ঢাকাসোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫, ৩ চৈত্র ১৪৩১

বাংলাদেশের সংস্কার ও গণতান্ত্রিক অভিযাত্রায় সহায়তার আশ্বাস গুতেরেসের

আরটিভি নিউজ 

শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫ , ১০:১৬ পিএম


loading/img
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের চলমান সংস্কার ও গণতান্ত্রিক অভিযাত্রায় শান্তি, সংলাপ ও ঐকমত্যে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। এ সময় রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধান এবং তাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসনের ব্যাপারেও কথা বলেন তিনি। 

বিজ্ঞাপন

শনিবার (১৫ মার্চ) রাজধানীর একটি হোটেলে যৌথ এক সংবাদ সম্মেলন করেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন ও সফররত জাতিসংঘ মহাসচিব।

সেখানে আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার ও গণতান্ত্রিক অভিযাত্রার গুরুত্বপূর্ণ পর্বে রয়েছে। বাংলাদেশের এই সন্ধিক্ষণে শান্তি, সংলাপ ও ঐকমত্যে সহায়তার জন্য জাতিসংঘ তৈরি আছে।

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশের জনগণের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা জাতিসংঘকে আপনার অবিচল অংশীদার হিসেবে বিশ্বাস করতে পারেন। বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে কাজ করে সবার জন্য একটি টেকসই এবং ন্যায়সঙ্গত ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে সহায়তা করবে জাতিসংঘ।

জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশের জাতীয় অভিযাত্রার এই গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে এখানে আসতে পেরে আমি বিশেষভাবে আনন্দিত। এটি বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। একটি ন্যায়সংগত, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের দিকে বাংলাদেশের প্রচেষ্টাকে সমর্থন করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবশ্যই ভূমিকা রাখতে হবে।

পরে রোহিঙ্গাদের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে গুতেরেস বলেন, প্রতিবছর আমি সংহতি সফর করি এবং কঠিন পরিস্থিতিতে বসবাসকারী মুসলিম সম্প্রদায়ের সঙ্গে সময় কাটাই। তাদের সঙ্গে রোজা পালন করি এবং তাদের দুর্দশার বিষয়টি বিশ্বব্যাপী সামনে আনতে সহায়তা করি। সে ধারাবাহিকতায় এ বছর আমি রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং তাদের আতিথ্যদানকারী বাংলাদেশিদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করতে বাংলাদেশে আসার সিদ্ধান্ত নিই।

বিজ্ঞাপন

এ সময় রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত যাওয়ার বিষয়ে জাতিসংঘ মহাসচিবের কাছ থেকে কোনও নিশ্চয়তা পেয়েছেন কিনা, জানতে চাইলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, আমরা চাই রোহিঙ্গারা সম্মানের সঙ্গে এবং নিরাপত্তার সঙ্গে ফেরত যাক। এ বিষয়টিই জাতিসংঘ মহাসচিব আমাদেরকে বলেছেন। 

তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি যে, জাতিসংঘ এ বিষয়ে আমাদের সহায়তা দিয়ে যাবে। রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান সীমান্তের ওপারে রয়েছে এবং আমরা সম্মিলিতভাবে চেষ্টা করছি। আমরা চাপ তৈরি করতে চাইছি, যাতে করে রোহিঙ্গারা তাদের নিজ দেশে ফেরত যেতে পারে।

হিউম্যানিটারিয়ান করিডোরের বিষয়ে অনুরোধ করেছেন কিনা, জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, এই বিষয়টি নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে আলাপ চলছে। এটি একটি অপারেশনাল বিষয় এবং আমরা এটি নিয়ে আলোচনা করবো।

রাখাইনের অস্থিতিশীল পরিবেশ প্রত্যাবাসনে প্রভাব ফেলবে কি না, এমন প্রশ্নে জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, বর্তমানে রাখাইনে মিয়ানমার আর্মির সঙ্গে আরাকান আর্মির সংঘর্ষ চলছে। অবশ্যই এ অবস্থায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন অত্যন্ত কঠিন। একটি প্রয়োজনীয় সমাধান খুঁজে বের করা, সংঘর্ষ থামানো এবং সংলাপ পরিবেশ তৈরি করার জন্য মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও প্রতিবেশীর চাপ দেওয়া উচিত। 

আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা জানি যে, আগে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে আরাকানিদের সম্পর্ক তেমন ভালো ছিল না। এজন্য রোহিঙ্গাদের বিষয়ে আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগ করাটা অত্যন্ত জরুরি।

এ সময় মিয়ানমারের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার বিষয়ে অভিমত জানতে চাইলে আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, এটি একটি সম্ভাব্য ইন্সট্রুমেন্ট। কিন্তু এটি বলা মুশকিল। কারণ, নিরাপত্তা পরিষদের অনুমোদন লাগবে এক্ষেত্রে। 

জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, আমি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আরও বেশি দায়িত্ব নেওয়ার এবং শরণার্থী এবং তাদের আশ্রয়দাতা সম্প্রদায় উভয়ের জন্য প্রয়োজনীয় আর্থিক ও রাজনৈতিক সহায়তা প্রদানের জন্য অনুরোধ করে যাবো।

এরপর শেখ হাসিনাকে ফেরত আনার জন্য জাতিসংঘের সহায়তা চাওয়া হয়েছে কিনা— জানতে চাইলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আমরা এ বিষয় নিয়ে জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে কোনো আলোচনা করিনি।

আরটিভি/এসএইচএম

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |