পোশাকশ্রমিক থেকে শিল্পপতি মতিউরের ভাই
কোরবানি উপলক্ষে ১২ লাখ টাকায় ছাগল কিনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচিত হয়েছেন মুশফিকুর রহমান ইফাত নামের এক তরুণ। তিনি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাস্টমস, এক্সসাইজ ও ভ্যাট অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালের প্রেসিডেন্ট ড. মো. মতিউর রহমানের দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রীর ছেলে। তার বাবা মতিউর রহমানের পরিচয় প্রকাশ্যে আসতেই তোলপাড় শুরু, যা এখনো থামছে না। একের পর এক বেরিয়ে আসছে মতিউর রহমানের অবৈধ সম্পদ। এবার প্রকাশ্যে এসেছে মতিউরের পোশাক শ্রমিক ভাই কাইয়ুমের শিল্পপতি হয়ে ওঠার তথ্য।
জানা গেছে, মতিউরের মেঝ ভাই কাইয়ুম একসময় গার্মেন্টস শ্রমিক ছিলেন। মতিউরের আশীর্বাদে এখন সে শতকোটি টাকার মালিক। ঢাকার কামরাঙ্গীরচরে এসকে থ্রেড নামে সুতার কারখানা স্থাপন করেছেন কাইয়ুম, যা মতিউরের দ্বিতীয় স্ত্রী শাম্মীর নামের আদ্যাক্ষর ‘এস’ এবং কাইয়ুমের নামের আদ্যাক্ষর ‘কে’ মিলিয়ে তৈরি। ওই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে শুল্কমুক্ত সুবিধায় সুতা এনে খোলাবাজারে বিক্রির অভিযোগ বহু পুরোনো। ফলে গার্মেন্টস শ্রমিক সরাসরি শিল্পপতি বনে গেছেন তিনি।
এ ছাড়া টঙ্গীর রপ্তানিমুখী প্রতিষ্ঠান এসকে ট্রিম অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাইয়ুম। ভালুকা ও বরিশালে প্রতিষ্ঠিত গ্লোবাল সুজ লিমিটেডের অংশীদারত্ব আছে তার। কল্যাণপুরের বিআরটিসি বাসডিপো সংলগ্ন এলাকায় একটি সিএনজি স্টেশনের ২০ শতাংশ শেয়ারও কেনা আছে কাইয়ুমের নামে। এ ছাড়াও ঢাকায় বেশ কয়েকটি এপার্টমেন্টসহ কাইয়ুমের নামে স্থাবর-অস্থাবর আরও বিপুল সম্পদ রয়েছে।
কাইয়ুমের স্ত্রী কুলসুমের নামে বন্ড লাইসেন্স আছে। এ লাইসেন্সে ব্যবসা পরিচালনাকারী একজনের কোম্পানিতে ২৫ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।
এসএসসি পাস মতিউরের ছোট ভাই নূরুল হুদাও বড় ভাইয়ের কল্যাণে শত কোটি টাকার মালিক। ফার্মগেটের অর্কিট প্লাজায় অবস্থিত সাইমুম অ্যাসোসিয়েট লিমিটেড এবং অপর একটি গার্মেন্টে তার নামে শেয়ার রয়েছে।
এদিকে গত বুধবার ড. মতিউর রহমান এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘কমিশনার থাকাকালে কেউ এক টাকার দুর্নীতি প্রমাণ করতে পারলে আমাকে যে শাস্তি দেয়া হবে, তা আমি মাথা পেতে নেব। রাজস্ব আদায় পারফরম্যান্সে কখনো ফেল করিনি। অথচ দুর্ভাগ্য আমার, চাকরি জীবনের প্রতিটি প্রমোশনের আগে দুদক তদন্ত করেছে। এখন আবার সদস্য পদে পদোন্নতির আগে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে একজন ব্যবসায়ী পাওয়া যাবে না, যিনি বলতে পারবেন মতিউর রহমান তার সঙ্গে দুর্নীতি করেছেন। এটা একশ পার্সেন্ট আস্থার সঙ্গে বলতে পারি।’
মন্তব্য করুন