চাঁদরাতে পা ফেলার জায়গা নেই মৌচাক-নিউমার্কেটে
দেখতে দেখতে চলে গেল পবিত্র রমজান। রাত পোহালেই খুশির ঈদ। চাঁদরাতের বেচাকেনায় ব্যস্ত ক্রেতা-বিক্রেতারা। শেষ সময়ে ক্রেতারা ভিড় করছেন রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেটে। চাঁদরাতে পা ফেলার জায়গা নেই রাজধানীর মৌচাক ও নিউমার্কেট এলাকায়।
বুধবার (১০ এপ্রিল) ঘড়ির কাটায় তখন বাজে রাত পৌনে এগারটা। রাজধানীর মালিবাগ ও মৌচাক এলাকায় ক্রেতাদের প্রচুর ভিড় দেখা যায়। সেই সঙ্গে রাস্তায় দেখা যায় সারি সারি গাড়ি। ছিল যানবাহনের প্রচুর চাপ। যদিও রাজধানীর অন্য এলাকায় রাস্তায় গণপরিবহন নেই বললেই চলে।
এছাড়া নিউমার্কেটের সামনের রাস্তায় রাত সাড়ে এগারটায় ছিল সারি সারি গাড়ি। ফুটপাতে দেখা গেছে হাজার হাজার মানুষের ভিড়। চাঁদরাতের কেনাকাটায় ব্যস্ত ক্রেতারা। বিক্রেতাদেরও শ্বাস ছাড়ার সময় নেই।
রাজধানীর মালিবাগের বাসিন্দা আবেদা রহমান। ফরচুন মার্কেটে এসেছেন মেয়ের হাতে মেহেদী লাগাতে।
তিনি আরটিভি নিউজকে বলেন, ফরচুন মার্কেটে প্রতিবছর মেয়েরা মেহদী লাগায়। এখানে মনের মত করে হাতে মেহেদী লাগানো যায়। যদিও খরচ একটু বেশি। প্রতিহাতে ২০০ টাকা করে মোট ৮০০ টাকা খরচ হলো। এটা ব্যয়বহুল। তারপরেও মনের মত ডিজাইন করতে পেরেছি। ভাল লাগছে।
ঈদ এলেই চাঁদরাতে হাতে মেহেদী লাগিয়ে রোজগার করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফাহমিদা।
তিনি আরটিভি নিউজকে বলেন, প্রথমপর্যায়ে মনে হবে হাতে মেহেদী লাগতে এত খরচ। আসলে অনেক সময় নিয়ে ডিজাইন করে কাজটি করতে হয়। পারিশ্রমিক তো নিতে হবে। এটা খুব বেশি না।
তাইমু ইসলাম। বাড়ি মাদারীপুরের কালকিনি। রাজধানীর সেগুনবাগিচায় মামার বাসায় ঈদ করতে এসেছেন। মৌচাক মার্কেটের উল্টোপাশে তার সঙ্গে একটি নামী ব্যান্ডের জুতার দোকানে কথা হয়।
আরটিভি নিউজকে তিনি বলেন, চাঁদরাতে কেনা কাটার মজা আছে। অনেক সময় একটু কমে ভাল জিনিস পাওয়া যায়। কেননা শেষ সময়ে বিক্রেতারা কম লাভেই বিক্রি করে। পাঞ্জাবি, জুতা ও টিশার্ট নিলাম। দাম অন্য সময়ের তুলনায় অনেকটা কম।
মৌচাক মার্কেটের কাপড়ের ব্যবসায়ী জুনায়েত।
তিনি আরটিভি নিউজকে বলেন, চাঁদরাতে শেষ সময়ে বিক্রি ভাল। এখন কম লাভে, কখোনও বা কেনা দামে বিক্রি করছি। ক্যাশ দরকার। চাঁদরাতে ক্রেতাদের চাপ আছে।
কামরাঙ্গীর চর থেকে নিউমার্কেটে কেনাকাটা করতে এসেছেন নাজমা আক্তার। তিনি আরটিভি নিউজকে বলেন, চাঁদরাতে নিউমার্কেটে কম দামে ভাল জিনিস পাওয়া যায়। প্রতিবছর আমরা চাঁদরাতেই কেনাকাটা করি। এবছরও পরিবারের সবার জন্য কম বেশি কেনাকাটা করেছি।
গাউছিয়ার পাশের সড়কের ফুটপাত থেকে কেনাকাটা করছেন লালবাগের বাসিন্দা রাসেল আহমেদ। তিনি আরটিভি নিউজকে বলেন, মার্কেটের ভিতরে দাম বেশি। আমরা স্বল্প আয়ের মানুষ। তাই ফুটপাত থেকেই পরিবারের সবার জন্য কেনাকাটা করেছি। মান একবারে খারাপ না। দাম কম। তাই আমাদের জন্য সুবিধা। মাকের্ট থেকেতো আমাদের মতো মানুষের কেনাকাটা সম্ভব নয়।
তিনি আরও বলেন, ঈদের আগে সবাই কেনাকাটা করে গ্রামে চলে যায়। আর চাঁদরাতে কম দামে ভাল জিনিস পাওয়া যায়। ঈদের আগের রাতেই কিনতে ভাল লাগছে। এবার গ্রামে যাব না। ঢাকায় ঈদ করবো। তাই শেষ সময়ে মার্কেটে এসেছি।
ফুটপাতের বিক্রয়কর্মী শফিক মিয়া বলেন, ৩০০ থেকে এক হাজার টাকার মধ্যে মেয়েদের সব পোশাক পাওয়া যাচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে শাড়ি, থ্রি-পিচ, টু পিস গাউন, টপস, বোরকা মতোর গাউন, লং ফ্রক। ছেলেদের টি-শার্ট, শার্ট, প্যান্ট ও পাঞ্জাবি ২০০ টাকা থেকে শুরু ৮০০ টাকা পর্যন্ত আছে।
চাঁদরাতে এসব মার্কেটে আসা ক্রেতারা বলছেন ফুটপাতে সাশ্রয়ীমূল্যে ভালো মানের পণ্য মেলে। একই জায়গায় সব পণ্য পাওয়া যায়। আর বিক্রেতাদেরও একই কথা। মার্কেটের তুলনায় ফুটপাতে কম দামে সব পণ্য পাওয়া যায় বলে ফুটপাতে ভিড় করেন স্বলআয়ের মানুষ।
মন্তব্য করুন