• ঢাকা মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
logo
সাইবার হামলার ঝুঁকিতে অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনের বিরাট অংশ
অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমে চলা স্মার্টফোনগুলোর বিরাট একটা অংশ সাইবার হামলার ঝুঁকিতে আছে বলে সতর্ক করেছেন তথ্যপ্রযুক্তি নিরাপত্তা সংক্রান্ত গবেষকেরা। মূলত, কোয়ালকমের অন্তত ৬৪টি মডেলের প্রসেসরে নিরাপত্তাত্রুটির সন্ধান পেয়েছেন তারা, যা কাজে লাগিয়ে সহজেই সাইবার হামলা চালানো সম্ভব বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন তারা।   নিজেদের প্রসেসরে থাকা নিরাপত্তাত্রুটির বিষয়টি স্বীকার করেছে কোয়ালকম কর্তৃপক্ষও। তারা জানিয়েছে, অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনে ব্যবহৃত কোয়ালকমের তৈরি বিভিন্ন সংস্করণের প্রসেসরে সিভিই-২০২৪-৪৩০৪৭ নামের জিরো ডে নিরাপত্তাত্রুটির সন্ধান পাওয়া গেছে। প্রসঙ্গত, নিরাপত্তা প্যাঁচ উন্মুক্তের আগে হ্যাকাররা যদি সেই ত্রুটি ব্যবহার করতে পারে, তখন সেটিকে জিরো ডে নিরাপত্তাত্রুটি বলা হয়। কোয়ালকমের তৈরি প্রসেসর যেহেতু বেশিরভাগ অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনে ব্যবহার করা হয়, তাই এই জিরো ডে নিরাপত্তাত্রুটির কারণে অনেক অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারী সাইবার হামলার শঙ্কায় রয়েছেন।  অবশ্য গুগল থ্রেট অ্যানালাইসিস গ্রুপ (টিএজি) জানিয়েছে, এই জিরো ডে নিরাপত্তাত্রুটি কাজে লাগিয়ে হ্যাকাররা নির্দিষ্ট কিছু ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে লক্ষ্য করে সাইবার হামলা চালানোর চেষ্টা করছে। ফলে সাধারণ অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীদের ওপর হামলার শঙ্কা নেই। কোয়ালকমের তথ্যমতে, ৬৪টি মডেলের প্রসেসরে এই নিরাপত্তাত্রুটির সন্ধান পাওয়া গেছে। স্ন্যাপড্রাগন ৮ জেন ১ ও স্ন্যাপড্রাগন ৮৮৮+ প্রসেসরের পাশাপাশি নিরাপত্তাত্রুটি থাকা জনপ্রিয় প্রসেসরের তালিকায় স্ন্যাপড্রাগন ৬৬০ ও স্ন্যাপড্রাগন ৬৮০–এর মতো প্রসেসরও আছে। স্মার্টফোনের প্রসেসর ছাড়াও ওয়াই–ফাই এবং ফাইভ–জির জন্য ব্যবহৃত কোয়ালকমের ফাস্টকানেক্ট ৬৭০০, ৬৮০০, ৬৯০০ ও ৭৮০০ মডেমের মডিউলে এই নিরাপত্তাত্রুটির সন্ধান পাওয়া গেছে। কোয়ালকমের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, সেপ্টেম্বর মাসে নিরাপত্তাত্রুটির সমাধান উন্মুক্ত করা হয়েছে। এখন স্মার্টফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের সফটওয়্যারে এই নিরাপত্তা প্যাঁচ যুক্ত করে সিকিউরিটি আপডেট হিসেবে ব্যবহারকারীদের জন্য প্রকাশ করতে হবে। পরবর্তী নিরাপত্তা হালনাগাদে এ ত্রুটির সমাধান পেতে পারেন ব্যবহারকারীরা। আরটিভি/এসএইচএম/এআর  
১৩ অক্টোবর ২০২৪, ২২:৪৭

ধনী রাষ্ট্রে প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে স্থূলতা ঝুঁকি ১৪ শতাংশ বেশি: গবেষণা
বিশ্বজুড়ে স্থূলতা, অতিরিক্ত ওজনের সমস্যা প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এটি কেবল শারীরিক স্বাস্থ্যের জন্য নয়, সামগ্রিক জনস্বাস্থ্য এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্যও বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে। সম্প্রতি প্রকাশিত একটি গবেষণায় অর্থনৈতিক অবস্থার সঙ্গে স্থূলতার সম্পর্ক নিয়ে বিশদ বিশ্লেষণ করা হয়েছে। যেখানে উদ্বেগজনক কিছু তথ্য উঠে এসেছে। গবেষণাটি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার স্টেপস্ (STEPS) জরিপের তথ্যের ভিত্তিতে পরিচালিত হয় এবং এতে দেখা গেছে, বিশ্বব্যাপী অতিরিক্ত ওজন ও স্থূলতার গড় প্রাদুর্ভাব প্রায় ৩৭ শতাংশ। তবে উচ্চ আয়ের দেশগুলোতে এই হার উদ্বেগজনকভাবে ৬০ শতাংশেরও বেশি, যেখানে নিম্ন আয়ের দেশগুলোতে তুলনামূলকভাবে কম। গবেষকরা বলছেন, অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি এবং জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধির সঙ্গে মানুষের খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আসে, যা অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতার ঝুঁকি বাড়ায়। গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে, অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতির সঙ্গে অতিরিক্ত ওজন ও স্থূলতার ঝুঁকি প্রায় ১৪ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। এটি পরিষ্কারভাবে ইঙ্গিত দেয় যে, উন্নত জীবনযাত্রার সুযোগ থাকা সত্ত্বেও অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস এবং শারীরিক পরিশ্রমের অভাব স্থূলতার মূল কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম। গবেষণার ফলাফলে দেখা যায়, আমেরিকান সামোয়া স্থূলতার সর্বাধিক হারের (৯৩ দশমিক ৫ শতাংশ) দেশ হিসেবে শীর্ষে রয়েছে, যেখানে উত্তর কোরিয়ায় স্থূলতার হার সবচেয়ে কম (৪ দশমিক ৪ শতাংশ)। অর্থনৈতিক অবস্থার পার্থক্যই এই বৈষম্যের মূল কারণ হিসেবে দেখা যাচ্ছে। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে সুলভ ও উচ্চ-ক্যালোরি খাবারের সহজলভ্যতা এবং প্রযুক্তিগত উন্নয়নের কারণে শারীরিক পরিশ্রমের অভাবও স্থূলতার সমস্যা বাড়িয়ে তুলেছে। অন্যদিকে, নিম্ন আয়ের দেশগুলোতে স্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণের হার তুলনামূলকভাবে বেশি হলেও অর্থনৈতিক সংকটের কারণে খাদ্য নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যসেবার অপ্রতুলতাও লক্ষণীয়। জনস্বাস্থ্য গবেষক মোহাম্মদ মেসবাহউর রহমান বলেন, স্থূলতা এবং অতিরিক্ত ওজনের সমস্যা সমাধানে বৈশ্বিক সচেতনতা বৃদ্ধি ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি। সঠিক খাদ্যাভ্যাস, শারীরিক কার্যকলাপ এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা কার্যক্রমের মাধ্যমে এই সমস্যা প্রতিরোধ করা যেতে পারে। তিনি আরও বলেন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন কেবল স্থূলতা বৃদ্ধি নয়, বরং স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রার সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে, যদি সঠিক পরিকল্পনা এবং কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়। গবেষণাপত্রটি দ্য গ্লোবাল বার্ডেন অব ওভারওয়েট-ওবেসিটি অ্যান্ড ইটস অ্যাসোসিয়েশন উইথ ইকোনমিক স্ট্যাটাস, বেনিফিটিং ফ্রম ‘স্টেপস’ সার্ভে অব ডব্লিউএইচও মেম্বার স্টেটস: অ্যা মেটা অ্যানালাইসিস শিরোনামে ‘প্রিভেন্টিভ মেডিসিন্স রিপোর্ট’- এ সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে।  মোহাম্মদ মেসবাহউর রহমানের তত্ত্বাবধানে এই গবেষণায় যুক্ত ছিলেন নিপসমের শিক্ষক ডাক্তার শামসুল ইসলাম, ডাক্তার হাফিজা সুলতানা, ডাক্তার নাজমুল হাসান রিফাত এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পরিচালক জাকি ফারহানা। আরটিভি/এমকে/এআর
০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১৭:১৮

ঝুঁকিপূর্ণ সেতু দিয়ে পথচারীদের চলাচল, উঠতে পারছে না যানবাহন
গত তিনবছর যাবত ঝুঁকিপূর্ণ আয়রন সেতু দিয়ে চলাচল করছে পথচারীরা। যে কোন মুহূর্তে ধসে পড়ে ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। স্থানীয়রা দুর্ঘটনায় এড়াতে দুপাশে দিয়েছে গাছের বেড়া। যাতে সেতুতে ভুলে কোন যানবাহন উঠতে না পারে। সেতুটি অপসারণ করে নতুন গাডার ব্রিজ নির্মাণের দাবি এলাকাবাসীর। সরেজমিন ঘুরে জানা গেছে, পটুয়াখালীল মহিপুর থানার লতাচাপলী ইউনিয়নের তাহেরপুর ও আজিমপুর গ্রামের মাঝখান দিয়ে প্রবাহিত লক্ষ্মিরখালের ওপর ২০০১ সালে নির্মিত হয় একটি আয়রন সেতু। দুই যুগ না পেরোতেই চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে সেতুটি। দুর্ঘটনা এড়াতে স্থানীয়রা ব্রিজের দু’পাশে গাছের বেড়া দিয়েছেন। যাতে সেতুতে ভুলেও কোনো যানবাহন উঠতে না পারে। ব্রিজের মূল অংশের অবকাঠামো ধ্বসে পড়েছে। মরিচা ধরে নষ্ট হয়ে গেছে নিচের লোহার অ্যাঙ্গেলগুলো। কাঠের তত্ত্ব দ্বারা কোনোমতে জোড়াতালি দিয়ে মানুষ পারাপার হচ্ছে। তাহেরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও আজিমপুর একে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছে। চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন দুপাড়ের দশ গ্রামের কয়েক হাজার কৃষক। তাদের উৎপাদিত ফসল নিতে পারছেন না বাজারে। দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে কুয়াকাটায় বেড়াতে আসা পর্যটকসহ অসুস্থ রোগীদের। তাহেরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আবুল বাশার হাওলাদার বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সেতুটি গুরুত্বপূর্ণ থাকলেও এটি অপসারণ কিংবা নতুন ব্রিজ নির্মাণের কোন উদ্যোগ দেখছি না। আমিও প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে এই সেতু পার হয়ে বিদ্যালয় আসছি। আজিমপুর একে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র রাকিবুল ইসলাম বলেন, প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে আমাদের। ‌সেটাতে উঠলেই ভয় করে। কখন দুর্ঘটনা ঘটে বলা যাচ্ছে না। স্থানীয়রা জানান, ব্রিজটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় এর দু'পাশে বেড়া দিয়ে আটকে দেয়া হয়েছে, যাতে লোকজন হেঁটে পার হলেও গাড়ি চলাচল করতে না পারে। গাড়ি পারাপার বন্ধ না থাকলে এতদিনে ধসে যেতো বলে মনে করছেন তারা। তবে এভাবে বেশিদিন থাকলে হয়তো আকস্মিক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এটি অপসারণ করে শীঘ্রই একটি গার্ডার সেতু নির্মাণের দাবি এলাকাবাসীর। স্থানীয় বাসিন্দা আল-আমিন হোসেন নীরব বলেন, আমরা দুর্ঘটনায় এড়াতে দু'পাশে গাছের বেড়া দিয়ে রেখেছি। গাড়ি চলাচল করলে এতদিনে ধসে পড়ত। কাঠের তক্তা দিয়ে কয়েকবার জোড়াতালি দিয়েছি। এখন আর জোড়াতালি দেয়াও সম্ভব হচ্ছে না। কলাপাড়া উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) কাজী ফয়সাল বারী পূর্ণ অচিরেই নতুন ব্রিজ নির্মাণের আশ্বাস দিয়ে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁকিপূর্ণ থাকা এ সেতুটির বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। এ ব্যাপারে কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলাম বলেন, ব্রিজটি নির্মাণের জন্য ইতোমধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে। স্বল্প সময়ের মধ্যে নতুন ব্রিজ নির্মাণ করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।  আরটিভি/এএএ   
০১ অক্টোবর ২০২৪, ২২:৩৬

আতঙ্ক ছড়াচ্ছে ডেঙ্গু, উচ্চঝুঁকিতে ঢাকাসহ ১৮ জেলা 
দেশব্যাপী ফের আতঙ্ক ছড়াচ্ছে ডেঙ্গু। একদিকে যেমন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের হার, তেমনি প্রতিদিনই স্বজনহারা হচ্ছেন কেউ না কেউ। সবশেষ ২৪ ঘণ্টায়ও মশাবাহিত রোগটি দুজনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এই সময়ে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ৮৬৬ জন। সব মিলিয়ে চলতি বছর এখন পর্যন্ত ১৩৩ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে ডেঙ্গু। আক্রান্তের সংখ্যাও এরই মধ্যে ২৫ হাজার ছুঁই ছুঁই। এই যখন পরিস্থিতি, তখন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পরিস্থিতি শিগগিরই নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে আসছে অক্টোবরে আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করবে ডেঙ্গুর প্রকোপ। বিশেষ করে ঢাকা ও ঢাকার বাইরে ১৮টি জেলা উচ্চঝুঁকিতে আছে বলে জানাচ্ছেন তারা। সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, গত আগস্টে পুরো মাসে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ৬ হাজার ৫২১ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী, যেখানে প্রাণহানি ঘটেছে ২৭ জনের। চলতি মাসের ২৩ দিনেই প্রায় দ্বিগুণ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে মশাবাহিত রোগটিতে আক্রান্ত হয়ে। এখন পর্যন্ত ১২ হাজার ৩২ ডেঙ্গু আক্রান্তের হিসাব পাওয়া গেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট থেকে। এই ২৩ দিনে ডেঙ্গুতে প্রাণ হারিয়েছেন ৫০ জন। যাদের ২৫ জনই মারা গেছেন শেষ ৭ দিনে। এ ছাড়া গত ১০ দিনে মৃত্যুহীন দিন যায়নি একটিও।  এবার মৌসুম শুরুর পর থেকে ডেঙ্গুর সংক্রমণ বৃদ্ধির পেছনে কয়েকটি বিষয়কে দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভোগাচ্ছে মশকনিধনে প্রস্তুতির অভাব। বলা হচ্ছে, গণ-আন্দোলনের সময় সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন আঞ্চলিক অফিসে হামলার ঘটনায় একদিকে যেমন অনেক যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে গেছে, তেমনি পরিবর্তিত রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এখনও যথাযথভাবে গুছিয়ে উঠতে পারেনি প্রশাসন। স্বল্প সময়ে যে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে তা নিয়েও দেখা দিয়েছে প্রশ্ন।  স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, ২০২৩ সালে প্রাণ কেড়ে নেওয়াতে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছিলে ডেঙ্গু। ১ হাজার ৭০৫ জনের মৃত্যু হয়েছে ওই বছর। তার আগের বছর ২০২২ সালে ডেঙ্গুতে মৃত্যুর সংখ্যা ছিলে ৮৬৮। আর চলতি বছর বর্ষা মৌসুম শুরু পর থেকেই ধীরে ধীরে বাড়তে শুরু করেছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার। যদিও পরিস্থিতি এখন পর্যন্ত অতটা নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়েনি, তবুও দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া না গেলে ডেঙ্গুর প্রকোপে লাগাম টানা মুশকিলই হবে বলে ধারণা করছেন স্বাস্থ্য চিকিৎসা সংশ্লিষ্টরা।    চলতি বছর ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে। এখন পর্যন্ত ৫৯ জনের মৃত্যু হয়েছে এ এলাকায়।   মশকনিধন কার্যক্রম তদারকি করার জন্য কমিটি করা হয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) পক্ষ থেকে। তদারকির জন্য বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে ১০টি অঞ্চলে ১০টি দল গঠন করা হয়েছে। অপরদিকে, দক্ষিণ সিটি (ডিএসসিসি) থেকে মশকনিধন কার্যক্রমের জন্য সিটি করপোরেশন কার্যালয়ে অনলাইনের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণের কথা বলা হয়েছে। যারা বিভিন্ন এলাকায় মশা মারার কাজ করছেন, তাদের শরীরে ডিভাইস যুক্ত করা আছে। এর মাধ্যমে কর্মীদের গতিবিধি লক্ষ করা যাচ্ছে। দুই সিটি করপোরেশন সূত্র জানিয়েছে, জুলাই-আগস্ট মাসের সহিংসতায় ঢাকা দক্ষিণ সিটির ২৫টি ওয়ার্ডের মশকনিধনের যন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত বা চুরি হয়েছে। উত্তর সিটিতে ১৫টি ওয়ার্ডের মশকনিধনের সরঞ্জাম কমবেশি নষ্ট হয়েছে। তারপরও নগর কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, তাদের কাজ চলছে। যোগাযোগ করা হলে ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর খায়রুল আলম জানান, ডেঙ্গু বিষয়ে আগে যেসব পরিকল্পনা করা ছিল, সেই অনুযায়ীই কাজ করছেন তারা। কাউন্সিলর না থাকার কারণে একটু সমস্যা হচ্ছে বলে স্বীকার করেছেন তিনি। অন্যদিকে ডিএসসিসির প্রশাসক ড. মহা. শের আলী বলছেন, দক্ষিণ সিটির আওতায় হাসপাতালে যেসব রোগী মারা যাচ্ছেন, এগুলো এই করপোরেশনের বলা হচ্ছে। তবে হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে, এসব রোগীদের অনেকে ঢাকারে বাইরে থেকে এসেছেন।  তবে, রাজধানীর রামপুরা, মগবাজার, মালিবাগ, কাকরাইল, তেজগাঁও, বাড্ডা, ফার্মগেট, মিরপুরসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত দুই মাসে মশকনিধন কার্যক্রম খুব একটা দেখেননি তারা। এদিকে গত ১০-১৫ দিনে মশার উৎপাত অনেক বেড়েছে এসব এলাকায়।  অবশ্য, বর্ষা মৌসুম শেষ হলেই ডেঙ্গু ভয়ংকর রূপ নিতে পারে-এমন আগাম সতর্কবার্তা আগেই দিয়ে রেখেছেন কীটতত্ত্ববিদরা। তারা বলছেন, অক্টোবরে ডেঙ্গু পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হবে। রাজধানী ছাড়াও বান্দরবান, কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, বরিশাল, বরগুনা, পিরোজপুর, পটুয়াখালী, ভোলা, খুলনা, যশোর, নড়াইল, মেহেরপুর, ঢাকার পাশের ময়মনসিংহ, মাদারীপুর ও মানিকগঞ্জে পরিস্থিতি খারাপ হবে। বিশেষ করে কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের কারণে সৃষ্ট ঘনবসতি ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ চোখ রাঙাচ্ছে কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের দিকে।   আরটিভি/এসএইচএম-টি
২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২১:৫৪

প্রতিবেশী দেশে ইলিশ ও সার চোরাচালানের ঝুঁকি রয়েছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
প্রতিবেশী দেশে ইলিশ ও সার চোরাচালানের ঝুঁকি রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। এই চোরাচালান ঠেকাতে কোস্টগার্ডকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁও প্রশাসনিক এলাকায় বাংলাদেশ কোস্টগার্ড সদরদপ্তরে বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও নাবিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, নিজস্ব চাহিদা বিবেচনায় সরকার এ বছর ভারতে ইলিশ রপ্তানি করছে না। তাছাড়া বিদ্যমান ডলার সংকটের মধ্যেও সরকার পর্যাপ্ত পরিমাণ সার আমদানির মাধ্যমে জোগান অব্যাহত রেখেছে। এ প্রেক্ষাপটে প্রতিবেশী দেশসমূহে ইলিশ ও সার চোরাচালানের ঝুঁকি রয়েছে। তাই কোস্টগার্ডের মূল দায়িত্বের অংশ হিসেবে সমুদ্র ও নৌপথে ইলিশ ও সারসহ বিভিন্ন পণ্যের চোরাচালান বন্ধ করতে হবে। এ সময় কোস্টগার্ডের প্রশংসা করে তিনি বলেন, বিভিন্ন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে নৈতিকতার স্খলন দেখা দিলেও কোস্টগার্ড এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। তারা নৈতিক মানদণ্ড বজায় রেখেছে ও অর্পিত দায়িত্বের ক্ষেত্রে ভালো পারফরম্যান্স দেখিয়েছে। সেজন্য তাদের অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, দুর্নীতি সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে প্রবেশ করেছে। এমন কোনো সেক্টর নেই যেখানে দুর্নীতি নেই। উপদেষ্টা কোস্টগার্ড সদস্যদের দুর্নীতিবিরোধী অবস্থানে তাদের অতীত ঐতিহ্য ও সম্মান সমুন্নত রেখে অস্ত্রসহ বিভিন্ন ক্রয় ও সংগ্রহের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা বজায় রাখার আহ্বান জানান। তিনি এ সময় কোস্টগার্ডের আবাসন, জনবল, অস্ত্র এবং টহল ও উদ্ধারকারী নৌযান ক্রয় ও সংগ্রহসহ বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা ও ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস প্রদান করেন। মতবিনিময় সভায় অন্যদের মধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন ও বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের মহাপরিচালক রিয়াল অ্যাডমিরাল মীর এরশাদ আলী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। আরটিভি/এসএইচএম  
১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৬:৫২

ফারাক্কা বাঁধ খুলে দেওয়ায় হু হু করে পানি বাড়ছে পদ্মায়
ভারতের বিহার ও ঝাড়খণ্ডে বন্যার জেরে ফারাক্কা বাঁধের ১০৯টি গেট খুলে দেওয়া হয়েছে। সোমবার (২৬ আগস্ট) গেটগুলো খুলে দেওয়া হয়। এতে একদিনে ১১ লাখ কিউসেক পানি বাংলাদেশে ঢুকবে। এদিকে, ফারাক্কা বাঁধের সব গেট খুলে দেওয়ার পর থেকে পদ্মা নদীতে হু হু করে পানি বাড়ছে। পদ্মার রাজশাহী পয়েন্টে পানির উচ্চতা ১৮ দশমিক ০৫ মিটার। সোমবার (২৬ আগস্ট) সন্ধ্যা ৬টায় সেখানে পানির উচ্চতা ছিল ১৬ দশমিক ৩০ মিটার। অর্থাৎ বিপৎসীমার ১ দশমিক ৭৫ মিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উত্তরাঞ্চলীয় পানিবিজ্ঞান পরিমাপ বিভাগ জানিয়েছে রোববার দুপুরের পর থেকেই পদ্মা নদীর পানি বাড়ছে। এখনও তা অব্যাহত রয়েছে। পাশের জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার পাংখা পয়েন্টে সোমবার ভোর ৬টা ও সকাল ৯টায় পানির উচ্চতা ছিল ২০ দশমিক ৪৮ মিটার। বিকেল ৩টায় তা বেড়ে দাঁড়ায় ২০ দশমিক ৫০ মিটারে। পাংখায় বিপৎসীমা ২২ দশমিক ০৫ মিটার। পাংখার ভাটিতে থাকা রাজশাহী নগরীর শহর রক্ষাবাঁধ সংলগ্ন বড়কুঠি পয়েন্টে পদ্মা নদীর পানির বিপৎসীমা নির্ধারণ করা রয়েছে ১৮ দশমিক শূন্য ৫ মিটার। সোমবার ভোর ৬টায় এখানে পানির উচ্চতা পাওয়া যায় ১৬ দশমিক ২৭ মিটার। সকাল ৯টায় পানির উচ্চতা আরও এক সেন্টিমিটার বেশি পাওয়া যায়। এরপর বিকেল ৩টায় ও সন্ধ্যা ৬টায় পদ্মার এই পয়েন্টে পানির উচ্চতা পাওয়া যায় ১৬ দশমিক ৩০ মিটার। অপরদিকে বড়কুঠির আরও ভাটিতে থাকা রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার সারদায় পদ্মার পানির বিপৎসীমা ১৬ দশমিক ৯২ মিটার। সোমবার ভোর ৬টায় এখানে পানির উচ্চতা ছিল ১৫ দশমিক ০৫ মিটার এবং সকাল ৯টা ও বিকেল ৩টায় পানির উচ্চতা পাওয়া যায় ১৫ দশমিক শূন্য ৬ মিটার। উজানে থাকা ফারাক্কার গেট খোলায় ভাটিতে থাকা পদ্মার পানি বাড়ার এ প্রবণতা অব্যাহত থাকবে বলেই আপাতত আশঙ্কা করা হচ্ছে। উত্তরাঞ্চলীয় পানিবিজ্ঞান পরিমাপ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রেজাউল করিম জানান, সাধারণত ১০ দিনের জন্য নদ-নদীর পানি বাড়ার পূর্বাভাস দেন তারা। সেই হিসাবে আগামী ১০ দিনের মধ্যে পদ্মার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করার আশঙ্কা নেই। তবে আগামী কয়েক দিন উজানের ঢল অব্যাহত থাকলে তার সর্বশেষ দেখে পদ্মার পানির প্রকৃত অবস্থা ও পরবর্তী পরিস্থিতি অনুমান করা সম্ভব হবে।
২৬ আগস্ট ২০২৪, ২১:২১

ফারাক্কা বাঁধ খোলায় বন্যাঝুঁকিতে দেশের যেসব জেলা
ভারতের বিহার ও ঝাড়খণ্ডে বন্যার জেরে ফারাক্কা বাঁধের ১০৯টি গেট খুলে দেওয়া হয়েছে। সোমবার (২৬ আগস্ট) গেটগুলো খুলে দেওয়া হয়। এতে একদিনে ১১ লাখ কিউসেক পানি বাংলাদেশে ঢুকবে। এদিকে ফারাক্কা বাঁধ খুলে দেওয়ায় দেশের রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, কুষ্টিয়া, রাজবাড়ী ও মানিকগঞ্জসহ আশপাশের জেলাগুলো প্লাবিত আশঙ্কা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন নদ-নদীবিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠান রিভারাইন পিপলের পরিচালক এম আনোয়ার হোসেন। সোমবার (২৬ আগস্ট) ফারাক্কা বাঁধ খুলে দেওয়ার বিষয়ে গণমাধ্যমে এ আশঙ্কার কথা জানান তিনি। এম আনোয়ার হোসেন, ফারাক্কার গেট খুলে দেওয়ার খবরটি আমাদের জন্য বিপদজনক। এর ফলে দেশের রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, কুষ্টিয়া, রাজবাড়ী ও মানিকগঞ্জসহ আশপাশের জেলাগুলো প্লাবিত হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এদিকে সোমবার ফারাক্কা বাঁধ কর্তৃপক্ষ জানায়, প্রতিবেশী দুই রাজ্যে বন্যার জেরে পানির চাপ পড়েছে। তবে স্বস্তির বিষয়, এখনো নেপাল থেকে পাহাড়ি ঢল নামেনি। ফারাক্কা বাঁধ এলাকায় পানি বিপৎসীমার ৭৭ দশমিক ৩৪ মিটার উপর দিয়ে বইতে থাকায় বাধ্য হয়ে গেট খুলতে হচ্ছে। সেক্ষেত্রে ফিডার ক্যানেলেও পানির পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। ফারাক্কা বাঁধের জেনারেল ম্যানেজার আর দেশ পাণ্ডে জানিয়েছেন, ফারাক্কা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ সবসময় এলার্ট রয়েছে। প্রতিমুহূর্তে নজর রাখা হচ্ছে। খুব কম সময়ের মধ্যে যেভাবে পানির চাপ তৈরি হয়েছে, তাতে ১০৯ গেটের সবকটি খুলে না দিল ব্যারাজের ওপর বড় চাপ তৈরি হচ্ছিল। এর ফলে বড় ক্ষতি হয়ে যেতে পারত। আপাতত ফিডার ক্যানেলে ৪০ হাজার কিউসেক ও ডাউন স্ট্রিমে ১১ লাখ কিউসেক পানি ছাড়া হয়েছে। এদিকে ভারি বর্ষণ ও ভারত থেকে নেমে আসা ঢলে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় ১১ জেলায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৩ জনে। এসব জেলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ৫৭ লাখেরও বেশি মানুষ। সোমবার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের বন্যা পরিস্থিতির সর্বশেষ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, বন্যা আক্রান্ত ১১টি জেলা ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিলেট, লক্ষ্মীপুর ও কক্সবাজারের মোট ৭৪টি উপজেলার প্রায় ১২ লাখ ৩৮ হাজার ৪৮টি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত লোকসংখ্যা ৫৭ লাখ ১ হাজার ২০৪ জন।
২৬ আগস্ট ২০২৪, ১৯:০৯

ভাসছে ১৩ জেলা
টানা ভারীবর্ষণ এবং ভারত থেকে আসা পানিতে দেশের ১৩টি জেলায় স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। এতে লাখ লাখ মানুষের বাড়িঘর-ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। পানিবন্দি ও ক্ষতির মুখে পড়েছেন ৩৬ লাখ মানুষ। এখন পর্যন্ত ৪ জেলায় ৮ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বইছে ৯ নদীর পানি। শুক্রবার (২৩ আগস্ট) পর্যন্ত সব মিলিয়ে এখন দেশের ১৩টি জেলা বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। এসব জেলা হলো ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, লক্ষ্মীপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কক্সবাজার, খাগড়াছড়ি, চট্টগ্রাম, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, রাঙ্গামাটি ও সিলেট। জানা গেছে, এবারের বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ফেনীর মানুষ। জেলা সদরসহ বিভিন্ন এলাকা পানির নিচে। কোথাও বুকপানি, কোথাও গলাপানি আর কোথাও কোথাও একতলা পর্যন্ত ডুবে গেছে। অন্যান্য উপজেলার চিত্রও প্রায় একই। নোয়াখালীর আটটি উপজেলায় সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। ডুবে গেছে ফেনী-নোয়াখালী সড়কের একাধিক এলাকা। কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম, নাঙ্গলকোট ও মনোহরগঞ্জে ১০ লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। লক্ষ্মীপুরেও বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। তলিয়ে গেছে কয়েক শ’ মাছের ঘের, আউশ ধান ও আমনের বীজতলা। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় বন্যা পরিস্থিতিরও অবনতি হয়েছে। বাঁধ ভেঙে ৩৬টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি, রাউজান ও হাটহাজারীর বেশির ভাগ গ্রামীণ সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। পানিবন্দি হয়ে আছেন এই তিন উপজেলার প্রায় তিন লাখ মানুষ। কক্সবাজারে দুই শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়ে অন্তত ৩ লাখ মানুষ পানিবন্দি। এসব এলাকার আঞ্চলিক ও গ্রামীণ সড়ক ডুবে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এ ছাড়া, পানিতে ভেসে গিয়ে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। ঈদগাঁও, চকরিয়া-পেকুয়া আর রামুতে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। পানিতে তলিয়ে গেছে ঘরবাড়ি ও দোকানপাট। নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটছেন এসব উপজেলার শতাধিক গ্রামের মানুষ। রামু উপজেলার গর্জনিয়ার ক্যাজরবিল, ডেঙ্গারচর, পশ্চিম বোমাংখিল, জুমপাড়া, পাতালবরপাড়া, রাজঘাট, জাউচপাড়া, মরিচ্যাচার, জুমছড়ি, পূর্বজুমছড়ি, মইন্যাকাটা, পূর্ববোমাংখিল, বোমাংখিল ও মাঝিরকাটার একাংশের বাসিন্দারা পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, ঝালকাঠির বিষখালী নদী বিপৎসীমার ১৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বরগুনার বেতাগী উপজেলা পয়েন্টে বিষখালীর পানি ১৪ সেন্টিমিটার, ভোলার দৌলতখান উপজেলার সুরমা-মেঘনায় ৭১ সেন্টিমিটার, তজুমদ্দিন উপজেলার সুরমা-মেঘনায় ৮৭ সেন্টিমিটার, পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে পায়রা নদীর পানি ৩ সেন্টিমিটার, বরগুনা সদর উপজেলার বিষখালী নদী ১১ সেন্টিমিটার, পাথরঘাটা উপজেলায় ১০ সেন্টিমিটার, উমেদপুর পয়েন্টে ২০ সেন্টিমিটার ও পিরোজপুর জেলার বলেশ্বর নদীর পানি বিপৎসীমার ১৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে বরিশাল জেলার কীর্তনখোলা নদীর পানি বিপৎসীমার সমান্তরাল, ভোলা খেয়াঘাট তেঁতুলিয়া নদী ৩ সেন্টিমিটার ও বরগুনার আমতলী উপজেলা পয়েন্টে পায়রা নদীর পানি ১২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে বন্যার্তদের সহায়তায় পাঁচ জেলায় সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। ত্রাণ ও খাদ্য বিতরণসহ উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করছেন সেনা সদস্যরা। বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, ‘দেশের বন্যাকবলিত ১০ জেলায় প্রায় ৩৬ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। টেলিযোগাযোগ সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় অনেক তথ্য জানা যাচ্ছে না। তবে বন্যায় দুজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।’ চার জেলায় ৮ মৃত্যু চলমান বন্যায় কুমিল্লায় এখন পর্যন্ত চারজনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতরা হলেন, নাঙ্গলকোট পৌরসভার দাউদপুর এলাকার কেরামত আলী (৪৫), কুমিল্লা শহরের ছোট এলাকার কিশোর রাফি (১৫), চৌদ্দগ্রাম উপজেলার সোনাকাটিয়া গ্রামের কানু মিয়ার ছেলে শাহাদাত হোসেন (৩৪) এবং লাকসামে পানিতে তলিয়ে মারা যাওয়া শিশুর নাম-পরিচয় জানা যায়নি। এ ছাড়া ফেনীর ফুলগাজী উপজেলায় বন্যার পানিতে ডুবে একজন মারা গেছেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যার পানিতে ডুবে সুবর্ণা আক্তার নামে এক অন্তঃসত্ত্বা নারীর মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া কক্সবাজারে পানিতে ভেসে গিয়ে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে।
২৩ আগস্ট ২০২৪, ১২:৩৭

এবারের বন্যার কারণ ও স্বাস্থ্যঝুঁকিতে করণীয়
টানা ভারী বর্ষণ এবং ভারত থেকে আসা পানিতে দেশের ১৩টি জেলায় স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। কহুয়া, মুহুরী ও সিলোনিয়া নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবল বেগে প্রবাহিত হয়ে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের স্থল দিয়ে প্রবেশ করছে। ফলে প্লাবিত হচ্ছে একের পর এক জনপদ। এবারের বন্যার কারণ প্রতি মাসের শুরুতে আবহাওয়া অধিদপ্তর ওই মাসের আবহাওয়া পরিস্থিতির দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাস দেয়। চলতি মাসের শুরুতে সেই পূর্বাভাসে বলা হয়েছিল, এ মাসে দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-মধ্যাঞ্চল এবং দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে অতিবৃষ্টির কারণেই এ বন্যা হবে বলে জানানো হয়েছিল। এরমধ্যে এখন উত্তর-মধ্যাঞ্চলের মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া এবং দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের কুমিল্লা, ফেনী, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। শুক্রবার (২৩ আগস্ট) প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সব মিলিয়ে এখন দেশের ১৩টি জেলা বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। এসব জেলা হলো ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, লক্ষ্মীপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কক্সবাজার, খাগড়াছড়ি, চট্টগ্রাম, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, রাঙ্গামাটি, কক্সবাজার ও সিলেট। বন্যার কারণ ও স্বাস্থ্যঝুঁকিতে করণীয় অপুষ্টি: বানভাসি জনগণ বিশেষত দরিদ্র পরিবারের শিশুরা দীর্ঘমেয়াদি অপুষ্টির মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়ে নিরাপদ পানীয়র অভাব এবং স্বাস্থ্যসম্মত পুষ্টিকর খাবারের স্বল্পতার জন্য। পানিবাহিত রোগ: খাবার পানির উৎসগুলোকে বন্যার দূষিত পানি ও সংক্রমিত করে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় স্যানিটারি টয়লেটগুলোও। প্রাণঘাতী টাইফয়েড, কলেরা, হেপাটাইটিস রোগ সৃষ্টিকারী জীবাণু দূষিত পানিতে ছড়িয়ে পড়ে। পানিবাহিত রোগব্যাধির প্রাদুর্ভাব বাড়ে অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে খাবার গ্রহণ, অপরিষ্কার হাত বা নোংরা প্লেট, জীবাণুবাহক পোকামাকড় ও মশা-মাছির কারণে । অস্বাস্থ্যকর পানি ও খাবার: বিভিন্ন ধরনের ময়লা, মানব ও প্রাণিজ বর্জ্য এবং খামার ও শিল্প এলাকার রাসায়নিকগুলো বন্যার পানিতে মিশে যায়। ফলে কৃষিজমিগুলোয় খাদ্যশস্য নষ্ট হয়ে যায়। বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় হিমায়িত সঞ্চিত খাদ্যও। মশা, প্রাণী ও সাপের প্রকোপ: আর্দ্র অঞ্চল এবং আবদ্ধ জলাশয়ের সৃষ্টি হয় দীর্ঘায়িত বৃষ্টিপাত এবং বন্যার কারণে, যা কাজ করে মশার প্রজনন ক্ষেত্র হিসাবে । এতে বেড়ে যায় ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু এবং চিকুনগুনিয়ার মতো মশাবাহিত রোগের সংখ্যা। বন্যার পানিতে নিজেদের আবাসস্থল থেকে সাপ খোলাখুলি বাইরে আসতে বাধ্য হয়। শুকনো জায়গার সন্ধানে সাপগুলো তখন মানুষের কাছাকাছি চলে আসে। ফলে বন্যার পরে বেড়ে যায় সাপে কামড়ানোর ঘটনা। এ ছাড়া ইঁদুর, বন্যপ্রাণী ইত্যাদির জন্য ঝুঁকি থাকে বিভিন্ন ধরনের রোগ সংক্রমণের। বন্যার পানিতে ডুবে মৃত্যু: পানিতে ডুবে মৃত্যুর ঘটনা ঘটে বন্যার সময়ে। অসাবধানতার কারণে এক্ষেত্রে শিশুরাই বেশি ভুক্তভোগী হয়। ফাঙ্গাসের সংক্রমণ: বন্যার আর্দ্র আবহাওয়ায় বংশবিস্তার ঘটে ফাঙ্গাসের। ফলে, অ্যালার্জি এবং হাঁপানিতে আক্রান্তদের বেড়ে যায় শ্বাসতন্ত্রের প্রদাহজনিত রোগের মাত্রা। এ ছাড়া বিভিন্ন ধরনের ত্বকের সংক্রমণ যেমন– দাউদ, খোস-পাঁচড়া, চুলকানিসহ নানা ধরনের চর্মরোগের বিস্তার ঘটতে পারে ময়লা পানিতে নেমে, দৈনন্দিনের প্রয়োজনীয় কাজ করতে গিয়ে। এ ছাড়াও সবাই সাধারণত যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগের পর ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িঘর এবং সম্পত্তির পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও মেরামতে বেশি মনোযোগী ও ব্যস্ত হয়ে পড়ে, যা ভুক্তভোগীদের মানসিক চাপ ও উদ্বেগ বাড়িয়ে দেয়।
২৩ আগস্ট ২০২৪, ১১:৫৩

খুলেছে ব্যাংক, ঝুঁকি বিবেচনায় খোলা হয়েছে শাখা
দেশের সব অফিস আদালতের পাশাপাশি ব্যাংকগুলোও খুলেছে আজ (৬ আগস্ট)। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, ঝুঁকি বিবেচনা করে ব্যাংকগুলো শাখা খোলা রাখতে পারবে; নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। ব্যাংকগুলো সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিয়েছে। এর আগে গতকাল সোমবার (৫ আগস্ট) রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানায়, মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) থেকে দেশের অন্য সব অফিস-আদালতের মতো ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানও খোলা থাকবে। সকাল ১০টা থেকে কর্মকর্তারা গ্রাহকদের ব্যাংকগুলোতে সেবা প্রদান করবেন। বিষয়টি নিশ্চিত করে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক বলেন, বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে লেনদেন চলবে স্বাভাবিক সময়সূচি অনুযায়ী। অর্থাৎ লেনদেন হবে সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত। তবে ব্যাংক দাপ্তরিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য খোলা থাকবে ৬টা পর্যন্ত। এর আগে, ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে রবিবার (৪ আগস্ট) সদ্যবিদায়ী সরকার নির্বাহী আদেশে সোমবার থেকে বুধবার (৫ থেকে ৭ আগস্ট) তিন দিন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়। কিন্তু ছাত্র-জনতার চূড়ান্ত আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়িয়ে দেশত্যাগ করেন শেখ হাসিনা। সোমবার দুপুর আড়াইটায় বঙ্গভবন থেকে একটি সামরিক হেলিকপ্টার শেখ হাসিনাকে নিয়ে ভারতের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। এ সময় তার সঙ্গে তার ছোট বোন শেখ রেহানা ছিলেন। সূত্রমতে, ভারতের পশ্চিমবঙ্গ হয়ে রাজধানী নয়াদিল্লিতে অবতরণ করেন শেখ হাসিনা। ইন্ডিয়া টুডে জানায়, নয়াদিল্লির গাজিয়াবাদে সেনাবাহিনীর হিন্ডন এয়ারবাসে স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা ৩৬ মিনিটে অবতরণ করেন তিনি।  বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, দেশত্যাগের আগে শেখ হাসিনা একটি ভাষণ রেকর্ড করে যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সে সুযোগ পাননি তিনি।  
০৬ আগস্ট ২০২৪, ১০:৪২
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়