিভিন্ন ইস্যুতে সংলাপ করছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, যেখানে এখন পর্যন্ত ডাকা হয়নি জাতীয় পার্টিকে। এ অবস্থায় পরবর্তী সংলাপগুলোতে জাতীয় পার্টিকে আমন্ত্রণ জানানো প্রসঙ্গে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম ও হাসনাত আব্দুল্লাহ। গত ৮ অক্টোবর মধ্যরাতে নিজ নিজ ফেসবুক পেজে এই বিষয়ে পোস্ট দিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা।
ফেসবুকে সারজিস আলম লিখেছিলেন, জাতীয় পার্টির মতো মেরুদণ্ডহীন ফ্যাসিস্টের দালালদের প্রধান উপদেষ্টা কিভাবে আলোচনায় ডাকে?
আর হাসনাত লিখেছিলেন, স্বৈরাচারের দোসর জাতীয় পার্টিকে সংলাপে আমন্ত্রণ জানানো হলে, আমরা সেই আত্মঘাতী সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ ও কঠোর বিরোধিতা করব।’
আরটিভি/এসএইচএম-টি
বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ মতিয়া চৌধুরী আর নেই
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ বেগম মতিয়া চৌধুরী মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
বুধবার (১৬ অক্টোবর) দুপুর ১টার দিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
এভারকেয়ার হাসপাতালের মহাব্যবস্থাপক আরিফ মাহমুদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, কার্ডিয়াক অ্যারেস্টে আক্রান্ত হলে সকালে মতিয়া চৌধুরীকে হাসপাতালে আনা হয়। এরপরই আমরা ইসিজি করে চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু করি। শেষ পর্যন্ত আমরা সব ধরনের চেষ্টা করেছি। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত সফল হতে পারিনি। দুপুর ১২টা ৫৭ মিনিটে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
মতিয়া চৌধুরীরর পরিবারের এক সদস্য জানিয়েছেন, তিনি দীর্ঘদিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। মাঝে তাকে বাসায় আনা হয়েছিল। কিন্তু শারীরিক জটিলতা দেখা দেওয়ায় আবার এভার কেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
১৯৪২ সালের ৩০ জুন মতিয়া চৌধুরী পিরোজপুর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মহিউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা এবং মা নুরজাহান বেগম ছিলেন গৃহিণী। ব্যক্তিজীবনে ১৯৬৪ সালের ১৮ জুন খ্যাতিমান সাংবাদিক বজলুর রহমানের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।
তিনি শেরপুর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য। তার রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় বামপন্থী রাজনীতি দিয়ে। তিনি ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ)-এর সদস্য ছিলেন, পরবর্তীতে আওয়ামী লীগে যোগ দেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে বিশেষ অবদানের জন্য ২০২১ সালে বাংলা একাডেমি তাকে সম্মানসূচক ফেলোশিপ প্রদান করে।
ইডেন কলেজে অধ্যয়নরত অবস্থায় ছাত্র রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন মতিয়া চৌধুরী। ১৯৬৫ সালে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি নির্বাচিত হন তিনি। ১৯৬৭ সালে ‘অগ্নিকন্যা’ নামে পরিচিত মতিয়া পূর্ব পাকিস্তান ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টিতে যোগ দেন এবং এর কার্যকরী কমিটির সদস্য হন। ১৯৭০ ও ১৯৭১-এর মাঝামাঝি সময়ে তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম, প্রচারণা, তদবির এবং আহতদের শুশ্রূষায় সক্রিয় অংশ নিয়েছিলেন।
১৯৭১ সালে তিনি আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হয়েছিলেন। রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের সময়কালে তিনি বেশ কয়েকবার গ্রেপ্তারও হন।
১৯৯৬ ও ২০০৯ এবং ২০১৩ সালে আওয়ামী লীগ শাসনামলে কৃষিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ তিনি আওয়ামী লীগের ১নং প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে পর পুনরায় তিনি ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে জাতীয় সংসদের সংসদ উপনেতা হিসেবে দায়িত্ব নেন।
এ বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে সাবেক প্রধানন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত করলে তিনি সংসদ সদস্য পদ হারান।
আরটিভি/টিআই
জাতীয় পার্টি বৈষম্যের শিকার: জি এম কাদের
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সর্বাত্মক সমর্থন ও সক্রিয়ভাবে অংশ নেওয়ার পরও জাতীয় পার্টি বৈষম্যের শিকার বলে মন্তব্য করেছেন দলটির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের। তিনি বলেন, এখন নির্বিচারে দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) দুপুরে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয়ে দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্যদের এক সভায় তিনি এ কথা বলেন।
জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান বলেন, ছাত্রদের আন্দোলনে আমরা সমর্থন দিয়েছি, আমাদের নেতাকর্মীরা অংশ নিয়ে হামলা-মামলার শিকার হয়ে জেল খেটেছে, সেই আন্দোলনের হত্যা মামলায় জাতীয় পার্টি নেতা-আসামি করা হচ্ছে। এই অন্যায় মেনে নেওয়া হবে না। আমরা রাজপথে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদ করবো।
তিনি আরও বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে জাতীয় পার্টি নেতাকর্মীরা রক্ত দিয়েছে। এখন মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাদের সঙ্গে অবিচার করা হচ্ছে। মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির বিরুদ্ধে প্রয়োজনে রক্ত দিয়ে এর প্রতিবাদ করা হবে।
জি এম কাদের বলেন, গত ১ জুলাই ছাত্ররা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন শুরু করলে আমি ৩ জুলাই সংসদে তখনকার প্রধানমন্ত্রীর সামনে ছাত্র আন্দোলনে সমর্থন দিয়ে বক্তৃতা করেছি। বক্তৃতায় আমি বলেছি, ছাত্রদের এই আন্দোলন যৌক্তিক। চাকরিতে কোটা পদ্ধতি সংবিধান পরিপন্থী। বৈষম্যের বিরুদ্ধে দেশের মানুষ যেকোনো ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত। ৬ জুলাই গাজীপুরে জাতীয় পার্টির কাউন্সিলে বক্তৃতায় আমি বলেছি, চাকরিতে কোটা পদ্ধতি মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা যুদ্ধের চেতনা পরিপন্থী। তখন আমি বলেছিলাম, চাকরিতে কোটা পদ্ধতি হচ্ছে বৈষম্য।’
জুলাইয়ে আন্দোলনের সমন্বয়কদের আটক করা হলে মুক্তির দাবি তোলার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ছাত্র আন্দোলনে যখন গুলি চালানো হলো, আমরা এর প্রতিবাদ করেছি। প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি করেছি আমরা।
আরটিভি/এআর/এসএ
রাষ্ট্রপতির অপসারণ চায় না বিএনপি: সালাহউদ্দিন
এই মুহূর্তে রাষ্ট্রপতির অপসারণ বিএনপি চায় না বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ।
বুধবার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে বিএনপির গুলশান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, রাষ্ট্রপতি পদ শূন্য হলে সাংবিধানিক সংকট তৈরি হবে। এতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন বিলম্বিত হবে। তাই এই মুহূর্তে রাষ্ট্রপতির অপসারণ বিএনপি চায় না।
তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতি পদে শূন্যতা রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক সংকট সৃষ্টি করবে। যা দেশে গণতন্ত্র উত্তরণের পথ বাধাগ্রস্ত করবে। সুতরাং ফ্যাসিবাদের দোসররা যেন কোনো ষড়যন্ত্র করতে না পারে সেজন্য সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।
এদিকে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগের বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। বুধবার প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে গণমাধ্যমকে তিনি এ কথা জানান।
রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের বিষয়ে জানতে চাইলে শফিকুল আলম বলেন, ‘যারা (এই দাবিতে) বিক্ষোভ করছেন তাদের আমরা বারবার বলছি, তারা যেন বঙ্গভবনের আশপাশ থেকে সরে যান। মঙ্গলবার থেকে বঙ্গভবনের আশপাশের নিরাপত্তাও বাড়ানো হয়েছে। এ ছাড়া রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি।’
রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবিতে মঙ্গলবার সাত দিনের আল্টিমেটাম দেওয়া হয়েছে এবং সেখানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারাও ছিলেন। এ প্রসঙ্গে সরকারের অবস্থান জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যারা এই আল্টিমেটাম দিচ্ছেন, তাদেরকে এ প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করবেন।’
পদত্যাগের এই দাবিকে সরকার কীভাবে দেখছে- এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব বলেন, ‘অনেক ধরনের দাবি অনেক জায়গায় তৈরি হয়। সবগুলো তো আমরা এড্রেস করি না।’
আরটিভি/এফএ/এআর
বিদেশি নাগরিক হয়ে রাষ্ট্রপতি হওয়া দণ্ডনীয় অপরাধ: রিপন
বার্বাডোজের নাগরিক হয়ে মো. সাহাবুদ্দিন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হয়ে দণ্ডনীয় অপরাধ করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ড. আসাদুজ্জামান রিপন।
বুধবার (২৩ অক্টোবর) ইতালির বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আমিনুর রহমান সালামের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে ‘সংবর্ধনা ও সাংবাদিকতার বিকাশে জিয়াউর রহমানের অবদান’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
আসাদুজ্জামান রিপন বলেছেন, মো. সাহাবুদ্দিন বার্বাডোজের নাগরিক। অন্য দেশের নাগরিক হয়ে তিনি কীভাবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হন? এটা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। এর জন্য তার শাস্তি হওয়া উচিত।
তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগ করা উচিত। তার এ পদে থাকার যোগ্যতা নেই। তিনি আপাদমস্তক একটা দুর্নীতিবাজ লোক।
বিএনপির এই নেতা বলেন, সাহাবুদ্দিন দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান ছিলেন। পদ্মা সেতুর দুর্নীতি ঢাকতেই তাকে সে সময় ওখানে বসানো হয়েছিল। পরে তাকে ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান করা হয়। এরপর সাহাবুদ্দিনকে যখন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি করা হয়, তখন সবাই আশ্চর্য হয়ে গেলেন।
শেখ হাসিনার পদত্যাগের বিষয়ে রিপন বলেন, তিনি তো মানুষের ভোটে নির্বাচিত হননি। তাই উনি পদত্যাগ করলেন কি করলেন না সেটা নিয়ে আলোচনার কিছু নেই। বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা ওনাকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করেছেন।
তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্রপতি তিন বাহিনীর প্রধানকে পেছনে রেখে ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন। তাকে পদত্যাগপত্র দেওয়া হয়েছিল। এখন আড়াই মাস পর এসে সাহাবুদ্দিন বললেন ওনি পদত্যাগপত্র পাননি। এর মধ্যে নিশ্চই কোনো উদ্দেশ্য আছে।
আরটিভি/আরএ/এসএ