ক্রীড়া উপদেষ্টার প্রেস সচিবের বিরুদ্ধে বিসিবি সভাপতির সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা হিসেবে আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার শপথ নেওয়ার পর তার প্রেস সচিব হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন মাহফুজুল আলম। এর আগে দেশের একমাত্র স্পোর্টস ভিক্তিক টেলিভিশন টি-স্পোর্টসে উপস্থাপক এবং রিপোর্টার হিসেবে কাজ করতেন তিনি। এবার বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) দেশের শীর্ষ একটি দৈনিক গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।
গত ৩০ ডিসেম্বর ফরচুন বরিশাল ও দুর্বার রাজশাহীর ম্যাচ দিয়ে পর্দা উঠেছে এবারের বিপিএলের। কিন্তু টিকিট না পাওয়ায় সেদিন স্টেডিয়ামের গেট ভাঙচুরসহ বেশ কয়েকটি আপত্তিকর ঘটনা ঘটে। এই জন্য সেদিন প্রেসিডেন্ট বক্সে ফারুক আহমেদের সঙ্গে কথা বলছিলেন মাহফুজ এবং তার সঙ্গে থাকা যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের আরও কয়েকজন কর্মকর্তা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে সেদিন প্রেসিডেন্ট বক্সে টিকিট নিয়ে বিশৃঙ্খলা, গ্যালারিতে আবু সাঈদ কর্নার ও দর্শকদের বিনা মূল্য পানি পানের জন্য মুগ্ধ কর্নারের প্রস্তুতিতে দেরি এবং জুলাই–আগস্টের আন্দোলনে আহত ১০০ জনের সৌজন্য টিকিট পেতে দেরি হওয়া নিয়ে বোর্ড সভাপতির কাছে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেন ক্রীড়া উপদেষ্টার প্রেস সচিব।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত একাধিক প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে গণমাধ্যমটি জানিয়েছে, বিসিবি সভাপতি নিজেও এসব অব্যবস্থাপনা নিয়ে বিরক্ত ছিলেন। তবু কথোপকথনের একপর্যায়ে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টার প্রেস সচিব মাহফুজ উত্তেজিত হয়ে ফারুক আহমেদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন। ফারুককে তিনি এমনও বলেন, ‘আপনি কীভাবে বিসিবি প্রেসিডেন্ট হয়েছেন, তা আমাদের জানা আছে।’
জানা গেছে এ সময় সেখানে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা ছাড়াও ছিলেন বিপিএলের টাইটেল স্পনসর ডাচ্–বাংলা ব্যাংকের শীর্ষস্থানীয় কর্মকতারা, ছিলেন বিসিবির লোকজনও। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মাহফুজ। গণমাধ্যমটিকে তিনি বলেন, বিপিএলের এক দিন আগে দুপুর পর্যন্ত মানুষ জানে না, কীভাবে টিকিট কাটবে। খেলা যখন শুরু হলো, তখনো শহীদ আবু সাঈদ স্ট্যান্ডের ব্যানার লাগানো হয়নি। এমসি অনুষ্ঠান শুরু করে দিয়েছে, তখনও পাখি খাঁচার মধ্যে আনা হয়নি—এ রকম অনেক অব্যবস্থাপনা আমাদের চোখে পড়ল।
‘তা ছাড়া টিকিট ইস্যুতে গেট ভাঙা ন্যক্কারজনক ঘটনা। এসব নিয়েই আমাদের মধ্যে কথা হচ্ছিল। এ রকম প্রত্যাশিত ছিল না। সবকিছু আরও ভালো হতে পারত। এসব অব্যস্থাপনার জন্য মানুষের গালাগাল শুনেছেন ক্রীড়া উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টা।’
ক্রীড়া উপদেষ্টার প্রেস সচিব হিসেবে বিসিবি সভাপতির কাছে এসব বিষয়ে জানতে চাওয়াটা তাঁর এখতিয়ারের মধ্যে পড়ে কি না, এই প্রশ্নে মাহফুজ বলেন, শুধু আমি নই, সেখানে যারা ছিলাম, সবাই এর (বিপিএল আয়োজন) সঙ্গে সম্পৃক্ত। পদ–পদবি কোনো বিষয় নয়। এবারের বিপিএল বাস্তবায়ন করার ক্ষেত্রে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে শুরু করে যতগুলো মিটিং হয়েছে, সেখানে এই মানুষগুলো উপস্থিত ছিলেন।
বিসিবি সভাপতির সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ অস্বীকার করে মাহফুজ বলেন, উত্তপ্ত কিছু হয়নি। স্বাভাবিক কথাবার্তা হয়েছে। দুই পক্ষই আবেগপ্রবণ হয়ে কথা বলেছে। এমন কিছু হয়নি, যেটা অপ্রীতিকর। ‘আপনি কীভাবে বিসিবি প্রেসিডেন্ট হয়েছেন, তা আমাদের জানা আছে’ এ রকম কিছু বলেননি বলেও দাবি করেছেন মাহফুজ।
জানা গেছে, প্রেসিডেন্ট বক্সে দাঁড়িয়ে পুরো ঘটনা মোবাইলে ভিডিও করেন মাহফুজের সঙ্গে থাকা এক ব্যক্তি। বিসিবির লোকজন তা দেখে ফেলার পর তাৎক্ষণিকভাবে তাঁর কাছ থেকে মোবাইল ফোন নিয়ে সেটি রিমুভ করে আবার তাকে ফেরত দেওয়া হয়।
ভিডিও করা ব্যক্তি প্রেসিডেন্ট বক্সে প্রবেশ করেছিলেন নির্ধারিত পাস ছাড়া। শৃঙ্খলাভঙ্গের অপরাধে বিসিবি তাকে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে আজীবনের জন্য নিষিদ্ধ করেছে।
আরটিভি/ এসআর
মন্তব্য করুন