যেসব পণ্যের দাম কমতে পারে

আরটিভি অনলাইন রিপোর্ট

বৃহস্পতিবার, ০১ জুন ২০১৭ , ০৪:৪৫ পিএম


যেসব পণ্যের দাম কমতে পারে

২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে বেশ কিছু পণ্যের দাম কমতে পারে। খাত ভিত্তিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের খাদ্য, ওষুধ, মেডিক্যাল দ্রব্যসামগ্রী, পণ্য পরিবহন, চিকিৎসা উপকরণ, শিক্ষা উপকরণ ও কৃষি উপকরণ ইত্যাদি।

বিজ্ঞাপন

প্রস্তাবিত এ বাজেটে বেশ কিছু পণ্যের ওপর শুল্ক, মূল্য সংযোজন কর (মূসক) ও সম্পূরক শুল্ক কমানো বা প্রত্যাহারের প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী। 

বৃহস্পতিবার বিকালে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে জাতীয় সংসদে এই বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী। তার আগে মন্ত্রিসভার অনুমোদনের পর ওই প্রস্তাবে সই করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

বিজ্ঞাপন

এবার বাজেটের আকার ধরা হয়েছে ৪লাখ ২৬৬ কোটি টাকা। যা গেলোবারের চেয়ে ১৭ শতাংশ বেশি।  অর্থমন্ত্রীর এসব প্রস্তাব অনুমোদন পেলে ওই সব পণ্যের দাম কমবে।

বাজেটে যেসব পণ্যের দাম কমতে পারে: গবাদি পশুর মাংস, হাঁস মুরগির মাংস (টিনজাত ব্যতীত)। জীবন্ত মাছ, আড়াই কেজি পর্যন্ত তাজা, টিনজাত অথবা হিমায়িত মাছ। আড়াই কেজি পর্যন্ত মোড়ক বা টিনজাত ব্যতীত কাঁটা ছাড়ানো মাছ ও মাছের মাংস, শুকনা, লবণাক্ত মাছ।  খোলসযুক্ত বা খোলস ছাড়ানো শামুক জাতীয় প্রাণী।

প্যাকেটকৃত তরল দুধ, পনির, মাঠা; পাখির ডিম, মধু, আলু, টমেটো, পেঁয়াজ, শ্যালট, রসুন, লিকস এবং অন্যান্য এ জাতীয় শাকসবজি; বাঁধাকপি, ফুলকপি, মাথাযুক্ত ব্রকলি, কোহিলাভি, কেইল; লেটুস, চিকোরি, গাজর, শালগম, সালাদ বিটমুল, স্যালসিফাই, সেলেরিয়াক, মুলা, শিম্বারকার শাকসবজি, সব ধরনের শাকসবজি, নারিকেল, কাজু বাদাম, সুপারিসহ ৫৪৯টি পণ্য।

বিজ্ঞাপন

সবরকম কলা, খেজুর, ডুমুর, আনারস, পেয়ারা, আম, গাব, লেবুজাত ফল, আঙ্গুর, তরমুজ, আপেল, নাশপাতিসহ যেকোনো ফল; গোল মরিচ, ভ্যানিলা, দারুচিনি, লবঙ্গ, জায়ফল, জৈত্রী, এলাচী, মৌরী, ফেনেল, ধনিয়া, জিরা, আদা, জাফনার, হলুদ, তেজপাতা, কারি, মসলা, গম, মেসলিন; রাই, বার্লি, জই, ভুট্টা, ধান, সবরকম চাউল, মুড়ি, সোরঘাম শস্য, বাজরা, ক্যানারাই বীজ।

ময়দা, আটা, চাল, গম, ভুট্টার তৈরি সুজি, সয়াবিন।  চীনা বাদাম, তিসি, স্বর্ষপ, সূর্যমুখী ফুলের বীজ, অন্যান্য তেল, লেকোস্ট সীম, সামুদ্রিক আগাছা এবং অন্যান্য সমুদ্র শৈবাল, আখ, চালের কুড়ার তেল, চিনি ও আঁখের গুড়, চোলাইন, সব ধরনের লবণ ইত্যাদি। এর ফলে সাধারণ মানুষের জীবনকে নতুন মূসক কোনোভাবেই প্রভাবিত করবে না।

দেশের অভ্যন্তরে সব অস্থায়ী হোটেল, রেস্তোরাঁয় খাদ্য দ্রব্য সরবরাহে মূসক অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে। সাধারণ মানুষ যেসব হোটেল, রেস্তোরাঁয় খাওয়া-দাওয়া করে তাতেও মূসক দিতে হবে না। ফলে এসব হোটেলে খেলে খরচ বাড়বে না।

জীবন রক্ষাকারী ওষুধ ও চিকিৎসা উপকরণের মধ্যে রয়েছে: প্রোভিটামিনস ও ভিটামিন, সবরকম জন্ম নিরোধক, ভ্যাকসিন ফর হিউম্যান মেডিসিন, লিভার সিরোসিস, হেপাটাইটিস সি নিরাময়কারী, হোমিওপ্যাথিক, আয়ুবের্দিক, ইউনানী ও ভেষজ ওষুধ সামগ্রী, কিডনি ডায়ালাইসিস, ক্যানসার নিরোধক ওষুধ, ম্যালেরিয়া নিরোধক ও কুষ্ঠরোধ নিরোধক ওষুধ, থেলাসেমিয়া, প্রাথমিক চিকিৎসার জিনিস। ২০-৩০ ধরনের মেডিক্যাল ইক্যুপমেন্ট, হাসপাতাল শয্যা।

দেশের মধ্যে (সরবরাহ) অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যানবাহনের মাধ্যমে পরিবহন সেবা, ভাড়াকৃত পরিবহন ছাড়া ট্যাক্সি, বাস, মিনিবাস, লঞ্চ, স্টিমার, ফেরির মাধ্যমে পরিবহন সেবা। এয়ারলাইন্স (চার্টার্ড বিমান ও হেলিকপ্টার ভাড়া প্রদানকারী সংস্থা ব্যতীত), খাদ্য শস্য পরিবহনকারী পরিবহন সেবা।

সমাজকল্যাণমূলক কার্যক্রমকে মূসকের আওতার বাইরে রাখা হয়েছে। যেমন জনস্বাস্থ্য ও চিকিৎসা বা স্বাস্থ্যসেবা, ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল ব্যতীত সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সব প্রশিক্ষণ (আগের আইনে শুধু সরকারি প্রশিক্ষণ মূসক অব্যাহতি ছিল), শিশু পালন কার্যক্রম, বয়স্ক, অক্ষম, দরিদ্র বা অক্ষম লোকদের আবাসিক সেবা (আগের আইনে অব্যাহতি ছিল না)। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যক্রমের জন্য পাঠ্যপুস্তক সরবরাহ কার্যক্রমে (আগের আইনে ৫% ভ্যাট ছিল)।

কৃষি কাজে ব্যবহৃত সব উপকরণ যেমন বীজ, সবরকম সেচ সেবা, বীজ সংরক্ষণ সেবা, মৎস্য, জলজপ্রাণী ও জলজ সম্পদ আহরণ ও সংরক্ষণ সংক্রান্ত সেবা, সবরকম সার, কীটনাশক, যন্ত্রপাতি ইত্যাদিতে মূসক অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে। ডেইরি, ফাউন্ড্রি, পাটশিল্পের কাজে ব্যবহৃত সব যন্ত্রপাতিতে মূসক অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।

খালি জমি বিক্রয়, হাইটেক পার্ক ও অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানে পণ্য উৎপাদন পর্যায়ে মূসক অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। সরকারের ফাস্ট ট্রেক তালিকাভুক্ত সব প্রকল্পে সরবরাহ, নির্মাণ, ইন্টারনেট ইত্যাদি সেবাকে মূসক অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।

পিপিপি এর আওতাভুক্ত সব প্রকল্প, বিদ্যুৎ উৎপাদনে কিছু প্রকল্পে মূসক অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। সবরকম ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড, রেডিও ও টেলিভিশনে সম্প্রচার, শিল্পকর্ম, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড, অপেশাদারী খেলাধুলা, ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, লাইব্রেরি, সবরকম জাদুঘর, আর্টগ্যালারি, চিড়িয়াখানা, বোটানিক্যাল গার্ডেনে প্রবেশ মূল্য, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজনকারী প্রতিষ্ঠান, শ্যুটিং ক্লাব, সবরকম সামাজিক সাংস্কৃতিক ও খেলাধুলা, কৃষি পণ্য, উদ্যান বা পশু-পাখির মেলায় প্রবেশ মূল্য, ব্যাংকিং ও বীমা খাতের কমিশন ব্যতীত সব বিষয় (ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আমানত, সঞ্চয়), জীবন বীমা ও অগ্নিবীমা, স্টক মার্কেট ও তার সব কাজ, কম্পিউটার ও কম্পিউটার যন্ত্রাংশে মূসক অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।

দেশে উৎপাদিত এলপিজি সিলিন্ডার, ফ্রিজ, টিভি, এসি ও মোটরসাইকেলে ২০১৯ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত অব্যাহতি দেয়া আছে, তা বলবৎ থাকবে। দেশীয় সফটয়্যার উৎপাদন ও সরবরাহে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।

 

এমসি/সি

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন

Loading...


© All Rights Reserved 2016-2025 | RTV Online | It is illegal to use contents, pictures, and videos of this website without authority's permission