সাম্রাজ্যবাদী শক্তি রুখে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সাম্রাজ্যবাদবিরোধী শিল্পী সমাজ।
শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) পায়রা আয়োজিত সাম্রাজ্যবাদবিরোধী চিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা এই আহ্বান জানান।
‘দেশ আমার, সিদ্ধান্ত আমার, নির্ভয়ে চলো বাংলাদেশ’ শ্লোগান নিয়ে সাম্রাজ্যবাদবিরোধী চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করে সাম্রাজ্যবাদবিরোধী শিল্পীসমাজ। তাদের সঙ্গে সহযোগিতায় রয়েছে ক্যাম্পেইন অ্যাডভোকেসি প্রোগ্রাম।
প্রোগ্রামের শুরুতে জাতীয় সংগীত গেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক সীতেশ চন্দ্র বাছার মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে পতাকা তুলে দেন। এরপর উপস্থিত মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ থেকে সাম্রাজ্যবাদবিরোধী শিল্পী সমাজের সদস্য সচিব অধ্যাপক নিসার হোসেনের হাতে পতাকা তুলে দেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে অধ্যাপক নিসার হোসেন বলেন, বাংলাদেশের শিল্পী সমাজ সবসময়ই অন্যায়-অনিয়মের বিরুদ্ধে কাজ করছে। সাম্প্রতিক সময়ে সাম্রাজ্যবাদী শক্তি আবারও মাথাচাড়া দিয়ে দেশের শাসন ব্যবস্থাকে অস্থিতিশীল করতে চাচ্ছে। সেই জন্য আমরা আবারও একত্রিত হয়েছি।
তিনি বলেন, সব জায়গা থেকে আমাদের মানুষকে সচেতন করতে হবে, সর্ব মহলের মানুষকে সচেতন করতে হবে। যাতে আমরা মুক্তিযুদ্ধের জায়গাটাকে জলাঞ্জলি না দিয়।
ঢাবি নীল দলের শিক্ষকদের পক্ষ থেকে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছার। তিনি বলেন, আজ যারা মানবতার কথা বলে, গণতন্ত্রের কথা বলে। তারা সারা বিশ্বের মানুষকে অত্যাচারের পক্ষে কাজ করেছে, সেই ইতিহাস তাদের রয়েছে। তাদের নিজেদের দেশের মানবাধিকারের কথা বলি, তাদের দেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার কথা যদি বলি, তাদের জনগণ যদি তাতে ভোট দেন, তার পার্সেন্টেজ কত হবে তা ভাবার বিষয় রয়েছে। তাদের নিজেদের দেশে মানবাধিকারের প্রশ্ন রয়েছে, সেখানে তারা বহির্বিশ্বে এসে মানবাধিকারের কথা বলে।
তিনি আরও বলেন, দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের প্রাক্কালে তাদের যেই পদক্ষেপ, তা সত্যিই আমাদের ভাবায়। মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে সবসময়ই সকল দেশের শিল্পী সমাজ এগিয়ে এসেছে। বাংলাদেশেও এমন উদ্যোগের জন্য দেশের শিল্পী সমাজকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
বীর মুক্তিযোদ্ধা জহির উদ্দিন জালাল বলেন, বাংলাদেশ যখন স্বাধীনতা সূর্য দেখছিল, ঠিক তখনই সাম্রাজ্যবাদী শক্তি আমেরিকা সপ্তম নৌ-বহর পাঠিয়েছিল স্বাধীনতাকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য। আজকে দেখতে পাচ্ছি মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ বিভিন্ন দেশে মুসলিমদের ওপর গণহত্যা চালিয়েছে। এখন তারা আবার বাংলাদেশের ওপর চোখ ফেলেছে। আজকে সাম্রাজ্যবাদবিরোধী শিল্পী সমাজ যেই চিত্র তুলে ধরেছে, এই রকম চিত্র মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের অনুপ্রাণিত করতো।
শিক্ষার্থীদের প্রতি মুক্তিযোদ্ধা আহসানুল হক মিনু বলেন, আমরা যুদ্ধ করেছিলাম ১৯৭১ সালে, তোমরা যুদ্ধ করবে এই ২৩ তারিখে। যারা তোমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে বাধা প্রদান করে তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে তোমরা, দেশের সাধারণ মানুষের পক্ষে দাঁড়াবে তোমরা।
এ ছাড়াও প্রোগ্রাম উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে সংক্ষিপ্ত সাংস্কৃতিক পরিবেশনা করা হয়। এই প্রদর্শনী চলবে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত।